বুধবার। অফিসে হেভী কাজের চাপ। এমন সময় একটা ফোন আসলো। ফোনটা ধরে হ্যালো বলতেই পকেটে মোবাইল ক্রিং ক্রিং। লাইনে কে কিছু না শুনেই হোল্ডে দিলাম। কারন মোবাইলে আমাদের ডিরেক্টর সাহেব। ওপাশে কে না জেনেই অপেক্ষা করতে বলে হোল্ড বাটনটা টিপে দিলাম।
কিছু দিন আগে অতি উতসাহে কাজে দেখাতে গিয়ে একটা ব্যাপারে ভজগট পাকিয়ে ফেলেছি। সেইটা নিয়েই কিছুক্ষন কথা শুনতে হলো। বেচারা আমাকে ভয় দেখানোর জন্যে খামোখাই হড়ড় স্টাইলে বয়ান দিচ্ছেলেন। আমি কিছু গায়ে না মেখে জ্বী জ্বী বলে কথা শেষ করলাম। লাইন কেটে মনে মনে বললাম, ব্যাটা লুইস কুনহানকার। হোল্ড করা লাইনটা টানলাম। ওপাশে মিষ্টি গলার এক পুরুষের কন্ঠ।
আমি-হ্যালো, কে বলছেন।
জ্বী আমি লুইস বলছি।
আমি ঠিকমতো বুঝতে না পেরে আবার জিজ্ঞেস করলাম, হ্যালো কে বলছেন।
জ্বী, আমি লুইস। আমি লুইস বলছি। ভুল শুনছি ভেবে আবার জিজ্ঞেস করলাম। ওপাশে দৃর কন্ঠে নিজের পরিচয় জানালো যে সে লুইস। এবারে সে আমার পরিচয় জিজ্ঞেস করলো। আমি থতমত খেয়ে নিজের নাম বললাম। ওপারের কন্ঠে এবারে উচ্ছাস, ‘বস আমাকে চিনতে পারেন নি? আমি লুইস? কয়েকমাস আগে মগবাজারে কথা হইলো। এর আগে গতবছর আসছিলেন আমাদের গার্লস হোষ্টেলে। আমাদের মেয়েদের জন্যে টাকা পয়সা আর গিফট নিয়া আসছিলেন। ওরা আপনাদের কথা এখনো বলে। আসেন না কেন আর এদিকে? আপনারা আসলে আমরা উতসাহ পাই’।
এবার আমার খাবি খাওয়ার অবস্থা। কস কি রে মমিন। মগবাজারে গার্লস হোষ্টেলে আমি গেছি টাকা পয়সা নিয়া? ব্যাটাকে ধমক দিতে গিয়ে থেমে গেলাম।
আমাদের অফিসে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড নিয়ম অনুযায়ী কিছু চ্যারিটির কাজ করে ব্যাবসার পাশে। দুঃস্থ শিশু বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের জন্যে কাজ করে যেসব চ্যারিটি সংস্থা তাদের জন্যে কিছু আর্থিক সাহায্য করতে হয়। এরকম একটা সংস্থা মেয়ে শিশুদের জন্যে একটা ভোকেশনাল থাকার ব্যাবস্থা করেছে। ওরা নিয়মিত কালচার প্রোগ্রাম আর ফাংশান করে ডোনারদের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্যে। সেখানে একবার জিএম সাহেবের সাথে যেতে হইছিলো। ওদেরকে সেবারে মোটা অঙ্কের অর্থ সাহায্য দিতে। বাচ্চাদের অনেক ছবি তুলছিলাম। আমাদের জিএম বিদেশী মানুষ। বাচ্চাদের সাথে হেভি হইচই করছিলেন। ওরাও খুব মজা পাইছিলো। ইউরোপিয়ান উৎস হওয়ায় এদের কর্মি অধিকাংশই এদেশীয় খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী। এদেরই একজন লুইস। পুরো নাম মনে হয় লুইস ডি-কস্টা বা এধরনের কিছু।
লুইসের সাথে কথা বার্তা হলো। ওদের কি একটা ফাংশান আছে, দাওয়াত দিলো। নিচের ছবিটার লেখার সাথে কোন সামঞ্জস্য নেই। ইনি একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক। ‘এলিস ইন ওয়ান্ডার ল্যান্ড’এর শ্রষ্ঠা লুইস ক্যারল। ব্যাক্তিগত জীবনে অনেক উচ্চ চরিত্রের অধিকারী ছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:২২