বর্ষায় বিরিশিরি অসাধারণ কিংবা ভয়ানক সুন্দর। বছর কয়েক আগে আমরা কয়েকজন কম টাকায় ময়মনসিংহের বিরিশিরি যাব বলে ঠিক করলাম। বাজেট ১০০ টাকা। যারা স্থানীয় তারা জানাল এই টাকায় যাওয়া যাবে না। বিরিশিরি যেতে ১০০টাকার পানিই কিনতে হয়। সাথে চা, বিড়ি খেতে হলে আরো ১০০। যাই হোক আমরা শুরু করেছিলাম ১০০টাকা দিয়ে।
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ রাতের সেভেন আপ লোকাল ট্রেনের ভাড়া ২৫ টাকা ( এখন ৩৫টাকাও হতে পারে), তারপর ময়মনসিংহ থেকে সকালে জারিয়া লোকাল ট্রেনের ভাড়া ৬টাকা, জারিয়া থেকে দূর্গাপুরে বাস বা নৌকায় যেতে পারেন। আমরা গিয়েছিলাম বাসে Raju Hamid মামা দামাদামী করে বাস ভাড়া ২০ টাকায় নিয়ে এসেছিলেন।
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ ২৫ টাকা
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া ০৬ টাকা
জারিয়া থেকে দূগাপুর ২০ টাকা
মোট ৫৬ টাকা
আমরা রাতে ট্রেনের ডাকের কমরায় গিয়েছিলাম। ডাক বিভাগের লোকদের আন্তরিক সেবায় আমরা কৃতজ্ঞ ছিলাম। তারা ডাকের বিভিন্ন বস্তা দিয়ে আমাদের জন্য আরামদায়ক বিছানা তৈরি করে দিয়েছিল।
এই শহরে আমি কয়েকশ ভ্রমণকারীদের চিনি যারা লাখ টাকা ব্যয় করেন। এই ভ্রমণ বা ব্যয় নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু দুনিয়া সস্তায় ভ্রমণ করা যায়। লাখ টাকা ব্যয় করে ভ্রমণ আপনার অধিকার, সামর্থ্য। কিন্তু নিয়ম মেনে সস্তায় ভ্রমণ অপরাধ নয়।
যাদের টাকা কম কিংবা সস্তায় ভ্রমণই নেশা তারা যেতে পারে বিরিশিরি । আশা করি এখনো ভাড়া ১০০টাকার বেশি হবে না।
বিরিশিরি অসাধারণ সুন্দর, ভয়ানক সুন্দর। পাহার থেকে নেমে আসা মেঘে এখানে বিন্দু বিন্দু বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। তারপর সেই বিন্দু বিন্দু বৃষ্টির ঐক্যবদ্ধ জলের মিছিল সোমেশ্বরী নদীর বুকে দাপুটে ছুটে চলা দেখে আপনার মনেই হবে না। আপনি লোকাল ট্রেনে চড়ে এসেছেন। মনে হবে আর একটু দেখতে চাই বাংলাদেশ।
অর্থের অভাবে আপনার ভ্রমণ বাধাগ্রস্ত না হোক। শুভ কামনা বিরিশিরি ভ্রমণ আপনারা আনন্দময় হোক।
ছবিটি : ইন্টার নেট থেকে নেওয়া হয়েছে। আমার তথ্যগুলো ২০১০/২০১১ সালের এখন যাবার আগে নতুন তথ্য সংগ্রহ করে নিবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:০৬