এত এত মানুষের দীর্ঘ লাইন। লাইনটা নতুন বাজার হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পার হয়ে গেছে। আর একটা লাইন শুনলাম মালিবাগ পর্যন্ত। মানুষগুলো এই মন মরা মুখ দেখে সকালটা শুরু। একটু এগিয়ে গিয়ে যা শুনলাম মনটাই ভাল হয়ে গেল।
এখন এই ভেবে সুখ পাচ্ছি মানুষের জন্য মানুষের ভালবাসার এ এক অন্যরকম দৃষ্টান্ত হল দুনিয়ায়। বন্যা, জলোচ্ছাস,ঘূণিঝড়, তুষারপাতসহ নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগ এবং রাষ্ট্রের যুদ্ধনীতির কারণে আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থা ১২টা বেজে গেছে। স্বয়ং রাষ্ট্রপতি দুনিয়াব্যাপী সাহায্যের জন্য হাত পেতেছেন। নতুন বাজারের একটা খোলা মাঠে জুনিয়র ড্যান মজিনা লুঙ্গি পরে অনুদান নিচ্ছেন।
সারা জীবন যে দেশটা এর পিছনে ওর পিছনে আঙ্গুল দিল। আজ তার বিপদে দুনিয়াব্যাপী মানুষ এগিয়ে আসল। গেল সপ্তাহে তো তাদের রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম থেকে বলা হল। অতীতের সব কিছু ভুলে শুধু মানুষের কথা ভেবে বিশ্ববাসী যেন তাদের পাশে দাড়ায়।
নতুনবাজার পার হয়ে যমুনা ফিউচার পার্কে এসে দেখি কিছু যুবক টাকা তুলছে। আমেরিকায় সাহায্য পাঠানোর জন্য। যুবকদের প্রত্যাশা এইবার তারা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বাজেটের সবচেয়ে বড় অনুদানটি সংগ্রহ করে দিতে পারবে।
শহরের বিভিন্ন মসজিদে টাকা চাওয়া হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রের নারী শিশুদের সহযোগিতার জন্য।
পত্রিকাগুলোতে হাজারো সহযোগিতার সংবাদ। ইতিমধ্যে কৃষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়, বন্যার আগাম তথ্য ও তুষার পাতসহ নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগের জন্য বাংলাদেশের সচেতন মানুষরা তাদের পরিবেশ বিধ্বংসী আচরণকে দায়ী করেছেন। বাংলাদেশের পোষাক শ্রমিকরা এক কোটি তৈরি পোষাক বিনামূল্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরণের ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ মাদ্রাসা বোর্ড যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক শিক্ষার প্রসারের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার আশা ব্যক্ত করেছে।
প্রেসক্লাবে আজ সভা আছে সব রাগ, ক্ষোভ ভুলে সরকার যেন যুক্তরাষ্ট্রে এই দুর্দিন পাশে দাড়ায়।
সরাষ্ট্র, অভিবাসন মন্ত্রণালয়, পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশেষ বৈঠক চলছে। কি করে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে অধিক হারে বাংলাদেশের কাজ করার সহজ ভিসা দেওয়া যায়।
অফিস শেষে রাস্তায় বের হয়ে দেখি লাল পতাকায় ছেয়ে গেছে পুরো হাইকোর্ট থেকে পল্টন, মতিঝিল।যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ কমিটি কাল খাদ্য ঘটতি মোকাবেলা এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ থেকে একটি বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের পাঠানোর দাবী জানিয়েছে। তারই বিরুদ্ধে যুকরা শ্লোগান দিচ্ছে
“বাংলাদেশ থেকে অস্ত্র যাবে না, সেনা যাবে না
খাদ্য যাবে, ডাক্তার যাবে”
হাজার হাজার প্লেকার্ড ” যুক্তরাষ্ট্রের নীতি কোম্পানী আর অস্ত্রের স্বার্থে, আমরা মানুষ আসুন মানুষের জন্য, মানুষের পাশে দাড়াই”
আমি পকেটে হাত দিয়ে দেখি একটা ১০০টাকা নোটই আছে। মনে মনে একটা হিসেব করে নিলাম
বর্তমানে বাংলাদেশি ১টাকা সমানা * ১২০০ডলার। ১০০ টাকা সমান ১২০০০০ ডলার। যাক যুক্তরাষ্ট্রের একটা পরিবারের সারা মাসের খরছ হয়ে যাবে।
২০৪১ সালের সকালটা এমনই হবে।
#ত্রান, #যুক্তরাষ্ট্র
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯