আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকলে আমরা মিছিলে যেতাম। স্কুলে বেতন বাড়লে মিছিল হত। এলাকার বড় ভাই গ্রেফতার হলে মিছিল হত শহরে। আশে পাশে গ্রামগুলোতে চুরি ডাকাতি বাড়লে মিছিল আসত আমাদের শহরে। থানা পুলিশ ঘেরাও হত।
সাদ্দাম-বুশ, ফারাক্কা বাধ, কাশ্মির, স্বৈরাচার, ফিলিস্তান, বাকের ভাই, বাররি মসজিদ, ভোটের দাবী, হাছিনার মুক্তি, ভোটের অধিকার দাবীতে, আবহানী-মোহামডান, আজেন্টিনা-ব্রাজিল, ফুটবল-ক্রিকেট, মহরম কি নিয়ে মিছিল হয় নি শহরে?
শুনেছি ভিয়েতনামে মার্কিনীদের আগ্রাসনে শহরে প্রতিবাদ হত। প্রতিবাদ হত হাজার মাইল দূরের সংগঠিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে।
মিছিলগুলো আমাদের আনন্দ প্রকাশ, অধিকার দাবী আদায়ের হাতিয়ার ছিল। তাই আমরা সুখে মিছিল, শোকেও মিছিল করতাম।
সেই মিছিলের শহরের প্রতিবাদ-প্রতিরোধ এখন মুঠোফোনে বন্দি হয়ে গেল। সন্ধ্যায় আর মশাল মিছিল হয় না। মানি না, মানব না চিৎকার শুনি না।
সব মেনে নিয়েছি। গুম, খুন, হত্যা সব মেনে নিয়েছি। সব মেনে নেওয়া, আপোষের শহরে তারপরও মানুষ সুখে নেই।
তারপরও শহরে কিছু দেয়ালে যখন দেখি। লেখা “পাহাড়ে বা সমতলে লড়াই হবে সমানতালে” আমি আশাবাদী হই। আমি পণ করি অফিস থেকে সন্ধ্যায় ঘরে ফেরার পথে টিফিন বক্সের অবশিষ্ট খাবারটুকু খেয়ে আমি আবারও মশাল মিছিলে যাব।
কল্পনা চাকমা গুমের প্রতিবাদের, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে, হাজার কোটি টাকা সুইস ব্যাংকে পাচারকারীদের রুখতে, ব্যাংক লুটে নেওয়া গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ প্রতিরোধ হবে রাষ্ট্রীয় সমর্থনে গুম, হত্যার বিরুদ্ধে।
হে মিছিল, ওহ মিছিল। মিছিলেই মুক্তি। মিছিলে যাব। মিছিল, মিছিল চাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:০০