somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৃদু হলেও প্রতিবাদ করুন।

০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাকুর্তা।
ধানমন্ডি,মোহাম্মদপুর থেকে ৩০/৪০ মিনিটের দূরুত্ব। ভাকুর্তা গ্রামে আবুল কারিগর নামে এক লোক থাকেন। আবুল ভাই যদিও নিজেকে কারিগর বলতে চান না।

নানা ব্যবসায় ধরা খেয়ে আবুল ভাই মিষ্টি ব্যবসা শুরু করেন। এই অজপাড়া গ্রামে মিষ্টি ব্যবসা কেন, কে কিনবে মিষ্টি? হাসাহাসি, এই ব্যবসায়ও ধরা খাবি আবুল। এই ভবিষ্যৎ বাণী শুনেই তিনি ব্যবসায় নামলেন।

ভাকুর্তা গ্রামটা বলা যায় গরুর দুধের খনি। শুধু ভাকুর্তায়ই নয় আশেপাশে সব গ্রামের বাড়িতে গরু আছে। আশে পাশে যতদূর দেখা যায় সবুজ আর সবুজ ঘাসের মাঠ।

এত এত সুযোগ থাকার পরও আবুল ভাইয়ে মূল সমস্যা মিষ্টির কারিগর। যে চাকুরীতে আসে সেই দিন কয়েক পর চলে যায়।

ওস্তাদ, কারিগর ছাড়া একদিন সকাল থেকে আবুল ভাই নিজেই মিষ্টি তৈরি করা শুরু করলেন। আবুলের মিষ্টির সুনাম দু চার গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল। আমিও ৪/৫বছর আগে এক রাতে আবুল ভাইয়ে বাড়িতে গিয়ে হাজির।

আবুল ভাই নতুন কোন ধরনের মিষ্টি বানালে আমাকে ডেকে খাওয়ান। আবুল ভাইয়ের অসাধরণ সৃষ্টি চিনি ছাড়া বা কম চিনিতে রসমলাই। এই রসমলাইয়ের তুলনা হয় না। আর বেশি চিনি দিয়ে বানান কাঠগোল্লা।

রাত বিরাতে নাকি মিষ্টি আর মাছ নিয়ে আসা যাওয়া ঠিক না। আমি মিষ্টি খেয়ে রাত বিরাতে নির্জন পথ মাড়িয়ে, বুড়িগঙ্গা পাড়ি দিয়ে রসমলাই নিয়ে বাসায় আসি। জিন আমাকে কখনো আসা যাওয়ার পথে মিষ্টির জন্য দাবীদাবা করে না। শুধু মাঝে পথে র‌্যাব-পুলিশের টহল গাড়ির সাথে দেখা হয়। তারাও মিষ্টি খেতে চায় না কোনদিন।

রাস্তা ঘাটে মিষ্টির জন্য কোন প্রকার চাঁদা না দিয়ে। আমি ভাল পার করছি ।

ভাকুর্তায় যাওয়ার পথে ওয়াসপুরে নামে একগ্রামে আমি গরু দুধের সর খাই। চায়ের দোকানগুলো বন্ধ হবার আগ পর্যন্ত মাঝে মাঝে আমি ইরান, রাশিয়া, কোরিয়া, ফিলিস্তিন, আমেরিকা, ভারত, পাকিস্তানের রাজনীতির আলাপ শুনি।

এই দোকানগুলোতে কেউ দেশের রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ নিয়ে আলোচনা করে না।

ওয়াসপুর গ্রামের কিছু অংশ বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এই বর্ষায় হয়ত আরো যাবে। কিন্তু তেমন একটা জোরালো প্রতিবাদ নেই। এই গ্রামে কয়েকশ একর কৃষকের জমি, নদী, খাল দখল করে নিয়েছে বর্তমান এক এমপি।

পাশের গ্রামগুলোতে এক মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে দখল শুরু করেছেন বছর তিন হল। ঢাকার পশ্চিম এই অংশের দখলের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ অনেকটাই নিষিদ্ধ।

সাংবাদিকরা চেষ্টা করলেও পত্রিকার মালিক পক্ষ এই দখলের সংবাদ প্রকাশ করতে পারেন না। ফোন যায়, উপর থেকে ফোন।

তাই দিন কয়েক রোদে পুড়ে সংবাদকর্মী যে সংবাদ জমা দেয় তা চাপ পড়ে থাকে।

এত বড় শহর উপশহর কি করে গড়ে ওঠে অনুমোদন ছাড়াই। রাজউক, পরিবেশ অধিদপ্তর যে অসহায়। তাদের অভিযোগ দেওয়ার কোন কারণ নেই। শুধু শুধু থানা পুলিশকে অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। এটা তাদের দায়িত্ব নয়।

গত তিন বছর আসা যাওয়ার পথে আমি কম চিনির রসমলাই খেয়ে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে প্রার্থনা করি। একটা প্রলয় হোক মহাপ্রলয়।

ঢাকা রক্ষায় এই প্রলয় ছাড়া বোধ হয় কোন বিকল্প নেই। যেখানে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, প্রশাসন, আইন, আদালত সব থমকে গেছে কয়েকজনের কাছে।

তখন আমার সাথে আপনি প্রার্থনা করুন।

হে বুড়িগঙ্গা জেগে ওঠো, জেগে ওঠো বালু,বংশী, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ভেঙ্গে দাও সবকিছু। লাখো মানুষ, কোটি মানুষের মৃত্যু হোক। তারপরও আগামী প্রজন্ম একটা সচ্ছ পানির নদী ফিরে পাক, গ্রামের কৃষক, সাধারণ মানুষগুলো মুক্তি পাক।

সুযোগ পেলেই ভাকুর্তার আবুল ভাইয়ের কম চিনির রসমাইল খান। আর ঘরে ঘরে শান্তিবাদী প্রার্থনা করেন। কোন মিটিং, মিছিল নয়।

ধ্বংসের প্রার্থনা। আচ্ছা আমি যদি মিছিলে না গিয়ে ঘরে বসে ধ্বংসের প্রার্থনা করি তাহলে কি কেউ মামলা করার ক্ষমতা রাখেন?

দখলদার যতই শক্তিশালী হোক প্রার্থনা করুন।
গণমাধ্যমে ফোনে বন্ধ থাকে সংবাদ প্রকাশ। থাকুক।
মৃদু হলেও প্রতিবাদ করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×