somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যদি সময় থাকে তবে লাফিয়ে পড়ুন আড়িয়াল বিলের সচ্ছ জলে।

১৬ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবি Farukh Ahmed

যারা ঢাকায় ঘুরতে চান। ঘড়ির কাটা মেনে আপনার চলাচল। বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার যাওয়ার সময় নেই। চান একটু ছোয়াঁ লাগুক মনে প্রকৃতির রঙ রূপে। সপ্তাহের ছয়দিন অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে গাড়ির ভ্যাপসা গরমে, হয়ত গরমকে শত্রুই ভেবে নিয়েছেন । তবে গরম উপভোগ করার জন্য যেতে পারেন আড়িয়াল বিলে।

তবে একটা কথা বলে শুরু করি। আমার এক বড় ভাই তার বউকে নিয়ে মিশরের পিরামিড দেখিয়ে আনলেন। আসার পর ভাবীর বক্তব্য ছিল। পিরামিড দেখে আমার কি লাভ। তারচেয়ে বরং এরচেয়ে কম টাকায় আমি কলকাতা থেকে ভাল কেনাকাটা করতে পারতাম। সুতরাং কাকে নিয়ে আড়িয়াল বিলে যাবেন তা আপনাকে নিধারণ করতে হবে। আড়িয়াল বিলের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা সবার জন্য সুখকর হবে না।

তবে যাবার আগে অবশ্যই ছাতা নিয়ে যাবেন। মাথার টুপি, সাথে যদি শিশু থাকে তার রোদসহ্য করার ক্ষমতা না থাকে। তাকে না নিয়ে গেলেই ভাল। কারণ আড়িয়াল বিলের রোদে শহুরে মানুষের জ্বর আসা স্বাভাবিক। ঢাকা থেকে খাবার নিয়ে যান। অথবা যা পাবেন তা খাবেন এই ভরসায় চলে যেতে পারেন। আড়িয়াল বিলের ঝড় ভয়ানক হয়। আপনার ধারনা পাল্টে দিবে। তাই ঝড়ের আগেই নিরাপদ জায়গা বেছে নিবেন।

ঢাকার গুলিস্তান থেকে মাওয়াগামী বাসে চেপে বসুন। শ্রীনগরের ভেজাবাজার নামবেন।স্থানীয়দের সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করতে, মানুষজনকে জিজ্ঞাসা করুন যাব আড়িয়াল বিল। সহযোগিতা পাবেন। ব্যাটারি চালিত রিক্সায় করে আড়িয়ার বিল। আমি গিয়েছিলাম মোটর সাইকেলে তাই আমার যাওয়া আসার রাস্তা ভিন্ন। অনেক ঘুরাঘুরি।

উত্তাল পদ্মা আর শান্ত ধলেশ্বরীর এই দুইয়ের মাঝে মাছের খনি আড়িয়াল বিল। শীত কিংবা বর্ষা যখনই যান সবুজ আর সবুজের দেখা মিলবে বিলে। চোখ ধাধানো সবুজ। পানির রং আপনার হৃদয়ের জড়তা নিমিষে দূর করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দিবে। শুধু সুখ আর সুখ। বৃষ্টির পানি জমে গড়ে ওঠা ১৩৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই বিলে হাজার প্রজাতির প্রাণের অস্তিত জানান দিবে প্রতি মূহুর্তে।

সচ্ছ পানি আর পানি ঘিরে গ্রামবাসীর জীবন-জীবিকা, পানকৌড়ির পানিতে ছুটাছুটি, বকের মাছ শিকার, মাছরাঙ্গার একটা মাছ ধরার জন্য ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা, পানিতে ভেসে বেড়ানে কচুরিপানা, জলে ফুলে ফ্যাপা শাপলাদের সৌন্দর্য কিছু না কিছু তো আপনার মনে ধরবেই। যদি লুঙ্গি থাকে সাথে। সাতাঁর জানা আছে। তবে লাফিয়ে পড়ুন জলে।

নৌকার যদি ধীরে চলে সুযোগ করেে সচ্ছ এই জলে নিজের ছবিটাও দেখে নিতে পারেন। মাঝে মাঝে কোন কারণ ছাড়াই। হাত ধরুন প্রিয় মানুষের। শহরে তো সুযোগই পান না। জীবন মানে কি শুধুই ছুটবেন। নাকি এই রকম একটা আড়িয়াল বিলের পাড়েই জীবন কাটিয়ে দিবেন। বাস্তবতায় ফিরে আসুন ঢাকায় ফিরতে হবে। সূর্য ডুবার আগেই রওনা হন।

বর্ষায় সুযোগ যদি নাও মিলে। শীতে যান আড়িয়াল বিলে। শীতে আড়িয়াল বিল সবজির খনি।মাছ ধরে গ্রামবাসী উৎসব করে। যদি কাদামাখামাখি হতে আপত্তি না থাকে। তবে আপনি যুক্ত হতে পারেন।

তাই বলতে পারি শীত বর্ষা যখনই যাবেন তখনি সুখ মিলবে আড়িয়াল বিলে।

সপিংমল, খাবারের দোকান, টেলিভিশনের বাইরে মস্তিককে মাঝে মাঝে সবুজের ছবি ধারণ করার সুযোগ দিন। বিশ্বাস করুন আড়িয়াল বিল এমনই জায়গা। এবার আপনার পালা কবে যাবেন আড়িয়াল বিল। তবে অনুরোধ যখনই যাবেন আড়িয়াল তখন পরিবেশ নিয়ে সর্তক থাকবেন। আপনার ভ্রমনে যে বর্জ্য উৎপাদন হবে তা নিজের সাথে করে নিয়ে আসবেন। যেমন প্ল্যাস্টিকের বোতল-প্লেট, প্যাকেট, কাগজ, টিস্যু।

আবাসন কোম্পানীগুলোর মুনাফার বলি হচ্ছে আড়িয়াল বিল। এই দখল রুখতে হবে। সোচ্ছার হোন। ভ্রমণের ছবি সাথে একটা দুটা ছবি দিন আড়িয়াল বিল দখল দূষণের। আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নাগরিক ক্লান্তি ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য হলেও বিলটা থাকুক।

দায়িত্বশীল পর্যটক হোন।
আপনার ভ্রমণ আনন্দময় হোক।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৯
১৭টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×