somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুটান ভ্রমণ।

১৮ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়তে দেখেছি। বরফ টুকরো পড়া (শিলা বৃষ্টি) দেখার অভিজ্ঞতা আছে। আকাশ থেকে আম পড়ে/জাম পড়ে/ কিন্তু জীবনে প্রথম অভিজ্ঞতা হল, আকাশ থেকে পাথর পড়া দেখার।

আমরা ফুলশিলং ফিরছিলাম থিম্পু থেকে। চালক আগেই সর্তক করে দিলেন। প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাটা আজ কোন ভাবেই নিরাপদ নয়। যদি বেশি খারাপ হয় তবে ফিরে আসব এই শর্তে রওনা হলাম। ঘন্টাখানিক চলার পর চালক সিদ্ধান্ত জানাল সামনে না গেলেই এখন ভাল। যেহেতু আমি ব্যক্তিগত ভাবে গাড়ি ভাড়া নিয়েছি। আমি তার কথা এ বাক্যে রাজি হয়ে গেলাম।

সমস্যা হল আর এক বাঙ্গালি পরিবার তার জরুরী কাজ যেতেই হবে। তিনি কিছুতেই থাকতে পারবেন না। তিনি আমাকে নিয়ে যাবেন। তারা ভয় পাচ্ছেন। আমি ভীতু মানুষ, তাদের সাথে রওনা দিলাম। তাদের মনে জোর বাড়াতে।

যেহেতু যাবার পথে পুরুষ চালক ছিল। এইবার আমি আর ভুল করিনি। একজন নারী নিলাম। সেই মহিলা গাড়ির চালকের অসম্ভব দক্ষতার জন্য গাড়ির সামান্য ক্ষতি হলেও, সবাইসহ

বড়সর ক্ষতি ছাড়াই নিচে নেমে আসতে পারি।

তিনি সারা রাস্তায় গাড়ি চালিয়েছেন আকাশের দিকে তাকিয়ে। বিশাল পাথরে ধাক্কা থেকে যেমন গাড়ি ও যাত্রীদের রক্ষার দক্ষতা দেখিয়েছেন। ঠিক তেমনি তিনি বিপদে মাথা ১০০ ভাগ ঠান্ডা রেখে কাজ করেছেন। পাথর পরার সময় গাড়ি থেকে নেমে একদম পাহাড় ঘেষে দাড়ানো আর ভূমি ধ্বসের স্থানগুলোতে নিরাপদ দূর দিয়ে যাওয়া। সবই তার অভিজ্ঞতার ফল।

এসেই দেখি কুইন অফ ফুশিলং আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমার ফোনে ভুটান গেইটের কাছে হাটাহাটি করছেন। যদিও ঐদিন তার অফিস বন্ধের দিন। তাকে আমি ভাবী ডাকি। ভুটানের প্রতিটি মানুষই আন্তরিক। সুতরাং তাদের আন্তরিকতার মূল্য দেওয়া উচিত আমাদের পর্যটক হিসেবে।

ভুটানে নতুন নিয়ম হয়েছে। যারা স্থলপথে যাবেন তাদের অবশ্যই স্থানীয় কোন ভুটানির জামানতকারী প্রয়োজন হবে অথবা কোন পযটন সংশ্লিষ্ট্য কোন প্রতিষ্ঠানের পত্র কিংবা থিম্পুতে হোটেল বুকিং। এই তিনের এক ছাড়া এই সপ্তাহ থেকে ভুটানে বাঙ্গালীদের আর ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না।

কুইন অব ফুলশিলং আমার জিম্মাদার, পাশাপাশি তারা অন্তরিক ব্যবহার এবং বিনামূল্যে ফুলশিলং থাকা, এক বড় ভাই অতিথেয়তায় আমি শুধু মুগ্ধই না। পাহাড়ে চড়তে ভীতু আমি বার বার ভুটান যাব। প্রতিবছর ভুটান যাব পণ করে আসলাম তার পরিবারের কাছে।

আমার ফেবুর বন্ধুরা আপনাদের স্থলপথে যাবার পথে যদি কোন প্রকার সমস্যা হয় ভুটান সীমান্তে। তবে কুইন অব ফুলশিলং এর সহযোগিতা পাবেন শতভাগ নিশ্চিত। গত কয়েকদিনে আমার মৃদু অনুরোধে ৪জন বাঙালীর জিম্মাদার হলেন কুইন অফ ফুলশিলং।

* বৃষ্টির সময় রাতে ফুলশিলং থেকে থিম্পু আসা যাওয়া না করুন।

*স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা/উপদেশ মেনে চলুন।

*ভাল হয় চালক হিসেবে মেয়ে চালকদের বেছে নিন। কারণ তারা সেলফোনে কথা বলে না অথবা চ্যাট করবে না গাড়ি চালানো অবস্থায়।

*ভুটানিদের প্রতি আস্থা রাখুন। তারা অার যাই করুক। বিপদে আপনাকে ফেলে আসবে না। কিংবা ঝামেলা করবে না।

*স্থানীয় আইনগুলো মানার ক্ষেত্রে দৃষ্টি রাখুন। আপনি শুধু একজন ভ্রমণকারী নয়, আপনি বাংলাদেশ নামক দেশের প্রতিনিধিত্বও করেন।

* ফুলশিলং থেকে ভিসা পাবার পর অবশ্যই থিম্পুতে যাবেন। যদি না যেতে চান তা ভিসা অফিসারকে অনুরোধের সাথে বলেন।

* গালগালি,বাজে কথা বলবেন না। কারণ ভুটানিরা মোটামোটি বাংলা বুঝে।

* আপনি একজন বাংলাদেশি নাগরিক আপনার ভ্রমণকালীন ভাল/খারাপ আচরণ অন্য বাংলাদেশির ভ্রমনের উপর প্রভাব রাখবে।

*ফুলশিলংয়ে ভিসার জন্য এককপি ছবি ও পাসপোর্টের ফটোকপি দরকার হবে।

ছবি
১. ভূমি ধ্বস গাড়ির সামনে রাস্তা হুট করে বন্ধ।
২. গাড়ির সামনে পাথর পড়েছে

যারা আমার জন্য চিন্তিত/প্রার্থনা করেছেন। ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা আপনাদের প্রতি।

#ভ্রমণ_ভুুটান

২০১৬ সালের ভুটান ভ্রমণ

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:০৫
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×