মুজিব নগরকে ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান হিসেবে আরও পর্যটককে আকর্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কমপ্লেক্সটা বেশ সুন্দর ও পরিকল্পিত ভাবে বানানো হয়েছে। দেশের নানা স্থান থেকে অনেক ভ্রমণকারী এখানে আসতে পারে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে - মুজিবনগর
বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী পরিষদ (বাংলাদেশের প্রথম সরকার) শপথ গ্রহণ করেন ১৭ এপ্রিল ১৯৭১। স্বাধীনতা অর্জনের পরে বৈদ্যনাথতলা আমাদের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে “মুজিবনগর” হিসেবে নামকরণ করা হয়।
নব গঠিত মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণকে আনসার ও মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েক জন সদস্য গার্ড অব অর্নার প্রদান করেন। তৎকালীন বাংলাদেশ পুলিশের এসপি মাহাবুব গার্ড অব অর্নার অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন। বেলা ১১ টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম পতাকা উত্তোলন করেন, একটি ছোট দল জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম সরকার গঠনের ঘোষণা দেন এবং মন্ত্রী পরিষদ এর সদস্যবৃন্দকে উপস্থিত জনতার মাঝে পরিচয় করিয়ে দেন।
বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রী পরিষদ
প্রেসিডেন্ট: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ,ভাইস-প্রেসিডেন্ট: সৈয়দ নজরুল ইসলাম , প্রধান মন্ত্রী: তাজউদ্দীন আহাম্মেদ. পররাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রী: খন্দকার মোস্তাক আহাম্মেদ, অর্থ মন্ত্রী: এম মনসুর আলী , স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী: এ এইচ এম কামরুজ্জামান
ঐতিহাসিক আম্রকানন-
জমিদার কেদারনাথ রায় ১৯০০ সালে এই ঐতিহাসিক আম বাগান প্রতিষ্ঠা করেন. এখানে প্রায় ১১৭০ (এক হাজার একশত সত্তর) টি আম গাছ আছে.
উল্লেখ্য প্রতিটি আম গাছেই সতন্ত্র স্বাদ ও গঠনের আম ধরে। এই বাগানের যে কোন প্রান্ত থেকে তাকালেই সারিবদ্ধ ভাবে দেখা যায়।
মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ (স্মৃতিস্তম্ভ)
মুজিবনগরে স্মৃতিসৌধ মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালি জাতির আত্মত্যাগের প্রতীক। এখানে ২৩টি কংক্রিট স্তম্ভ রয়েছে, যা ক্রমবর্ধমান সূর্যের প্রতীক অবস্থায় দেখানো হয়েছে। ২৩টি স্তম্ভ দ্বারা পাকিস্তানের শোষন ও শাষন এর ২৩ বছরের (১৯৪৭-১৯৭১) প্রতীক বোঝানো হয়েছে। প্রথম স্তম্ভের উচ্চতা ৯’৯” এবং সর্বশেষ স্তম্ভটি ২৫’৬”। প্রতিটি স্তম্ভ ৯” করে বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিটি স্তম্ভের ৯” বৃদ্ধি ৯মাসের মুক্তি সংগ্রামের অগ্রগতির প্রতীক। গোলাকার আকৃতির ব্লক মুক্তিযোদ্ধাদের পবিত্র আত্মাহুতি ইঙ্গিত বহন করছে। লক্ষাধিক নুড়ি-পাথর মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম ও ৩০ লক্ষ শহীদের প্রতীক।
মুজিবনগর কমপ্লেক্স- বাংলাদেশের মানচিত্র , এখানে যা রয়েছে
মানচিত্রে ১১টি সেক্টরের অধীনে বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভিন্ন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের প্রতিকৃতি। ভারতে বাঙালি শরণার্থীদের প্রবেশ পথসমুহ। রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ইপিআর, পিলখানা এবং জগন্নাথ হলের উপর আক্রমন। বুদ্ধিজীবী হত্যা, রায়েরবাজার বধ্য ভূমি। নারীদের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতা। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্বারা আরও অনেক নৃশংসতার প্রতিচ্ছবি।
এক নজরে মুজিবনগর কমপ্লেক্স
আয়তন: ১৫.৩৯ হেক্টর। শুভ উদ্বোধন: ১৭ এপ্রিল ১৯৮৭খ্রিষ্টাব্দ। স্মৃতি স্তম্ভের স্থপতি: তানভির করিম।
তথ্য - সংগ্রহ এবং কর্তৃপক্ষের সৌজন্যে
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৩