মুসলিম-মুমিনদেরকে বিদ্রোহী, দেশদ্রোহী, ষড়যন্ত্রকারী ইত্যাদি অপবাদ দিয়ে তাদেরকে হত্যা করা, পঙ্গু করে দেয়া (অপরাধের অজুহাতে) এসব নতুন কিছু নয়। প্রায় ৩০০০ বছর আগে মিসরের ফারাও সাম্রাজ্যের উদাহরণ কুরআন কারীমে এসেছে- সুরা আরাফ ১২১-১২৭
মুসা ও হারুন (আঃ) এর নিকট যখন সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ যাদুকরেরা পরাজিত হয়ে, ফেরাওনকে খোদা মানতে অস্বীকারপূর্বক বলল-"আমরা জগৎসমূহের প্রতিপালকের উপর ঈমান আনলাম। যিনি মুসা ও হারুনের প্রভু। তখন ফেরাওন বলল- তোমরা আমার অনুমতি ছাড়া ঈমান এনেছ! এটা নিশ্চয় ষড়যন্ত্র, যা তোমরা করেছ দেশের লোকদের বিরুদ্ধে তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেবার জন্য, শীঘ্রই তোমরা এর পরিণতি জানতে পারবে। তোমাদেরকে পঙ্গু করে দেব, সবাইকে ফাসিতে ঝুলাব। ঈমানদারেরা (যাদুকর) বলল- নিশ্চয় আমরা আমাদের প্রতিপালকের দিকে ফিরে যাব।আমাদের সাথে তোমার শত্রুতা তো এ কারণেই যে আমরা ঈমান এনেছি আল্লার নিদর্শন সমূহের প্রতি যা আমাদের নিকট এসেছে।"
ঐতিহাসিক বর্ণনায় রয়েছে - যাদুকরদের সর্দার মুসলমান হয়ে যাবার পর প্রায় ৬লক্ষ লোক ঈমান এনেছিল। তখন ছিল যাদুবিদ্যার উৎকর্সের যুগ।সবচেয়ে বড় যাদুকর বিপুল প্রভাবের অধিকারী ছিল। এত লোক মুসলমান হয়ে যাবার কারণে ফেরাউনের একটা বিরাট বিরোধী দল দাড়িয়ে গেল।
সে -তোমরা আমার অনুমতি ছাড়া ঈমান এনেছ!- বলে একথা বুঝানোর চেষ্টা করল যে আমিও মুসাকে সত্য বলে মেনে নিতাম, এবং তোমাদেরকে ঈমান আনার অনুমতি দিতাম।কিন্তু তোমরা তাড়াহুড়া করলে আর প্রকৃত ঘটনা না বুঝেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে গেলে।
অন্য দৃষ্টিতে, ফেরাউন তার ভয়কে গোপন করে একজন ধুর্ত ও বিজ্ঞ রাজনীতিকের ভঙ্গিতে যাদুকরদের উপর বিদ্রোহমূলক অপবাদ আরোপ করল যে তোমরা মুসা এর সাথে গোপন ষড়যন্ত্র করে এ কাজটি নিজের দেশ ও জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে করেছ।
(এগুলো বর্তমান বিশ্বের সাথে মিলিয়ে দেখবেন। কাশ্মীরসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধ আধিপত্যবাদীদের এবং মিডিয়ার কথার সাথে মিলে)।
ফেরাউন এই দুরাবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছিল। তার উৎপীড়নমুলক শাস্তি অন্তরাত্মাকে কাপিয়ে দেবার মত যথেষ্ট ছিল। যে যাদুকরেরা কয়েক মুহুর্ত আগেও ফেরাউনকে খোদা মানতো এবং অন্যদেরকে সেই দীক্ষা দিত। ইসলাম গ্রহণের সাথে সাথে তারা কীভাবে বলে উঠল- তুমি আমাদেরকে হত্যা কর আর যাই কর আমরা আল্লাহর কাছেই ফিরে যাব!!!
ইসলাম ও ঈমান(বিশ্বাস) এমন এক প্রবল শক্তি যে, যখন তা কোন আত্মায় বদ্ধমুল হয়ে যায় তখন মানুষ সমগ্র পৃথিবী ও তার যাবতীয় উপকরণের মোকাবেলা করতে তৈরী হয়ে যায়।এই ঈমানের কারণেই মুসলমানরা প্রথমে নির্যাতিত অতপর দিগ্বীজয়ী হয়েছিল। এই ঈমানের কারণেই মুসলমানরা এখন নির্যাতিত হচ্ছে অতপর দিগ্বীজয় করবে। ইনশা আল্লাহ।
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা হযরত ওমর ফারুক রাঃ বলেন- আল্লাহ আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন ইসলাম দ্বারা, আমরা এতদ্ব্যতীত অন্যকোথাও সম্মান খুঁজলে অপমানিত হবো।