ইন্টারভিউ চলতেছে।
স্থান: আমার বাসা
ইন্টারভিউ নিচ্ছেন: গিন্নি
ইন্টারভিউ দিচ্ছেন: কাজের বুয়া।
- খালা, প্রতি কাজ কত কইরা?
- অইন্যেরা নেয় পাচশো, আমি নেই ছয়শো
- ও আচ্ছা
- একশো টেকা বেশী নেই কেন, জিগাইলেন না?
- বলেন
- কাজের কোয়ালিটি অইন্যের চেয়ে ভালা এই জন্য।
এর পর জিজ্ঞাসা করা হইলো
- খালা, সকাল নয়টার সময় আসতে পারবেন?
- না খালা, দুইটা থেকে চাইরটার মইধ্যে পারবো। এর আগেও পারবো না, পরেও না।
ঘটনা হইলো, তার মারাত্মক টাইট শিডিউল। মাসে নয় হাজার টাকা তার ইনকাম। শিডিউলে এদিক সেদিক হলে তার ইনকামে টান পড়বে। সে তার টাইট শিডিউল বুঝাচ্ছে
- খালা, আমার তো নতুন কাম নেওনের সুযোগ আছিলো না। এই মাসে এক বাসার কাম ছাইড়া দিমু। তাই আগে থেইক্কাই নতুন কামের সন্ধান করতাছি।
- ক্যান, ছাড়বেন কেন?
- খালা, আমিতো কামে যাই আমার ছেলেটারে লইয়া। ওরে বসাইয়া রাইক্খা কাম করি। যেই বাসার কাম ছাড়মু এই বাসার মহিলার স্বভাব ভালা না।
অন্যের দোষ শুনার প্রতি গিন্নি মনযোগ দিলো না। একটু অপেক্ষা করে বুয়া নিজেই স্বভাবের ঘটনা বল্লো
- মহিলা তার জামাইর গায়ে হাত তুলে খালা। দুই দিন আমার সামনেই তুলছে। এখন কন আমার ছেলেটা তাইলে কী শিখলো! পরিবেশ যেখানে ভালা না, হেইখানে খালা কাম করুম না। কামের কি অভার আছে?
-০-
গি্ন্নির মুখে এই গল্প শুনে গিন্নিরে জিজ্ঞাসা করলাম
- এই বুয়া রাখছো?
- হা দেখি কেমন কাজ করে।
খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো, গিন্নিরে জিজ্ঞাসা করি - শুধু জামাইর উপর হাত উঠাইলেই পরিবেশ খারাপ হয় বলছে? নাকি মুখের কথা নিয়াও কিছু বলছে?
কিন্তু সাহসে কুলাইলো না।
( এই ঘটনা বাড়িয়ে বলা না। শুধু একটু গুছায়ে বলা। যে দেশে কাজের বুয়াও তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আচার আচরণ, শিক্ষা দিক্ষা নিয়ে এতটা সচেতন। সে দেশের ভবিষ্যৎ অবশ্যই সুন্দর। শুধু নষ্ট রাজনীতি ছাড়া আর বড় কোন অসুখ এই জাতির নাই)