জানা গল্প। পড়েছিলাম ইংরেজীতে। বাংলায় লেখার লোভ সামলাইতে পারলাম না।
প্রেমিক প্রেমিকা বিয়া করলো। সিদ্ধান্ত হইলো, হানিমুনের এক সপ্তাহ তারা কোথাও যাবে না। দড়জা, জানালা বন্ধ করে নিজেদের ফ্ল্যাটেই থাকবে। ফোন টোন সব থাকবে বন্ধ। দুনিয়ার যে ই আসুক, তারা ফিরাও তাকাবে না
সময়টা কেবলই দুইজনার।
প্রথম দিন গেলো। দুই পক্ষের বাবা মা সন্তানদের না দেখে কোন মতে থাকলো। পরের দিন ভোর বেলা ছেলের বাপের আর মন মানে না। ভোর বেলা দড়জায় খটখট করে বললো
- কুটকুট আমার। বাবা পাখী আমার...
কিন্তু দড়জা বন্ধ ছিলো বন্ধই রইলো। একে একে সবার বাবা মা ই আসলো, ডাকলো। কিন্তু দড়জা আর কেউ খোলে না। ভিতর থেকে কেউ সাড়া শব্দও করে না। শেষমেশ মেয়ের বাবা বললো
- মা গো জানালা দিয়া একটু মুখটা দেখাওগো জননী। তোমারে না দেইখাতো কোনদিন ছিলাম না। আর পারতেছি না।
মেয়ে জানালা খুলবে কী! দড়জা খুইলা বাপের বুকে ঝাপায়া পড়লো। পরে জামাইকে বললো
- সরি আমি সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারলাম না।
জামাই কিছু বললো না। এরা সযসার শুরু করলো।
পরপর দুইটা ছেলে হইলো সংসারে। ছোটখাটো অনুষ্ঠানও করলো। পরের বার হইলো মেয়ে। গিন্নির মনে ভয় ঢোকে গেলো! ভাবলো, মেয়ে হয়ে আমি সংসার শুরুতেই নিয়ম ভাঙছিলাম। আমার জামাই নিশ্চয়ই মেয়ে হওয়াতে মন খারাপ করবো।
মেয়ের অনুষ্ঠানে এবার তার বাবা বি-শা-ল অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। রাস্তাঘাটের পরিচিত লোকদেরও দাওয়াত দিলেন। বউ অবাক হয়ে বললো
- মেয়ে হওয়াতে তুমি কষ্ট পাও নাই!
লোকটা বউয়ের দিকে ফেল ফেল করে তাকায়ে কেঁদে দিলো। বললো
- এই মেয়েইতো আমার জন্য দড়জা খুইলা বের হইয়া আসবো বউ! আর দুই হারামজাদাতো হইবো আমার মত। আমার ডাকাডাকিতে জীবনেও দড়জা খোলবো না।
-০-
গল্প শেষ। আমার একটা মেয়ের খুব শখ ছিলো। হইলো প্রিয়। দেখি ছেলেও কম মায়া লাগে না। তবে প্রিয় বড় হোক, সংসার করুক। যদি অদ্দিন বেঁচে থাকি, তার দড়জায় খটখট করবো না। এখন প্রিয় আমাকে ধাক্কায়ে শোয়ায়। তারপর পিঠে উঠে দাঁড়ায়। তখন অপেক্ষা করবো, কখন প্রিয় আইসা আমারে খাটে ফালায়া বাপের সাথে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলবে।
দুনিয়ার সব বালিকারাই এখন আমার মেয়ে। এরা সবাই আছে আমার জন্য দড়জা খুলে দিতে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:০৫