somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম ও ইনসাফ : প্রয়োজন ধৈর্য আর উদারতা

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশ ভেঙ্গে পড়ুক উল্কা
ভাঙ্গুক মনের শত প্রহরা,
দীপ্ত শক্ত পোক্ত ঈমানী
ভেদিবে বাণ পিষিতে শয়তান, হোক সে মহাঅধরা।


ধৈর্য আর উদারতার যখন স্খলন হয়, তখন ঈমানেরও পতন হয়। যুগে যুগে তাই মহান আল্লাহতা’লা বিভিন্ন নবী, রাসুল, ওলী, আওলাদ, ইসলামী রাজা-বাদশা, পীর ও মুর্শিদদেরকে বার বার শিখিয়েছেন দেখিয়েছেন কিভাবে ধৈর্য ধরতে হয় আর উদার হতে হয়। সাধনায় সব কিছুই মেলে। সাধনা বলতে নিশ্চয়ই ভাল কিছুর জন্যই হওয়া বাঞ্ছনীয়।

একদিন আসাদ তার বন্ধুদের সাথে কথা বলতে গিয়ে তার আক্ষেপের কথা বলে ফেলল- দোস্ত, সারা জীবন চোখ দু’টোকে সংবরণই করলাম। চোখের সামনে কত মেয়ে স্কুলে গেল, কত মেয়ে যুবতী হলো, কত মেয়ের বিয়ে হলো। চোখ জুড়িয়ে কিছুই দেখতে পেলাম না। এ-ও কি কম শাস্তি! অথচ তোরা দিব্যি প্রেম করে বেশ আছিস। একটা ছাড়ছিস আরেকটা ধরছিস। মনে অগোচরেই শয়তানটা তার বেশে জেগে উঠেছিল আসাদের মন গলিয়ে, বুঝতে পেরেই তওবা করেছে সে। প্রশ্নটা ঠিক হয়নি। সংবরণ, ধৈর্য, নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির মধ্যেই প্রকৃত সুখ লুকিয়ে আছে। নিজের মনের কাছে অন্তত: পরিষ্কার থাকা যায়। এটাই বড় পাওয়া।

ধীরে ধীরে বন্ধু হারা হয়েছে আসাদ। কারণ তার মূল্যবোধের সাথে অন্যদের মিল পাওয়া যাচ্ছিল না। তাদের বিভিন্ন রকমের বাতিক- কেউ হয়তো বেশ দানশীল, কিন্তু শারীরিক চরিত্র খুব খারাপ। কেউ আবার টাকা পয়সার ব্যাপারে খুবই সৎ কিন্তু ব্যবহারটা বাজে। কেউ আবার মিথ্যে বলে প্রতি মুহূর্তে কিন্তু মেয়ে সংক্রান্ত ব্যাপারে বেশ প্রতিক্রিয়াশীল। এদের কেউ আবার সব রকমের সিনেমা পাগল কিন্তু নামাজ-কালামে নো ছাড়। কখনো কেউ সব দিক থেকে অনন্য কিন্তু ধর্মটাই তার যেন নেই।

মানুষের মধ্যে এতো এতো রকমভাবে নিজেকে বেছে নেবার বাসনা, ভিন্নতা, মূল্যবোধের বৈপরীত্য, চিন্তার পার্থক্য, বিশ্লেষণের রকমভেদ; ভাবলেই কখনো কখনো মনে হয় আমরা আসলে সহজ, সরল, সাদামাটা আর উদার হতে বোধ হয় শিখলাম না। সাধারণভাবে সবাই কোন একটি বা একগুচ্ছ নীতি-আদর্শে এক থাকতে পারছি না। অথচ একবার ভাবুন তো, যখন শিশু ছিলাম, বা স্কুলে একসাথে কাদা মেখে ফুটবল বা গোল্লাছুট খেলতাম, আড্ডা হতো, কখনো খুনসুটি মারামারি। কই তখন তো বোধের ভিন্নতাগুলো চোখের সামনে অতো কঠিনভাবে প্রকট হয়ে ধরা দিত না। একটা ঘটনাকে মানুষ এখন ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিক থেকে ব্যাখ্যা করেন। কখনো এমনও দেখা গেছে- একটা লোক খুন হলো, এটা নিতান্তই অগ্রহণীয়, নির্মমতা, সে যে-ই হোক না কেন, অথচ খুনের মতো এই ঘটনাও কারো বা কিছু জনের কাছে- ঠিক-ই হয়েছে, এটাই উচিৎ ছিল টাইপের গ্রহণযোগ্যতা পায়।

ইসলামধর্মকে মানলে তো সবার উদারতা আর ধৈর্যের অবতার হবার কথা। যে কাজটি ধৈর্য ধরে সাধনা করে বাগিয়ে নেয়া সম্ভব তা কি হিংসা আর খুন দিয়ে সম্ভব? নীতিবান, মানবতার জন্য ভালো হতে যিনি প্রতি মুহূর্ত ভাবেন তিনি কি অন্যায় করতে পারেন? যা কিছু ঠিক তা-ই তো মেনে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করবেন তিনি। আমাদের লোভ, মোহকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অনন্য মানুষ হতে চাইলে হতে হবে পরোপকারী, বিতরণকারী, লোভহীন, আয়েশহীন, অর্থহীন (টাকা বিমুখতা)। ইসলামের ইতিহাসগুলো পড়লে এর বহু ঘটনা বর্ণনা দেয়া সম্ভব। হযরত আবু বকর, হযরত আলী, হযরত ওমরসহ আরো অনেক অনেক ওলী-মুর্শিদ-পীর-কামেল এর জীবন-যাপন চর্চা করলেই পাওয়া যাবে এর উদাহরণ।

আমাদের একদম চোখের সামনে জ্বলজ্বল করছে কোরআন আর হাদিস- হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে অনুসরণ করলেই তো পুরো ইসলামকে দেখা যায়, দেখা যায় ইনসাফ, সত্যবাদিতা, ন্যায়বিচারের পদ্ধতি এবং তার সর্বসাকুল্য। প্রতিটি মুসলমানের ঘরেই তো নিশ্চিতভাবেই আছে একটি করে কোরআন। এখন তো গ্লোবাল বিশ্ব। ভাষা বোঝার সীমাবদ্ধতাকে আমরা এখন আর কোন সমস্যাই মনে করি না। তাই আল-কোরআনের প্রতিটি অক্ষর মেনে চলি আর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)কে অনুসরণ করি হই অনন্য মানুষ।

-এস জে রতন
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×