somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা ব্যান্ড সংগীতের এ্যালবাম কাভার :( (স্মৃতি সংরক্ষণমূলক পোষ্ট)

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন থেকেই পোষ্টটা লিখে ড্রাফট করে রেখেছিলাম... আজ / কাল করতে করতে আর পাবলিশ করা হচ্ছিল না। আজ ভাবলাম পাবলিশ করেই দেই :)
একটু ভূমিকা দেই > আমি ছোট থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত কাটিয়েছি নড়াইলের কোন এক অজো পাড়া গাঁয়ে। যেখানে তখন ছিল না কোন বিদ্যুৎ, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বর্ষার সময় এক হাটু কাদা মাড়িয়ে স্কুলে যেতাম। তো এমন একটি গ্রামে বিনোদনের মাধ্যম ছিল আমার বাবার টু-ইন-ওয়ান রেডিও কাম ক্যাসেট প্লেয়ার। যা কিনা পাঁচটা অলিম্পিক ড্রাইসেল ব্যাটারি দিয়ে চলত। বেশির ভাগ সময় রেডিও-ই শোনা হত। ক্যাসেট এর ফিতা (এ্যালবাম) যে কয়েকটা ছিল তা বেশি চালাতে পারতাম না আব্বুর ভয়ে > কারণ তাতে ব্যাটারি বেশি দ্রুত ফুরাতো। আব্বু নিয়মিত বিবিসি , ভয়েস অব আমেরিকা শুনতেন। তারপরও আব্বুর যখন অফিসে চলে যেত আমি লুকিয়ে লুকিয়ে ক্যাসেট প্লেয়ার চালু করতাম :D তখন বন্ধুর সহায়তায় কয়েকটা ব্যান্ড সংগীত এর এ্যালবাম শুনি। দেখতে দেখতে ব্যান্ডের ভক্ত হয়ে গেলাম। তখন বিটিভিতে বহুরূপী নামক একটা বিনোদনমূলক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান হত তাতে প্রতি পর্বে ২/৩ টা নতুন ব্যান্ড এ্যালবামের গান থাকতো। আর প্রিয় ব্যান্ড শিল্পীর নতুন কোন গান শুনলে সেটা কোন এ্যালবামের তা জানার জন্য পাগল হয়ে যেতাম। শুকনো মৌসুমে স্কুলে যেতে একটা হিরো সাইকেল ছিল আমার। সেই সাইকেল নিয়ে স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে চলে যেতাম ৫ কি.মি. দুরের থানা সদরে । সেখানে ৩/৪ টা ক্যাসেটের (ফিতা) দোকান ছিল। সেখানে গিয়ে গানের কলি বলতাম আর উনি সেটা মিলিয়ে এ্যালবাম দিত। কত কষ্ট করে এই এ্যালবামগুলো কিনেছি তা আমি-ই জানি। অনেক সময় টিফিনের পয়সা বাচিয়ে, ঈদের সালামি দিয়ে এসব এ্যালবাম কিনেছি। মাঝে মাঝে সব এ্যালবাম কেনার সামর্থ্য ছিল না, তাই বেশ কয়েকটা এ্যালবামের গান মিলিয়ে ব্লাংক ক্যাসেটে রেকডিং করে নিয়ে আসতাম। এতে খরচ কম হত আর সব প্রিয় শিল্পীর গান এক ক্যাসেটে পেতাম :)

তো এভাবে ১৫০-২০০টি এ্যালবাম সংগ্রহ করেছিলাম ...... তারপর এল সিডি / এম.পি.থ্রি'র যুগ। এই যুগের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে অযত্নে পড়ে থাকলো আমার এতদিনের জমানো সেই এ্যালবামগুলি :(


সব সময় প্রিয় ছিল আছে থাকবে.. গুরু জেমসের গান


এই এ্যালবামের লিখতে পারিনা... এখনো শুনি


অনেক ভাললাগা একটা এ্যালবাম


বেষ্ট অব জেমস্


এটা রি-রেকোডের্ড এ্যালবাম


এই এ্যালবামে জেমসের "আদালতে দেখা হবে" গান খুব প্রিয়


এই এ্যালবামের বেশকিছু গান খুব প্রিয়


গুরু জেমস এর এ্যালবাম.... ব্যাফক ভাল লাগে


আমি বরাবর-ই গুরুর ভক্ত :)


কাভারের ভিররের লেখাগুলোও ভাল লাগতো


আইয়ুব বাচ্চুর গানও তখন সমান জনপ্রিয়


এটা খুব বেশি পুরোনো নয়। হাসানের একক এ্যালবাম।


এটা সাউন্ডটেক থেকে বেষ্ট গান নির্বাচন করে এ্যালবাম বের করা হয়


অসাধারণ সব গান উপহার দিয়েছেন প্রিন্স মাহমুদ....


বাংলা ব্যান্ডের এ্যালবাম কি এই একটি-ই ?? (গানগুলো নেশা ধরায়)


দাতভাংগা নাম ;) (ভিতরের পাশ)


জেমস পার্থর ডুয়েট এ্যালবাম.... কয়েকটা গান ভাল লেগেছিল


লেইস ফিতা লেইস..( এই গান শুনে আব্বা তো আমায় মারতে এসেছিল, কিন্তু তখন তাকে বুঝাতে পারি নাই এইটা আমার কত্ত ভালা লাগে )


মিক্সড এ্যালবাম... প্রতিটি গান-ই মনে রাখার মত।


এল.আর,বি'র হিট এ্যালবাম -এর অনেকগুলো গান আমার প্রিয়।


মন চাইলে মন পাবে-এর বাণী :)


এর প্রতিটি গান অসাধারণ।


এই এ্যালবামটা না শুনলে অনেক কিছু মিস করবেন। অসাধারণ।


এটাও অসাধারণ... হাসানের গানটাও জট্টিল..অপরিচিতা..


জেমস আইয়ুব বাচ্চুর ডুয়েট। প্রিন্স মাহমুদের সুরে। বেসম্ভব ভাল গানগুলি।


শওকাত এর সুরে.. চাচা ঢাকা কত দুর " গানটা মার্কেট পাইছিলো।


প্রয়োজন এর ভিত্রের পাশ :)


জুয়েল বাবু'র সুরে ব্যান্ড মিক্সড এ্যালবাম। বেশিরভাগ গান অসাধারণ।


এটা বেশি পুরনো না। গুরু আর হাসানের গানগুলো ভাল-ই লেগেছে।


বেশ কিছু মনে রাখার মত গান আছে এই এ্যালবামে


ভিত্রের একাংশ ।


এটা আমার কেনা শেষ অডিও ক্যাসেট :(


প্রিন্স মাহমুদের ... আর এক অনবদ্য সৃষ্টি।


সুরকারের কথাগুলি-ই ছিল তখন তার সাথে একতরফা যোগাযোগের মাধ্যম।


এই এ্যালবামে ব্যান্ড এবং আধুনিক গানের সংমিশ্রনে অসাধারণ একটা এ্যালবামে রূপ নিয়েছিল। তুমি যদি বলে পম্মা-মেঘনা একদিনে দেব পাড়ি... এই এ্যালবামের গান।


বিপ্লব (প্রমিথিউস)ও কম শ্রোতা মাত করেনি। চমৎকার কিছু গান আছে এতে।


বাচ্চু, জেমস ও হাসান এর এ্যালবাম এটি... জেমসের গানগুলি সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছিল।


এটা সম্ভবত হাসানের প্রথম সলো এ্যালবাম। প্রিন্স মাহমুদ এখানেও তার প্রতিভার চমৎকার স্বাক্ষর রেখেছেন।


তাল -এর বার্তা :)


আর্কের চমৎকার কিছু গান নিয়ে এই এ্যালবামটি।


এটা হাসানের খুব বেশি পুরনো কোন এ্যালবাম নয়। গানগুলি মোটামুটি।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>
এখনো মাঝে মাঝে মনে পড়ে আগে একটা গান শুনতে কত-ই না কষ্ট করতাম। একটা এ্যালবাম ক্যাসেট প্লেয়ারে চলত আর আরেকটা এ্যালবামের মধ্যে কলম / পাটকাঠি / ব্রাশ ইত্যাদি দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গানের শুরুতে আনতাম যাতে প্লেয়ারে টেনে সময় নষ্ট না হয়। আর এখন হার্ডডিস্কে ৩৫,০০০+ গান, ক্লিক করলেই বেজে ওঠে, আগে পিছে করার জন্য আর কলম ঢুকাতে হয় না। তবুও সেই ৩৫/৪০টাকা দিয়ে কেনা ক্যাসেটের মত মজা পাই না। হয়তবা সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সেই শ্রোতার মৃত্যু হয়েছে :(

ক্যাসেটগুলি একটা বস্তার ভিতরে রেখেছিলাম... অনেকদিন বাদে বস্তাটা খুলে দেখি সেখানে নানা রকম পোকা-মাকড় তাদের স্থায়ী ঘর বানিয়েছে :( আমি তাই দেখে দ্রুত সেগুলো রোদে দিলাম... সেখান থেকে যেগুলো কিছুটা অক্ষতভাবে উদ্ধার করতে পেরেছি সেগুলো স্মৃতি হিসাবে ডিজিটাল ফরম্যাটে রাখতে স্ক্যান করলাম এবং এই ব্লগে রাখলাম। আমি এখানে শুধু বাংলা ব্যান্ডের এ্যালবামগুলির কয়েকটা দিয়েছি। বাকীগুলোর মধ্যে ছিল ইংরেজি , হিন্দি, নাটক, বাংলা সিনেমা (তখন বাংলা সিনেমা অডিও আকারেও রিলিজ হত) , যাত্রাপালা আরো কত কি।

এখন শুধু মনে হয় চিকনমিয়া ঠিক-ই বলেছেন.... স্মৃতি তুমি বেদনা

পোষ্টটি আমার সব সময়ে প্রিয় গীতিকার, সুরকার প্রিন্স মাহমুদ এর নামে উৎসর্গ করছি। আল্লাহ তাকে সর্বদা ভাল রাখুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:০২
৮৭টি মন্তব্য ৮৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×