somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিভাবে ওরা যৌনপল্লীতে আসে এবং কেন বেরুতে পারে না (১৮ +)

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রাজা বা জমিদাররা একসময় বাইজি নাচাতো,আনন্দ-ফুর্তি করতো এবং তারা নিজেদের প্রয়োজনে তাদের ব্যবহার করতো।বাইজিরাও এর বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা পেতো। মূলত এখান থেকেই যৌন পেশার উৎপত্তি বলে অনেকের ধারনা। এ জন্যে অনেকে এটাকে পৃথিবীর বহু পুরাতন পেশাও বলে থাকেন। যদিও এ পেশার স্বীকৃতি আমাদের দেশে নেই। আমাদের সংবিধানে সুস্পষ্ট ভাবে যৌন পেশাকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়নি। সংবিধানে বলা আছে - রাষ্ট্র গণিকাবৃত্তি নিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে। কিন্তু প্রশ্ন হল,রাষ্ট্র যতদিন না তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো (অন্ন,বস্ত্র ,বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার) মত মৌলিক চাহিদা পূরনে সক্ষম হবে, ততদিন এটা নিরোধ করাও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, রাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক চাহিদা গুলো পূরনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের রাষ্ট্রের বা সরকারের সে সংগতি এখনো হয়নি। যার কারণে রাষ্ট্র বা সরকার এটাকে (যৌনকর্মকে) সরাসরি নিষিদ্ধ করছে না।

"যৌনকর্মী কারা"
এ সমাজের কিছু নিগৃহীত, নির্যাতিত ও বঞ্চিত মানুষ, যারা পেটের দায়ে জীবিকা নির্বাহ করার জন্য কোন না কোন ভাবে যৌন কাজ করতে বাধ্য হয়।



"যেভাবে ওরা যৌনপল্লীতে আসে"
আমার জানা মতে,একবারে স্বেচ্ছায়, স্ব-জ্ঞানে কেউ এ পেশায় আসেনি।মূলত দালালদের মাধ্যমে এ পেশায় ওদের (যৌনকর্মীদের) আগমন ঘটে। দালালরা বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ দেয়ার কথা বলে যৌনপল্লীতে এনে তাদের বিক্রি করে দেয়। বিনিময়ে তারা কিছু নগদ পয়সা হাতিয়ে নেয়। আবার অস্বচ্ছল পরিবারের কেউ কেউ বাড়িতে সৎ মায়ের উপদ্রব সহ্য করতে না পেয়ে রাগের মাথায় বাড়ি থেকে বের যান। পথ ঘাট অজানা থাকে বলে তারাও অনেক সময় দালালদের খপ্পরে পড়ে যান, তারপর যৌনপল্লীতে। এছাড়া যারা রাতের আধাঁরে রাস্তাঘাট, ফুটপাত, পার্ক বা উদ্যান এসব জায়গায় আগে থেকেই দেহ ব্যবসায় নিয়োজিত, তারা দালালদের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যৌনপল্লীতে আসে। এই সব দালালদের বিচরন সর্বত্র। লঞ্চঘাট, বাস ষ্টেশন, রেল ষ্টেশন, পার্ক বা উদ্যানে এরা (দালালরা) বিচরন করে। সুযোগ পেলেই এরা ভাল মানুষ সেজে মানুষের সর্বনাশ ডেকে আনে। আর এর জন্য বেছে নেয় তারা নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে। গ্রাম থেকে কাজের সন্ধানে শহরে আসা অল্প বয়সী মেয়েরা কাজ পাওয়ার প্রলোভনে পড়ে দালালদের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়। ফলে দিকভ্রান্ত হয়ে ঢুকে যায় পাপাচার জীবনে।



"কেন ওরা যৌনপল্লী থেকে বেরুতে পারে না"
যারা পূর্বেই দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল, তারা এখানে যৌনকর্ম করতে নিরাপদ বোধ করে। ফুটপাত,পার্ক,উদ্যান,রেলওয়ে স্টেশনের মত পুলিশী হয়রানী ও মাস্তানের চাঁদাবাজির স্বীকার হতে হয় না। আর যারা প্রতারনার শিকার হয়ে দালালদের মাধ্যমে এখানে আসে, তারা এখান থেকে ইচ্ছা করলেই বের হতে পারে না। কারণ তাদের আনতে গিয়ে দালালদের মোটা অংকের টাকা দিতে হয়, সর্দ্দারনীদের। তাই কিছুদিন সর্দ্দারনী তাকে চোখে চোখে রাখে। তারপর যখন ওরা যৌন পেশায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন তাদের আর কোথাও যাওয়ার যায়গা থাকে না। সমাজ ও পরিবার থেকেও তারা বিচ্ছিন্ন হয়। ফলে এটাকেই তারা ভাগ্য হিসেবে বরন করে নেয়।

অনেক সময় ক্লাইন্টদের অর্থাৎ তাদের খদ্দেরদের সাথে নিয়মিত মেলামেশার সুযোগে সম্পর্কও গড়ে উঠে। এ সুযোগে বাইরেও বেড়িয়ে যান অনেকে, কিন্তু সে ভালবাসা বেশিদিন টিকে না। কিছুদিন থাকার পর জমাকৃত টাকা ফুরিয়ে গেলে, সেই প্রেমিকও তাকে প্রত্যাখ্যান করে। আবার সেই যৌনপল্লীতেই ফিরে আসতে বাধ্য হন তারা।

অল্পবয়সী যৌনকর্মীরা প্রচুর টাকা-পয়সা উপার্জন করে কিন্তু ধরে রাখতে পারে না। অধিকাংশ যৌনকর্মী বিভিন্ন ধরনের নেশায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তাদের কথায় এখানে আনন্দ আছে, ফূর্তি আছে, বাধা দেয়ার কেউ নেই, এখানে পরিবারের মত কেউ খবরদারি করে না। ফলে জীবনটাকে উপভোগ করা যায়।

যৌনকর্মীদের নিয়ে কয়েক বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছিল। এখানে যা দেখেছি এবং তাদের মুখ থেকে যা শুনেছি তাই এখানে শেয়ার করলাম। তাদের বিভিন্ন বিয়ষ নিয়ে লিখতে গেলে অনেক সময়ের ব্যাপার। তাই আজ এখানেই ইতি টানছি।




ছবিগুলো গুগল থেকে নেয়া।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×