somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একদিনে আনারসের দেশে ভ্রমণ ( টাঙ্গাইলের মধুপুর- জলছত্র বাজার)

২১ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্লানটা আগে থেকে করা ছিল না, হঠাৎই হয়ে গেল, আমরা ৭ জন চারটা মটর সাইকেল, যাব বহুল আলোচিত টাঙ্গাইলের মধুপুরের জলছত্র বাজারে, উদ্দেশ্য হল প্রতিদিন সেখানে বসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আনারসের হাট, সেটা দেখতে।
যথারীতি সকাল ৬ টায় পুরোনো ঢাকা থেকে রওনা দিলাম, ৭ জন ৪ টা মটর সাইকেল নিয়ে।



৭.৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে, সেখান থেকে নাস্তা সেরে আবার রওনা দিলাম, সাভার-চন্দ্রা হয়ে টাঙ্গাইল চলে গেলাম, কেউই রাস্তা ভালভাবে চিনতাম না তবে সাথে ছিল গুগল ম্যপ, সেটা ধরেই চলে গেলাম, এক সময় পৌঁছে গেলাম মধুপুর বাজারে। সেখানে ছবি তুললাম সবাই মিলে এবং সেখান থেকে আবার রওনা দিলাম ।


জলছত্র বাজারের দিকে পৌঁছতে আমাদের ১০ টা বেজে গেল, মাঝে অনেক বার যাত্রা বিরতি দিয়েছিলাম আমরা।সেখানে গিয়ে শুরু হল ছবি তোলার প্রতিযোগিতা আর ছবি তুলতে তুলতে পাশেই একটা হোটেলে বসে গরম গরম সিঙ্গারা খেলাম, চা খেলাম, তারপর বের হলাম হাট পর্যবেক্ষণ করতে, বিভিন্ন চাষিদের সাথে কথা বললাম, বুঝলাম এই বাজারে আনারস ২ প্রকার একটা পাকা আর একটা কাঁচা, আমি তো না বুঝেই ২ টা পাকা আনারস কিনে ফেললাম ৫০ টাকা দিয়ে, আর সেটা কাটানোর জন্য হোটেলে নিয়ে গেলেই জানতে পারি আসল রহস্য ! হলুদ আনারস গুলো আসলে ভালো না এটাতে কেমিক্যাল দেয়া হয় আর যে আনারস গুলো কাঁচা সেগুলো হচ্ছে কোন প্রকার ক্যমিকেল ছাড়া, সুতরাং আমরা খাইলাম ধরা, হলুদ টা কিনে পরে আরো ২ টা সবুজ আনারস কিনলাম খাবার জন্য, এখন হলুদ এবং সবুজ ২ টা আনারসই কাটা হল খাবার জন্য আসলেই খেয়ে দেখলাম হলুদ আনারসের চেয়ে সবুজ আনারস টা অনেক মজা।
দেখি আনারসের হাট-১


হটাত হাটের মধ্যে বৃষ্টিঃ


বৃষ্টি বন্দী আমরা সাথে গরম চাঃ


তারপর আমরা গেলাম গ্রামের ভেতরে আনারসের বাগান দেখতে প্রায় ২ কিঃমিঃ গ্রামের ভেতর গিয়ে দেখলাম আনারসের ক্ষেত। তারপর সেখান থেকে গেলাম মুক্তাগাছা, টার্গেট বিখ্যাত মণ্ডা খাওয়া।
দুপাশে মধুপুরের জঙ্গলের ভেতর দিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা হুন্ডা চালানোর পর গিয়ে পৌঁছালাম সেই ঐতিয্যবাহী মুক্তাগাছাতে।
সেখানে সবাই দুপুরের লাঞ্চ করলাম, তারপর গেলাম সেই বিখ্যাত মণ্ডার দোকানে, সেখানে গিয়ে মণ্ডা খেলাম এবং বাসার জন্য সবাই নিয়ে নিলাম।
মণ্ডার দোকানঃ


পাশেই ঐতিয্যবাহী মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ী সেটা দেখে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক হয়ে ঢাকা পৌঁছালাম রাত ৯ টার সময়। শেষ হয়ে গেল একদিনের ট্যুর।
জমিদার বাড়ীর বাহিরঃ অনেক সুন্দর কিন্তু জমিদার বাড়ীর ভেতরটা সদরঘাট ! দেখার কেউ নাই।
হাল্কা বর্ণনাঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুরের অরুণখোলা, ষোলাকুঁড়ি, আউশনাড়া ইউনিয়নে আনারসের সবচেয়ে বেশি চাষ হয়।এ এলাকার সবচেয়ে বড় হাটের নাম জলছত্র। আর এইসব আনারসের নাম হল জলডুবি। প্রতি প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার বসে এই আনারসের হাট, আসে পাশের বিভিন্ন গ্রাম এলাকা থেকে সাইকেল, ভ্যন ঘোড়ার গাড়িতে করে আনারস নিয়ে চলে আসে এই বাজারে, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফলের পাইকারী ত্রেতারা এখানে আসে আনারস কেনার জন্য, ট্রাক এর প্র ট্রাক ভরে নিয়ে চলে যায় টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া।

যাবার উৎকৃষ্ট সময় আনারসের বাজারেঃ

আষাঢ়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শ্রাবণের শেষ অবধি আনারসের ভরা মৌসুম।

কীভাবে যাবেন এবং থাকবেনঃ (নেট থেকে নেয়া)
ঢাকা থেকে মধুপুর যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। ঢাকার মহাখালি বাস স্টেশন থেকে বিনিময় ও শুভেচ্ছা পরিবহনের বাস যায় মধুপুর। এছাড়া মহাখালী থেকে যেকোনো বাসে চড়ে টাঙ্গাইল সদরে এসে সেখান থেকেও সহজেই মধুপুর আসতে পারেন। মধুপুর সদর থেকে অটো রিকশা ভাড়া করে আসতে হবে জলছত্র বাজার। দিনে দিনেই ঘুরে আসা যায় মধুপুরের আনারসের হাট থেকে। তবে কেউ যদি মধুপুরে রাত্রিযাপন করতে চায় তবে অনেক হোটেল রয়েছে।এছাড়া মধুপুরের কাছাকাছি থাকার ভালো জায়গা ধনবাড়ি নবাব প্যালেস বাংলো।
এছাড়া পূর্বানুমতি নিয়ে বনবিভাগের কোনো বিশ্রামাগারে থাকতে পারলে আপনার ভ্রমণ পরিপূর্ণ হবে। জাতীয় এ উদ্যানের ভেতরে জলই, মহুয়া, বকুল, চুনিয়া কটেজ ছাড়াও দোখলা বন বিশ্রামাগারে রাত যাপন করতে সহকারী বন সংরক্ষক (উত্তর ০১৯১৪৫১৭২৫৬) অথবা টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কার্যালয় (০৯২১-৬৩৫২৪) থেকে অনুমতি নিয়ে বুকিং নিশ্চিত করতে হবে।


অবশেষে সবকথার শেষ কথা ভাল লাগবে ঘুরে আসলে ওখান থেকে।
অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:০৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×