somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৭ দিনে ভারতের ৩ প্রদেশ ভ্রমণ ( দৌড়ের উপরে ট্যুর ) শেষাংশ

১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মথুরা ভ্রমনঃ


আগের পর্বের পরে, যারা আগের পর্ব পড়েননি তারা একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন,৭ দিনে ভারতের ৩ প্রদেশ ভ্রমণ ( দৌড়ের উপরে ট্যুর ) পঞ্চম অংশ
আমাদের হাতে যেহেতু সময় কম তাই আমরা সন্ধ্যা নামতেই রওনা দিলাম স্টেশনে এবং গিয়েই একটা ট্রেন পেলাম তবে আমরা ২ টা স্টেশন পরেই নেমে যাব, যেই জায়গার নাম মথুরা; হিন্দু ধর্মালম্বীদের একটা তীর্থস্থান এখানেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্ম গ্রহন করেন, রাত প্রায় ৮ টা বাজে আমরা যখন মথুরা নামলাম উদ্দেশ্য সেই জায়গাটাতে ভ্রমণ করা, যাক মথুরা স্টেশনে নেমে একটা অটোতে করে সোজা মন্দিরের দিকে গেলাম, গিয়ে দেখি বিশাল এবং হুলুস্থুল কারবার সেখানে, তার মধ্যে ৯ টায় মন্দির বন্ধ হয়ে যাবে, পুলিশ বিডিআর সেনাবাহিনী কোন কিছু আর বাদ দেয়নি ভারত সরকার এই জায়গার নিরাপত্তার জন্য, যাক নিয়ম হচ্ছে, কোন কিছুই ভেতরে নেয়া যাবে না বাইরে অনেক গুলো মাল সামান জমা রাখার কাউন্টার আছে সেখানে সব কিছু রেখে যেতে হবে আমরা তাড়াতাড়ি সেখানে সব কিছু জমা দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম, অনেক বিশাল স্থাপনা এটি শত শত মানুষ এখানে আসে বিভিন্ন বাসনা নিয়ে পুরা মন্দিরটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম কিন্তু কোন প্রকার ছবি তোলা নিষেধ, ভেতরে ও চিপায় চাপায় শুধু পুলিশ আর পুলিশ মানে নিরাপত্তা,


এবার মুল জায়গায় যাবার পালা, যে ঘরটিতে শ্রীকৃষ্ণ জন্ম গ্রহন করেছেন সেই জায়গাটিতে কত বছর পুরোনো সেটা বলতে পারবো না তবে ঘরের ভেতর ঢুকে বোঝা গেল অনেক অনেক পুরোনো এই ঘরটি, যাক মানুষ শুধুমাত্র অনেক দূর দুরান্ত থেকে আসে এই জায়গাটা ভ্রমনের জন্য, আমরা ও দেখে গেলাম। অবাক করা বিষয় হল, ঠিক এই মন্দিরের গা ঘেষেই একটা অনেক পুরোনো এবং বিশাল মসজিদ ! দেখেই বোঝা যাচ্ছে অহু বছরের পুরোনো, ভাবলাম কিভাবে ভারতের মানুষ এটিকে টিকিয়ে রেখেছে এখনো? পরে অবশ্য একজনের কাছে শুনলাম, এখানে প্রায়ই গ্যঞ্জাম বাধে, যাক সেই সাম্প্রদায়িক বিষয়ে গেলাম না, আমরা ট্রাভেলার এটাই আমাদের উদ্দেশ্য।


পুরো মথুরা শহরে এভাবে অনেক গরু দড়ি ছাড়া অবস্থায় ঘোরাঘুরি করে রাস্তা ঘাটে কারো কোন সমস্যা হয় কিনা জানিনা, আমার মনে হয় বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে মানত করে এই সকল গরু রাস্তা ঘাটে ছেড়ে দেয় :) ###৯ টায় মন্দির বন্ধ হলেও লোকজন বের হতে হতে ১০ টা বেজে যায় আমাদের ও রাত ১০ টা বেজে গেল চিন্তায় পড়ে গেলাম এত রাতে দিল্লী কিভাবে যাব? আমার বন্ধু বলে চল এখানে একটা হোটেলে থেকে যাই কাল সকালে চলে যাব, আমি বললাম ওকে তবে চল একবার স্টেশন থেকে ঘুরে আসি, গেলাম গিয়ে কাউন্টারে জিজ্ঞাস করতেই বলে ট্রেন নাই ! কি আর করা আমরা দিল্লীতে এক দাদা আছে তাকে ফোন দিলাম, বলতেই সে বলল অবশ্যই ট্রেন আছে রাত ১১ টায় কলকা মেইল, যাক আমরা কাউন্টারে গিয়ে বললাম কলকা মেইলের টিকিট দিন ২ টা দিল্লী পর্যন্ত দিল, এবার বললাম এখন ট্রেন আসলো কোথথেকে ? যাক কথা না বাড়িয়ে ৪ নম্বর প্লাটফর্মে গিয়ে বসলাম, ২-১ টা ছাড়া সব দোকান পাট বন্ধের পায়তারা চলছে এদিকে খুব ক্ষিদে পেয়েছে বিস্কিট জুস কিনে খাওয়া শুরু করলাম যাক ট্রেন আসল যথা সময়ে ব্যপক লোকাল টাইপ ট্রেন উঠে পড়লাম, এই যে ট্রেন চলা শুরু হইছে রাস্তা যেন আর শেষ হয় না, রাত ১ টা নাগাদ দিল্লী স্টেশনে আসলাম, তারপর হেটে হেটে হোটেলের দিকে চলে গেলাম, হাল্কা পাতলা কিছু খেয়ে দিলাম সেই এক ঘুম, এক ঘুমে সকাল। ১০টায় দাদার সাথে দেখা করে রাত ৮ টার ফ্লাইটের টিকিট নিয়ে নিলাম দিল্লী টু কলকাতা,
অবশ্য সকাল থেকে আমরা বসে থাকি নি, চষে বেড়িয়েছি পুরো দিল্লী,
ঐতিহাসিক দিল্লী মসজিদঃ


রেড ফোর্টঃ


লোটাস টেম্পেলঃ


বিখ্যাত অক্ষরাধাম মন্দিরঃ
ছবিটি অনেক দূর থেকে মন্দিরের বাহির থেকে তোলা, এটি মন্দিরের পানি খাওয়ার জায়গা।


যেটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ হিন্দু মন্দির, যার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে বলা বাহুল্য আমার মনে হয় হোয়াইট হাউসে ঢুকতে গেলে ও এমন চেকিং হয়না, মোবাইল,ক্যমেরা, মানি ব্যগ এবং কোন প্রকার কিছু নিয়েই প্রবেশ নিষেধ, একবার বিরক্ত লেগে উঠল ধুর যাব না ভেতরে চলে যাই, যাক শেষ পর্যন্ত গেলাম ভিতরে ১ ঘন্টা লাইনে থাকার পর, ভেতরে গিয়ে যা দেখলাম তা রীতিমতন চোখ ছানা বড়া, ভেতরে প্রতিটা পরতে পরতে এত সুন্দর কারুকাজ এবং নির্মান শেইলী যেটা তাজমহলকে ও হার মানাবে নিশ্চিত, পুরা মন্দিরটার ভেতরে ছোট বড় অনেক হাতির ভাষ্কর্য দিয়ে ফোয়ারা বানানো, এবং চমৎকার সব অদ্ভুত ফুলের সমাহার, যেটা না দেখলে বিশ্বাস করানো অসম্ভব, মুল মন্দির মাটি থেকে কমপক্ষে ২০ ফিট উপরে যা সিড়ি দিয়ে উঠতে হয়, মন্দিরের ভেতরে গিয়ে তো মাথা নস্ট আমার ধারনা মিনিমাম ১০ তলা বিল্ডিং এর সমান বিভিন্ন মুর্তি যা পুরোটাই খাটি সোনা এবং বিভিন্ন প্রকার দামী রত্ন দিয়ে তৈরী, ভেতরে কমপক্ষে কয়েকশ পুলিশ দিয়ে পাহারা দেয়া আছে, সব ধরনের মুর্তি এখানে আছে, রাম,লক্ষন,সীতা, ইত্যাদি। যাক আমরা বেশ কিছুক্ষন ঘুরে ফিরে মেট্রো তে করে চলে যাচ্ছি দিল্লী গেইট দেখতে,


তারপর একটা ট্যাক্সি নিলাম হোটেল এবং সেখান থেকে এয়ারপোর্ট, গাড়ী থামিয়ে একটু রাস্ট্রপতির বাসভবন টা ও দেখে নিলাম, ;)


তারপর চলে গেলাম কলকাতায়, কলকাতায় এক রাত থেকে পরদিন ঢাকা... অবশেষে অনেক সৃতি নিয়ে ফিরে এলাম আমার সেই সুইট হোমে।
৭ দিনের হিসাব
দিন-১ ঢাকা টু কলকাতা। ( বাস )
দিন-২ কলকাতা টু দিল্লী টু মানালী ( প্লেন + বাস)
দিন-৩ মানালী
দিন-৪ মানালী টু দিল্লী ( বাস )
দিন-৫ দিল্লী টু আগ্রা , মথুরা টু দিল্লী ( ট্রেন )
দিন-৬ দিল্লী টু কলকাতা (প্লেন)
দিন-৭ কলকাতা টু ঢাকা। (বাস)

অনেক ধন্যবাদ মনযোগ দিয়ে সব পর্ব গুলো পড়ার জন্য।
সবার সুবিদার্থে সব পর্ব গুলো এক সাথে করে একটা পোষ্ট দিব।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৯
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×