somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিডিয়া তুমি কার ?( পর্ব -১)

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

||অংশ এক||
মিডিয়া সম্পর্কে একটা আগ্রহ বরাবরই কাজ
করত। বিশেষত সাংবাদিকতা,সংবাদ পাঠ এ
বিষয়গুলোতে কৌতুহল বরাবরই একটু বেশি ।
ছোটবেলায় একুশে টিভির
একেকটা সাংবাদিক ,সংবাদ পাঠক
তো রীতিমত আমার চোখে তারকা !
"আমি সামিয়া জামান/আমি শামসুদ্দিন
হায়দার ডালিম স্বাগত জানাচ্ছি একুশের
সন্ধার সংবাদে ;কি স্টাইলিশ আর বলিষ্ঠ !
মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনতাম। মাঝে মাঝে ওদের
মাঝে নিজেকে বসিয়ে কল্পনা করতাম ।
পরবর্তিতে এডমিশন ও নিয়েছিলাম
গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায়,অবশ্য
পড়া হয়নি।
একুশের পর স্যাটেলাইট
বিপ্লবে তো সাংবাদিকতার বিশাল
ব্যাপ্তি ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায়। প্রিন্ট
সাংবাদিকতা তো ছিলই সাথে হালের
অনলাইন সংবাদ মাধ্যম তো সাংবাদিকতার
চরম ব্যাপকতা দিয়েছে।
অথচ একসময় সাংবাদিকতায়
হাতে গোনা মানুষ ছিল। অর্থনৈতিক
নিরাপত্তাহীনতা,অনিশ্চিত ভবিষ্যত
সঙ্গে থাকা অন্যান্য ঝুঁকি ; সব মিলিয়ে এ
পেশায় অনাগ্রহতা ছিল চোখে পড়ার মত ।
আগের দিনের বাংলা সিনেমার গরীব হিরো/
হিরোইন দের বাবার স্কুল মাষ্টার হবার
সাথে সাংবাদিক হতেও দেখা যেত ব্যাপক।
|২|
এখনও এই সেক্টরের প্রতি সাধ্যমত নজর
রাখি। কত পরিবর্তন। এখন আর অর্থনৈতিক
নিরাপত্তাহীনতা নেই ,সঙ্গে চ্যালেঞ্জ -
রোমাঞ্চ । দলে দলে ঝুঁকছে মানুষ এ পেশায়।
এখন একইসঙ্গে একজন সাংবাদিক
টেলিভিশন চ্যানেলের
জেলা প্রতিনিধি হচ্ছেন,এদিকে জাতীয়
দৈনিকের প্রতিনিধি,স্থানিয় দৈনিকের
সংবাদাতা,ওদিকে অনলাইন পোর্টালেরও
প্রতিনিধি /সংবাদদাতা। কি বিশাল দায়িত্ব !
কত ব্যাপকতা কর্মক্ষেত্রের্। ফলে সংবাদের
ধরন,গুনগত মান,প্রচার/প্রকাশ
ধরন,সাংবাদিকদের মনজগত সব কিছুতেই
পরিবর্তনের লক্ষন চোখে পড়ার মত ।
কেমন ধরনের সে পরিবর্তন সেটা সচেতন
সকলেই অবগত। আমি সেদিকে আর
যাবনা,সংবাদ ও সাংবাদিকতার দৃশ্যমান অল্প
কিছু বিষয়ে হালকা কিছু কথা বলব।
|৩|
আপনি কেমন সাংবাদিকতা করবেন তা এখন
প্রায় পুরোটাই নির্ভর করে আপনার মালিক
গোষ্ঠি কেমন সংবাদ চান ,তাদের
নীতি,অল্পবিস্তর বা লক্ষনীয় রাজনৈতিক
অবস্থান ,সাধারনের জন্য
কোনটি সহজপাচ্য ,সাধারনের আগ্রহ -এ
ধরনের আরও কিছু ফ্যাক্টর্। অর্থাত নিজের
অবস্থান সাংবাদিকতার শুরুতেই একটি রুলস
এর মাঝে গন্ডিবদ্ধ করে ফেললেন।
এই চাওয়ার ওপর ই সংবাদের ধরনের ব্যাপক
পরিবর্তন হতে পারে। আপনি আপনার
মালিকগোষ্ঠির স্বার্থহানীকর কিছুই
করতে পারবেন না,তাদের স্বার্থরক্ষার জন্য
সদা সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
ধরুন দু দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হল ।
সচারাচর বিভিন্ন কারনে গ্রামবাসীদের মধ্য
এই বিবাদ
লাগতে পারে,এটা হতে পারে জমিজমা নিয়ে
বিরোধে আবার অন্য গ্রামের
একটি স্কুলফেরত
মেয়েকে চোখটিপি দেওয়া নিয়েও। এখন প্রশ্ন
হচ্ছে মিডিয়া এ বিষয়ে বিভিন্ন রকমের
নিউজ তৈরী করতে পারে সেটা একটু দেখি।
চাইলেই রাজনৈতিক রূপ দিয়ে দিতে পারেন
"অমুক দলের সমর্থকের উপর তমুক দলের
সমর্থকদের ভয়াবহ
হামলা ,গ্রামজুড়ে তান্ডবলীলা ,অর্ধশত
বাড়িঘড় ভাংচুর ,আগুন " - এখানে 'অমুক 'ও
'তমুক ' দল আপনার মিডিয়ার
মালিকগোষ্ঠির অবস্থান
অনুযায়ি পরিবর্তনের অনেক সুযোগ আছে।
আপনি 'অমুক ' দলের সমর্থনে নিউজ
বানাতে চান তাহলে সেই দলের আহত
ব্যাক্তিদের ছবি,বাড়িঘর এ
ক্যামেরা চালান,সেই দলের সমর্থক দের
কথা রেকর্ড করুন,ওটার সত্যতা সার্টিফাই
করার জন্য ক্যামেরার সামনে দু একজন
নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষদর্শির (খুব ভাল হয়
বৃদ্ধ /বয়স্ক )মতামত নিন ।
প্রয়োজনে আগে বুঝিয়ে বলুন
উনাকে কি বিষয়ে কিভাবে কতটুকু বলতে হবে।
আর 'তমুক ' দলের স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট
হলে ভাইস ভার্সা । আবার এটাকে "তুচ্ছ
ব্যাপার নিয়ে দু দল গ্রামবাসীর মধ্য ব্যাপক
সংঘর্ষ " এভাবেও প্রকাশ হতে পারে।
আবার ধরেন কোন গ্রাম্য বধু স্বামী কতৃক
নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন এবং শেষতক
বাবার বাড়িতে এসে অবস্থান করছেন ;
আপনি সে সংবাদ সংগ্রহে গেলেন। গ্রামের
মেয়েরা একটু লাজুক হয়,নির্যাতনে উনার
ভেতরে কষ্ট চরমে আছে,কিন্তু হয়ত
দেখা যাচ্ছে চলমান ক্যামেরার
সামনে তিনি লাজুক হাসি দিচ্ছেন। স্বামীর
নির্যাতনের স্বীকার গৃহবধুর যে মুখটি দর্শক
কল্পনা করতে চায় সেটা হচ্ছেনা,আপনার
টার্গেট উনাকে যত সম্ভব
দু:ক্ষি দেখিয়ে অন দ্য রেকর্ডে এনে দর্শকের
মনে গেঁথে থাকা গ্রামারের
সাথে মিলিয়ে দেওয়া যায়।
আবার "দর্শক চাওয়া"র প্রতি নজর
রাখতে গিয়ে মালিকগোষ্ঠি র একটা অলিখিত
নিয়মে একজন সাংবাদিকের
"বিনা দোষে চিকিতসককে উশৃঙ্খল রোগীর
আত্নীয় কতৃক প্রহার " শিরোনামের
চেয়ে "ভুল চিকিতসায় রোগীর মৃত্যু /
অবস্থার অবনতি;বেধড়ক গনপিটুনি খেল
ডাক্তার " -শিরোনামের খবর
করে দর্শকশ্রেনীর
বাহবা কুড়ানো বেশি সহজ। এথিক্স
মোরালিটি ডাজন্ট ম্যাটার্। সংবাদও
আজকাল পন্য /খাবার । বেচাবিক্রি ভাল
বলে কথা । স্বাস্থসম্মত কিনা সে হিসেব
চুলোয় যাক।আর আমরা ঝাল
মশলা ভাজাপোড়া মুখরোচক একটু বেশিই
পছন্দ করি কিনা ?
চলবে ....
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×