তোমাদের বাড়ির আরো আগের ছাতিম গাছটি আমি চিনি। তার নিচে বসে নেশার বাকল খেয়ে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ হারিয়ে যায়। যেদিন ছাতিমের নেশায় পথ ভুলে তোমাদের বাড়িতে যাই, এক গ্লাস জল এগিয়ে দিলে। স্বচ্ছ সে জলে যা দেখেছি, তার চাইতে প্রবল স্পর্শ আর কোন কিছুতে নেই। একটি পাখি ডাকতে ডাকতে উঠোনের উপর দিয়ে উড়ে যায়। অবাক হয়ে দেখলাম এর চাইতে তীক্ষ্ণ কিছু আর হতে পারে না। পাখির পিছু পিছু যাই।
পাখিদের ভবিষ্যত অদ্ভুত গানে মোড়ানো থাকে। ওরা গান না গাইলে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দেয়। পাখিদের সমাজে গানই সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম। অন্তত তিনটি পাখি এ কথা আমাকে বলেছে। তাদের কথা বিশ্বাস না করলে আত্মহত্যার হুমকী দেয়। গভীর অপমানবোধ ভর করে ওদের ডানায়। ডানা ভেঙে গেলে তাই কোন পাখি উড়তে পারে না। বিস্ময় জমে চোখের কোণে!
এর আগে সর্বশেষ বিস্মিত হই এক বিষ বিক্রেতার মেয়েকে দেখে। প্রতিদিন বাবার দোকানের বিষের বোতলগুলো নিজ হাতে সাজিয়ে রাখে। অথচ কোনদিন একটু খেয়ে দেখার ইচ্ছে হয়নি তার। হতে পারে মেয়েটির একটি ফুলের বাগান আছে, তারপরও এমন নির্বিষ মেয়ের গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি। তার সাথে ফুলের বাগানে যাইনি। দেখা হয়নি সে কী ফুলের চাষ করতো। দেখা হয়নি তার চাষাবাদ।
প্রচলিত আছে চাষী মাত্রই বিশ্বস্ত। অবিশ্বস্ত মানুষের চাষাবাদ জ্ঞান কম। এসব মানুষ জমি দেখলে ভয়ে চিৎকার করে উঠে। একদিন এক চাষীর চিৎকার শুনে আমার পুরোনো ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম পুরোনো হয়ে গেলে মায়া কমে যায়। অথচ ঘুম ভেঙে যা দেখেছি, তার চেয়ে বিরল মায়াচিত্র কখনো কোন শিল্পী আঁকেনি। সে আঁচড় এখনো আমার ঠোটে লেগে আছে। আমায় বিশ্বাস করো।
এই তপ্ত ঠোট অবিশ্বাস করো না। তুমিতো জানোই পাখিদের সমাজ দেখে এসেছি; বিশ্বাস না করলে তোমার সামনে হয়ে যাবে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম আত্মহত্যা!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:১১