somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কারা আমাদের ডাকাত এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী বানাচ্ছে।।

২৯ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হ্যাঁ, আমাদের নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করেই আজকের এই লেখা।। গ্রামের সহজ মানুষদের কাছে ডাকাত আর শহরের শিক্ষিত মানুষদের কাছে সন্ত্রাসী শীর্ষসন্ত্রাসী।। কারা এরা?? এরা কি এই খেতাব নিয়েই জন্ম নিয়েছিলো?? না নেয় নি।। কেউ ছাপোষা কেরানীর,কেউ কৃষকের,কেউ বা উচ্চ শিক্ষার জন্য শহরে আগমন।। সবার গায়েই সহজ-সরল তকমা আটা।। কিন্তু পরিবেশ এবং পরিস্থিতির কারনে সেই তকমা বদলে যেয়ে নূতন তকমা এটে যায় কারো কারো নামের পাশে।।
একটি ছেলে,বুকভরা সাহস আর উদ্দামতা।। সারাদিন মাতিয়ে রাখে বন্ধুদের।। হঠাৎ করেই কোন উক্তেজনা,রোমাঞ্চ আর উদ্দামতার ফলে ভুল করে চলে গেলো বিপথে।। নজরে এলো এলাকার রাজনৈতিক নেতা, কমিশনার,এমপির নজরে।। ছোটখাটো অন্যায় থেকে পুলিশের হাত থেকে মুক্ত করলো কেউ না কেউ।।পিঠে হাত রেখে জানালো তোমার মতই ছেলেরাইতো দেশের রত্ন।।দেশের ঊন্নতির সোপান তোমরাই।। ইত্যাদি ইত্যাদি।।স্বভাবতই এরপর তারই “একান্ত বাধ্যগত দাস”।। শুরু হলো সেই ছেলেটির ভিন্ন পথে চলা।।
ছোটখাটো কাজ মানে কাউকে হুমকি দেয়া,মারপিট করা থেকে শুরু।।বড়ভাইয়ের হাত পিঠে থাকা মানেই অনেক কিছু।। লোকজনও বুঝতে শুরু করলো।।এরপর নিজের গরজেই জোগার হলো চাকু বা ড্যাগার(আজকাল শুরুই হয় গান দিয়ে)।। দেখানো শুরু মহল্লার মুদি ব্যাচারা থেকে।।সিগারেট নিয়ে পয়সা দেয়ার বদলে কোমড় চুলকানো।। ব্যাচারার আর সাহস থাকে না পয়সা বা টাকা চাওয়ার।।হোটেলেও একই অবস্থা।। সবাই জেনে যায়,এছেলে দুর্দান্তৃ,ব্যাকিংও আছে।।সুতরাং শুরু হলো সেই আনন্দময় জীবন থেকে থেকে ভিন্ন পথে চলা।। দোকানদার থেকে এলাকার কন্ট্রাক্টরদের কাছ থেকে নেয়া শুরু নিয়মিত বখরা।। এরই মাঝে মাঝে বড়ভাই বা নেতার কথানুযায়ী “ছোটখাটো” কাজ করা।।মিটিং,মিছিলে যোগ দেয়া।। ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমিয়ে রাখা।। ফলশ্রুতিতে থানায় নিয়মিত ব্যার্থ অভিযোগ দায়ের।।কিন্তু কিছু হয় না,কারন……।।
তারপর শুরু হয় আসল মিশন।। পথের কাঁটা দুর করতে ডাকা হয়।।আশ্বাস দেয়া হয় কিছু হবে না বলে।।আসলেও হয় না দেখে সে এগিয়ে যায় এবং সমাধানও করে সব বিপত্তির।। হয়ও না কিছুই।।কেস হলেও “সাক্ষী এবং প্রমানের” অভাবে ছাড়া পেয়ে যায়।। মাঝখান থেকে জেলে দেখা হওয়া অন্যান্ন সন্ত্রাসীদের সাথে মনের মিল হয়ে যাওয়ায় ক্ষেত্রবিস্তৃত হয়।।এখন তার বন্ধু এলাকার বাহিরের সন্ত্রাসীরাও।। যাতায়াের সুবাদের ধীরে ধীরে প্রভাবের বলয় বৃদ্ধি পায়।। আর সাথেতো রক্ষাকবচের ন্যায় “রাজনৈতিক পরিচিতি”তো আছেই।।
পড়ালেখা না করলেও ভার্সিটি নামক সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ঠাই হয়ে যায় ক্রমোন্নতিতে।। আর করলেতো কথাই নেই।।নাম ছড়িয়ে পড়ে।। পড়ে পুলিশের খাতায়ও।।কিন্তু সেদিকে নজর দেয়ার সময় আর থাকে না।।
গ্রামের অশিক্ষিত বাবার কাছে পত্র লেখা হয়,আব্বা আমার পড়ালেখা ভালই চলছে।। একটা বিশেষ কোর্সের জন্য বাড়তি কিছু টাকা দরকার,পাঠাবেন।। ব্যাচারা বাপ উপোষে থেকে,অন্যান্ন সন্তানদের বঞ্চিত করে যোগ্যছেলের জন্য পাঠিয়ে দেন। তার পক্ষে জানা সম্ভব হয় না,তার রক্ত পানি করা অর্থ ছেলে কোন নেশার কবলে ব্যায় করছে।।
ধীরে ধীরে ছেলেটিরও চাহিদা কমছে দেখে পিতা-মাতাও খুশী।।কারন তারা জানেন না তাদের সেই আলাভোলা ছেলেটি এখন দুর্দান্ত চাঁদাবাজ।। জানে সেদিনই,যেদিন সেই ছেলের লাশ পুলিশ প্রহরায় গ্রামের বাড়িতে পৌছে।।তখন পিতা চোখে অশ্রুর বদলে রক্ত ঝড়ে।। মাতা মুর্ছা যায় বারবার।।
শুধু গ্রামেরই নয় একই দৃশ্য দেখা যায় শহরের উচ্চ শিক্ষিত ছেলেদের বেলায়ও।। এখানে তাদের দলীয় আদর্শের মনত্রপূত জল দিয়ে গোছল করানো হয়।। বাকী সেই পূনরাবৃত্তি।। এরা আদর্শের জন্য খুন করে,জেল খাটে আবার বেকায়দায় বা দলীয় কোন্দলের ফাকে পরে নিজেরাই খুন হয় হয়ে যায়।। ক্ষেত্রবিশেষে বিরোধীদের হােই শুধু নয় নিজ প্রিয় বন্ধুদের হাতেই।।
উদাহরন দিতে গেলে যত নাম আসবে তা এই ব্লগ স্থান দিতে পারবে না।। তাই বাহুল্যবোধে দিলামও না।।তবে যারা এব্যাপারে সামান্যতম জ্ঞ্যান রাখেন তারাই বুঝতে পারবেন এর ব্যাপকতা।। আমাদের সমাজে এখন টা মহামারীর রূপ নিয়েছে।।কোরামিন দিয়ে শুধু সমাজটা টিকে আছে।।কিন্তু কয়দিন এভাবে চলবে।। খোদ আমেরিকা যখন ১৫০/২০০ বছরে অস্ত্রের আইনের বদলে আজ পৃথিবীর অন্যতম সভ্য এবং সুপার পাওয়ারে উন্নিত হতে পেরেছে,শুধু একটি কারনেই নীতি এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধায়।।সেখানে আমাদের বাংলার সভ্যতার প্রাচুর্যে গড়া এই দেশটির কান্না কি কখনো শেষ হবে না??ওরা সারাটা পৃথিবীতে যুদ্ধ বাধিয়ে রাখছে বা যাই করছে না কেন সব কিছু নিজেদের ভবিষ্যতকে,পরবর্তি জেনারেশনকে নিরাপদ রাখার জন্য।। শুধু আমেরিকা কেন,চখ মেললে দেখবো পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই তাই করছে।। সেখানে আমরাই শুধু আমাদের সোনার ছেলেদের,ভবিষ্যত উজ্জল নেতৃত্বদের ঠেলে দিচ্ছি অন্ধকারের বুকে।। নজরুলের ভাষায়,বন্ধু বড় বিষজ্বালা এই বুকে।।
আমার আবোল-তাবোল লেখাই মনে করবেন পাঠকরা এই আশাতেই যদি কেউ বুঝে ফিরে যেতে পারেন সুস্থ,সামাজিক জীবনে।।
জানি এটা সম্ভব না তবু একজনও যদি পারেন তাহলেই আমার এই লেখা,অভিজ্ঞতা স্বার্থক বলে মনে করবো।।
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×