আমরা বাঙ্গালী জাতি বরাবরই এই মনোভাবের।। কেউ এর উল্টোপথে হাটলেই তাকে ভিন্ন খেতাব দেই।। কিন্তু আসলে আমরা…তাই।।কিছু বলার কিন্তু মাধ্যম নেই।। আছে এই একটি স্থান।। তাই বলে যাচ্ছি মনের কথা।।
স্ত্রী,বউরা(ভাইদের),ছেলেরা এতো বড় হয় নি বলে।।বয়কাট আর বাবরী চুল ঘুড়িয়ে জানতে চায়,কেমন হয়েছে?? ঢোক গিলে বলি,না না ভালই লাগছে।।বলতে পারি না,তোমরা আগেই ছিলে অকৃত্তিম।।অর্থাৎ ঘরে অশান্তি চাইনা।।
মেয়েগুলি পারসোনা থেকে পুরোই বদলে এসে আহ্লাদিসুরে যখন বলে, বলে আব্বু,মামা, অথবা চাচাবাবা আমাকে কেমন লাগছে?? ঢোক গিলে বলি বাহ্ সুন্দরই তো লাগছে।।কিন্তু মুখফুটে বলতে পারি না ,তোকে আগেই অপরূপা লাগতো।।
বোনরা তাদের স্বামীর আত্মীয়-আত্মীয়াদের সাথে শত অন্যায় করেও যখন জানতে চায় তখনো বলি, না তুইই ঠিক করেছিস।।যেটা ভাই-বউদের বলতে পারি না।। তাহলে যে,উনারা লাই পেয়ে আমাদের চেয়ে নিজ নিজ ভাই-বোনদের প্রশ্রয় দেয়া শুরু করবে।।
বন্ধুরা আকাম-কুকাম করে যখন বলে কেন এই কাজ করেছে??তখনো দেতো হেসে বলি-না তোরাই ঠিক *সেই পূর্বের মত*।।
ব্লগেও দেখি অনেককে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে, সেই দিন কি আর আছে!! না নেই।। এটা আমিও জানি।।মানিও সে রকম লেখা নেই বলে।। তখন দলীয় মনোভাবে লেখা হলেও,নিস্তার হতো না।। নেই সেই বক্তব্য আর মন্তব্য নিয়ে তুমুল সেই তর্ক-বিতর্ক।। নেই সেই যুক্তিতর্ক।।অনেককে দেখেছি এতে হেরে পলায়নী মনোভাবে।।কিন্তু দেখি নি অ্রশ্রাব্য গালিগালাজে ব্লগে নিজ মতামত ব্যক্ত করতে।।যা আজ মুক্তমনের বহিঃপ্রকাশে দেখতে হচ্ছে।। এই তথাকথিত মুক্তমনটা কাদের?? শুধু ধর্মর বিরুদ্ধে মতামত প্রকাশ করা আর নির্বিচারে গালি-গালাজ করা?? ভিন্ন মতাবলম্বিদের শ্রদ্ধা না করা?? শুধু হারিয়ে গেছে সেই উদাত্ব ভাবনাটা।। যা নিজ মনোভাবের সাথেও সন্মান করতো অন্যভাবনাও।। এমন কি পলায়নী মনোভাবেও।।যুক্তি-তর্কে হেরে গেলেও থাকতো না,তাদের ছোট করার মনোভাব।।আর আজ!!আরও আজ দেখি একজনের মনোভাবেরই প্রতিফলন অন্যদের মন্তব্যেও।। কি ভেবে নেবো??
সেই বিজ্ঞানীদের মত, আমাদের পূর্বপুরুষ রা আমাদের চেয়ে জ্ঞ্যানী।। যদিও আমরা আজ বুঝতে শিখেছি সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রতিবাদ না করা
আবার অধুনা ভার্চুয়াল জগতের লেখায় বলতে বাধ্য হই,আপনি যা লিখেছেন তাই শত ভাগ সঠিক।।
কিন্তু মন এসব বলে না।। বলি আমি।। আমাকেই একটা প্রতিষ্ঠায় স্থির রাখতে।। তা না হলে যে আমার জনপ্রিয়তা কমে যাবে।। এর জন্যই আমরা ভার্চুয়াল জগৎ থেকে ব্যাক্তিজীবনেও কম্প্রোমাইজিং টেনডেন্সী মেনে চলছি।। যেন সাপও মরে আবার লাঠিও না ভাংঙ্গে।।
কিন্তু আমরা কখনো ভাবি না যে,এই পরিস্থিতিতে আমরাও পড়তে পারি সেই কালের চক্রে!! প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে একটি কথা আছে না!!
আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি বর্তমানেই এই “কর্মফলের” লেন-দেন শোধার কথা।। কেয়ামত কবে হবে আমি জনি না।। কিন্তু কিছু কিছু কর্মফল আমরা এই পৃথিবীতেই পেয়ে থাকি।। কেউ বুঝি কেউ না।।
আমার কথায়ই আসি।। জীবনে আব্বা-মাকে কম ব্যাথা আর কষ্ট দেই নি।। আব্বা চুলা জ্বালানোর লাকড়ি দিয়ে পিটিয়ে মনের ঝাল মিটালেও মা সেখানে ছিলো নিস্তরঙ্গ নদী।।কারন প্রতিবাদে লাভ হতো না বলে।।পুরো শরীরে কালশীটে দাগ নিয়েও11 পরদিন আমি যে কে সেই।। আব্বা-মা নীরবে কাঁদতো।।সেই আমি আজ পথের পথিক।।আমি কাঁদি আর সন্তানরা হাসে।।সেই দিনটিই ফিরে এসেছে কিন্তু ভিন্নরূপে।। ভিন্নচিত্রে।। কিন্তু এই অনুভতিটা সেদিন কেন এলো না ভেবে আজ যেমন নিজেকেই চাবকাতে ইচ্ছে করছে,সেদিন কেন হয় নি??
বড়ই বিচিত্র এই জীবন।। বয়সের সাথে বদলে যায় সবকিছু।। ধারনা,মন-মানসিকতা।। নিজেকে দিয়ে আর স্ত্রী-সন্তানদের দিয়ে বুঝছি আর সমাজকে নিয়ে।।কিন্তু প্রশ্ন কখন?? শেষবেলায়।।যখন কারো কর্ম বা মনোভাবের মূল্য থাকে না।। কারন নতূন জীবনের ধারাই এটা,পুরানোকে অস্বীকার করা।। যা আমিও করেছি।।আজ আমার উত্তরপুরুষরাও করবে,বিচিত্র নেই কিছু।।
মা সেদিন মৌন থাকতো।। বুঝতাম না।। ভাবতাম মা টা বোকা।। আজ সন্তানদের সাথে লুকোচুরি খেলতে যেয়ে উপলব্ধি করলাম সেই বোকা মা ই আমাকে বুদ্ধিবৃত্তির খেলায় হারিয়ে আমাকে বিজয়ীরূপে দেখতে চেয়েছে।।আর আমি কি না………………!!
তেমনি ভাবে হেরেও জিতেছিলাম সিগারেট খাওয়া নিয়ে।।আজ পিছু ফিরে তাকিয়ে দেখি মা-ই সেদিন আমাকে জিতিয়ে প্রকারান্তরে নিজেই জিতে গিয়েছিলেন।। মাঝখানে আমি বেকুবের মত ঢোলে শুধুই চাপড় মেরেছি।। আজ যেরকম আমার সন্তানও ভাবছে।।
এবার আমি একটু বলি।। এ হারায় লজ্জা নেই।। হারছিতো প্রকারান্তরে নিজ রক্ত মানেই নিজের কাছেই তো?? সুতরাং?? উড়িয়ে দাও সবকিছু সেই প্রথম যৌবনের মতই।। কোন বাধা না মেনে।।চলতে থাকুক সময়। নিজ পথে।। কেনই বা প্রতিবন্ধক হওয়া?? হবো না।।যেমন মানতে চাইতাম না,বিধি-নিষেধ,তেমনি অর্গলে বাধতে চাইও না কাউকে।। হোক না সে আমার সন্তান বা বন্ধু।।
কতই তো ঠকছি জীবনে।। ব্যাক্তিগত থেকে অধুনা ভার্চুয়াল জগতে।। সেখানে নিজ রক্তের কাছেই না হয় আবার ঠকলাম।। কি ক্ষতি?? না ক্ষতি নেই।। এখানে আছে শুধু মনখোলা হাসি।। অনাবিল।।যা আমার মা ও হেসেছিলো কোন একদিন।। সন্তানের আনন্দ আর হাসি দেখার জন্য।।
সেদিন না বুঝলেও আজ……..।।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:৫১