somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবিতা তোমার জন্য অপেক্ষায় আছে এক হাস্যেজ্জ্বল বালিকাসকাল

০৮ ই জুন, ২০১২ রাত ৯:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবিতা
আমরা সেদিন প্লাটফর্মের পাশে বসেছিলাম
গাছের চারদিকে শানবাঁধানো গোলমত চত্ত্বরে
আমাদের সামনে ঘন অন্ধকার,আমাদের মুখে কোন শব্দ ছিলোনা
আঙুলের ফাকে জ্বলা সিগারেট জ্বলে জ্বলে ত্বক স্পর্শ না করলে
বুঝতেই পারতাম না পৃথিবীতে কোন আলো আছে
পৃথিবীতে কোন আগুণ আছে

সবকিছু কেমন শীতল নিরোত্তাপ যেন হীমশৈলের চূড়া
শত চিৎকারেও জ্বলেনা এক ফুলকি আগুন
কবিতা!
আমাদের আশ্রয়ের গোলচত্ত্বর ক্রমাগত
দূর থেকে দূরে চলে যায়
অভিমান বলো
ক্ষোভ বলো
ক্রোধ বলো
বলতে পারো

আগুন জ্বালাবে বলে
আলো জ্বালাবে বলে যারা একদিন
সতীদাহ অঙ্গারে জ্বলজ্বল করে জ্বলতো
তারা এখন মানিয়ে চলা রপ্ত করায় ব্যস্ত
তাদের নর্তন কোর্দন দেখো
মানুষের সবস্ব লুটে নিয়ে যারা বানায়
জীবন্ত মানুষের নগ্নমূর্তীর পিরামিড
তাদের পেছনে
যারা পৃথিবীকে নিরাপদে ভক্ষণ করছে
সেই ফেরিওয়ালার সুরে তারা শোনায় মিউ মিউ গান
তারা আজ ভালোবাসে চার ইঞ্চি পেশির কোন্দল

কবিতা!
আমরা একদিন সমবেত হয়েছিলাম
মানুষের অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের দাবিতে
মনে পড়ে সেদিনের কথা-
মানবতার রাজপথে আমরা সেদিন
জ্বলন্ত অঙ্গার
মানবতার রাজপথে আমরা সেদিন
উথলে উঠা অগ্নিগিরির লাভা
ঝড় উঠেছিলো ছিলো বজ্রসহ বৃষ্টি
পৃথিবীর সীমানা মৃছে দিয়েছিলাম এক ফুৎকারে
হাতের তালুতে লৃফে নিয়েছিলাম স্বপ্নের রঙে সাজাবো বলে
সেদিন মনে হয়েছিলো আমাদের আশাবাধী হতে বাধা নেই

কিন্ত্ত আজ
আমাদের কুলাঙ্গার স্বপ্নদ্রষ্টারা বড় হতাস হয়ে হামলে পড়েছে
সামলে নেয়নি লোভের লালচ
লুটেরাসুখে তাদের চোখ বন্ধ হয়ে আসে

কবিতা!
আমাদের কাছে ফেরিওয়ালা ঈগল আসে প্রভুর বেশে
আসে নতুন সাম্রাজ্যবাদী বুলবুলি
আমাদের দাঁড়কাক কা কা রবে জানায় স্বাগত
ফাঙ্গাস পাড়ার বধূদের, মেয়েদের মসলা ফুড়িয়ে আসে সাজনকৌটার
বারবার চেয়ে দেখে
আটসাট ব্লাউজের ভেতর কতটুকু চোখা হলো স্তন

বাদামী রঙের মাদী খরঘোশ কেঁদেকেটে পড়ে শোনায় তার অভিযোগের চিঠি
চাটুকার বিড়ালের দল চুক চুক করে
ওরা অপেক্ষায় থাকে কখন ঝোপ বুঝে কোপ মারা যাবে

কবিতা
সত্য বলতে পারিনা
সত্য বলার সময় এখন নয়
সত্য বলবে গুম হয়ে যাবে
সত্য বলার সময় এখন নয়
সত্য বলবে পদ্মায় ভেসে উঠবে তোমার বেওয়ারিশ লাশ
সত্য বলবে তোমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না
সত্য বলবে তুমি ফিরে আসবেনা তোমার স্বজনদের কাছে
তারা তোমার জন্য একটা কন্টকময় অপেক্ষায় জীবন কাটাবে
সত্য বলবে তুমি হবে লাপাত্তা ড্রাইভার ফারুক

কবিতা
আমরা আমাদের কালে যখন এক স্বচ্ছ সময় এসেছিলো
এক বিএম ডব্লিউ সময় যখন রাস্তায় টোকাইরা বিএম ডব্লিউ গাড়ি কুড়িয়ে পেত
তখন দেখেছিলাম জাতির মোড়লদের দগদগে গোপন ক্ষত
সেদিন হতাশ হতে হতে আরেকবার জেগে উঠেছিলাম
ভেবেছিলাম এভাবেই তাদের পতনের পর আমাদের সময় আসবে
মনে পড়ে সেদিনের কথা ?
সে এক অপূর্ব সময় ছিলো
মনে পড়ে সেদিনের কথা?
সেদিনগুলো ছিলো আমাদের সময়ের শ্রেষ্ঠ সময়

আমারা স্বপ্ন দেখেছিলাম
কবিতা
আমরা সময়কে বয়ে যেতে দিলাম
দেখি সব শেয়ালের এক রা'
তারপর স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে
আমরা কবিতা আবৃত্তি করলুম-
`রোদ ছিলো না
বৃষ্টিও ছিলো না
ছিলো মেঘ
সারাটিদিন
প্রতীক্ষায় ছিলাম আমরা
ভাঙলো বৃক্ষ
উড়লো ধূলো
প্রতীক্ষিত মানুষ
দেখলুম মূলো!

কবিতা!
স্বপ্ন দেখি স্বপ্ন ভাঙ্গে
স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যায়
উষর বালির মত ঝরে যেতে থাকে আঙুলের ফাঁকে
যারা জ্বলে উঠার কথা তারা
অন্ধকার নিভৃত প্রকোষ্ঠে নিভৃতে ঝিমায়

এভাবে আর কতদিন কবিতা?
এভাবে আর কতদিন গলায় আটকে যাওয়া ক্যাকটাস সময়?
বলতে পারো?

ভাবছো আমিও ঝরাপাতার গান শোনাচ্ছি তোমায়?
ভুল বুঝোনা কবিতা
আমি আমার আস্থার ভেতর পেরেক ঠুকেছি
আমার আস্থা আসমান থেকে জমিন
পূর্ব থেকে পশ্চিম
উত্তর থেকে দক্ষিণ
ঈষাণ থেকে নীঋতে প্রোথিত
আমি জানি
মরে যাব বলে আমরা গোরস্থানে গিয়ে রাত কাটাই না
মরে যাব বলে শ্মশানে চিতা সাজাইনা
জ্বল জ্বলে ন্ক্ষত্রের মতই উজ্জ্বল আমার প্রত্যাশা
সকল দাসত্বের খোলস ছেড়ে আমরা একদিন বেরিয়ে আসতে পারব
ওদের শেষ থেকে শুরু হবে আমাদের

কবিতা
আজকে চারদিকে তান্ডবের ভয়ে যারা
তাদের প্রিয় শব্দটি উচ্চারণের হিম্মত দেখাতে পারেনা
তারা একদিন সেই প্রিয় শব্দটি উচ্চারণ করবে
সমস্ত প্রাণের সুর ঢেলে
নিপ্পন সাগর থেকে সেই সুর ছড়িয়ে যাবে ক্রেমলিন
মঙ্গোলিয়া থেকে ওশেনিয়া
গ্রিনীচ মান মন্দির পেরিয়ে সেই সুর ছড়িয়ে যাবে
প্রভূদের দেশে
নষ্টা ঈশ্বর ঈশ্বরীর উত্তাল সঙ্গমসময়ে
আমরা অতর্কিত স্লোগানে ঘোষণা দেব 'বিপ্লব'
আজকে যারা রাষ্ট্রদ্রোহীতার ভয়ে ভীত
যারা সত্য বলতে পারেনা পান্ডাদের ভয়ে গুন্ডাদের ভয়ে
তাদের দুঃসাহসী জিভ আমরা সেদিন কুকুর দিয়ে খাওয়াবো
তাদের দুঃসাহসী সাহসের গালে চপাট মেরে
আমরা মানুষের মূল্যবোধ শেখাবো

কবিতা
তখন আমাদের শুরু হবে কেবল ভালোবাসাবাসি খেলা
আমরা প্রেমের লড়াকু সৈনিক
আমরা মানবতার লড়াকু সৈনিক
আমরা সত্যের লড়াকু সৈনিক
তুমি শুনে রাখো
আমার আস্থা সূর্য থেকে গভীর সমূদ্রে প্রোথিত
তোমার জন্য সেদিন প্রেমের ডালা হাতে অপেক্ষা করবে
এক হাস্যজ্জ্বল বালিকাসকাল।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১:৫৩
১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×