somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওয়েব ডেভলাপিংয়ে কিছু অস্বস্তিকর বিষয়

১২ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আসসালামু আলাইকুম, আশা করছি সামু পরিবারের সবাই ভাল আছেন। আজকের আরটিকোলে ওয়েব ডেভলাপারদের কিছু অস্বস্তিকর পরিস্তিতিতে সম্মুখীন হওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি। মূলত আমি নিজেই এই পরিস্তিতগুলোর সম্মুখীন হয়েছি এবং সেগুলো আমার সামু পরিবারের ভাইদের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি। ওয়েব ডেভলাপিংয়ে দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় এই বিষয়গুলোর সম্মুখীন হতে হয়েছে বার বার। দেশী বিদেশী বায়ার প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই ঘটনাগুলোর সম্মুখীন হতে হয়েছে।

১। ওয়েবসাইটের মূল বিষয় সম্পর্কে ধারনা না দিয়ে ওয়েবসাইট ডেভলাপ করানো।
অনেক বিদেশী বায়ারদের কাছে এমন পরিস্তিতির সম্মুখীন হয়েছি। ডেভলাপার হিসেবে আমার কাজ হয়ত ওয়েবসাইট ডেভলাপ করে দেয়া। কিন্তু কিছু দিন পর যখন দেখা যায় সেই সাইটির নীস মূলত এডাল্ট ক্যাটাগরীর। তখন ডেভলাপার হিসেবে বিব্রত হতে হয়। ডেভলাপারকে আগে বলা হল একটি সাধারণ ভিডিও শেয়ারিং সাইট ব্লগের মতো করে ডেভলাপ করা হবে। পরে দেখা গেল ডেভলাপরের সেই থীমটি ব্যবহার করা হচ্ছে এডাল্ট ওয়েবসাইটে তখন কি করার থাকে? অনেকে হয়ত জানেন না, ডেভলাপার চাইলেই বুঝতে পারে তার ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটি কোন সাইটে কি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ডেভলাপার হিসেবে আমার জানার অধিকার থাকে যে আমার সৃষ্টি করা একটি থীম কোন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। না কি?

২। সেইম ধরনের সাইট ভিন্ন ভিন্ন প্রাইস হওয়ার কারনে
আমাকে একটা ওয়েবসাইট ডেভলাপ করতে দেয়া হল। আমি হয়ত সাইটটি পিএইচপি দিয়ে ল্যারাবেল ফ্রেইমওয়ার্কে কাজটি করে দিলাম। প্রায় একই রকম একটি সাইট ওয়াডপ্রেসেও ডেভলাপ করা সম্ভব। দামও ওয়ার্ডপ্রেসে কম। বায়ার যখন জানল সেই সাইটটি ডেভলাপ করতে খরচ কম হয়েছে তখন আমাকে ভাবতে শুরু করবে আমি অতিরিক্ত দাম নিয়েছি। একটা নিউজের থীম ওয়ার্ডপ্রেসে ডেভলাপ করে দিতে হয়ত ৩ থেকে ৭ হাজার টাকা আসবে। আবার কাষ্টম পিএইচপি দিয়ে করতে গেলে ১৮ - ৮০ হাজার টাকাও খরচ আসতে পারে। যে জিনিসটার দাম বেশী সেটার কুয়ালিটি অবশ্যই বেশী হবে এই জিনিসটা অনেক সময় বায়ার বুঝেন না এবং পরবর্তীতে ডেভলাপরকে ভুল বুঝেন।

৩। ডেভলাপারদের পরামর্শ বুঝতে না চাওয়া

অনেক বায়ার আছেন যারা ডেভলাপারদের পরামর্শ বুঝতে চান না। মাইক্রোফ্রিেলন্সার/ ফাইবার/ ফ্রিলেন্সার ইত্যাদি কোম্পানীগুলো তার সাপোর্ট সেন্টারে ২০-৩০ জনের একটি টিম তৈরি করে রেখেছে। ডেভলাপার প্রোগ্রামার থেকে শুরু করে প্রায় সব শ্রেণীর ওয়ার্কার তাদের টিমে আছেন। যারা সব কিছু টেক কেয়ার করছে। কিছু বায়ার তেমন মানের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান অথচ তিনি চান সব কিছু অটোমেটিক হবে। সব কিছু অটোমেটিক করা যায় কিন্তু যে সাইটগুলোতে ডলার লেনদেনের ব্যবস্থা আছে সেগুলোর সব ফিচার অটো হওয়া উচিত না। এরকম সাইটের জন্য একটা টিম দরকার। এগুলো অনেক বায়ারকে বুঝানো কষ্টকর। অবশ্য ডেভলাপার হিসেবে সব দ্বায় আমার নিজের উপর আসেও না। তবুও.!

৪। প্রাইভেসী সম্পর্কে ধারনা না থাকা-

সাইট বায়ারের প্লান মতো তৈরি করতে গেলে হয়ত অন্য কোন ধরনের প্রাইভেসী ক্ষতি হতে পারে যা তারা বুঝতে চান না। একটা স্কুলের ওয়েবসাইট ডেভলাপ করতে গিয়ে দেখা গেল বায়ার বলছে স্কুলের সব শিক্ষার্থীর ছবিসহ মোবাইল নাম্বার যেন দেখা যায় সেরকম একটি পেইজ বানায়ে দিতে হবে। আমি বললাম, কাজটি শুধুমাত্র স্টুডেন্টের অভিবাবক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতেই থাকা উচিত। কিন্তু বায়ার আমার কথা না বুঝে তিনি যেমন চাইছেন তেমন করেই ডেভলাপ করতে বললেন। একজন সচেতন ডেভলাপার জেনে শুনেই হাজার হাজার শিক্ষার্থীর তথ্যের প্রাইভেসী কেমন করে নষ্ট করবে?

৫। ডেভেলাপিং সম্পর্কে একেবারে ধারনা না থাকা-
অনেক ফিচার আছে যা আপনার সাইটে জন্য ভালো নাও হতে পারে। আপনি হয়ত ছোট্র একটি হোষ্টিং ব্যবহার করছেন কিন্তু যে সাইটের ফিচার আপনার সাইটে নিয়ে আসতে চাইলেন তাতে আপনার ব্যান্ডউইথ সব শেষ হয়ে যেতে পারে দ্রুত। আপনার হোষ্টিংয়ে প্রোগ্রামটি রান করলে আপনার সাইট স্লো হতে পারে। তাছাড়া একটি ওয়ার্ডপ্রেসের এডঅনস আপনার সাইটে একই রকম হবে না। আপনার সাইটের প্রোগ্রাম অনুযায়ী কিছুটা পরিবর্তন আসবে। কিন্তু কোন কোন বায়ার সেটা বুঝতে চান না।

৬। ওয়েব ডেভলাপিং আর ডিজাইনিং ২টি বিষয় - 
অনেক বায়ার এই দুইটার মধ্যে পার্থক্য বুঝেন না। কোনটি সাইটের ডিজাইনের কাজ আর কোনটি ডেভেলাপিংয়ের কাজ সেটা সম্পর্কে ধারনা কম থাকে। আবার কোন কোন বায়ার তো গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের কাজও একসাথেই পেয়ে যেতে চায়। আপনার সাইটের লগো ডিজাইন যে ওয়েব ডেভলাপিংয়ে কোন ডেভলাপারের কাজের মধ্যে পড়ে না সেটাও কোন কোন বায়ারকে আলাদা করে বুঝাতে হয়।

৭। এসইও ফ্রেন্ডলী ডিজাইন এন্ড ডেভেলাপমেন্ট -

কোন কোন কাজ আছে যা সাইটটিকে ইউজার ফ্রেন্ডলী করার স্বার্থে খুব বেশী বাটন এবং টুলস ব্যবহার না করাই ভালো। কোন কোন সময় সিম্পল একটি ডিজাইনই যে খুব বেশী ইউজার ফ্রেন্ডলী হতে পারে তাও অনেক বায়ার বুঝতে চান না।

এরকম আরো অসংখ্য অস্বস্তিকর পরিস্তিতিতে পড়তে হয়েছে। আপনাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে খুশি হব। আমাকে ফেইসুবকে পাবেন - https://www.facebook.com/obaydul.shipon , আমার সর্বশেষ একটি  নিউজসাইটের কাজের ডেমো দেখুন এখানে - http://kormodha.com/ । ওয়েব ডেভেলাপিং সম্পর্কে যেকোন পরামর্শের জন্য ফেইসুবকে যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ - ভালো থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×