somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাকাত দিচ্ছেন, একটু দেখেশুনে দিলে দোষ কি !!!

২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"পোষাক না কেনার কারণে কাস্টমারকে মারতে এলো ইনফিনিটির বিক্রয়কর্মীরা" গত কিছুদিনের ফেসবুকে প্রধান আলোচ্য বিষয়। স্বাভাবিক... ঈদ চলে আসছে, এরকম সময় এইসব কাণ্ড করলে মানুষ তো ক্ষেপবেই। কিন্তু রমজান শেষ হয়ে আসছে, এই মাসেই তো মানুষ যাকাত দেয়... এটা নিয়ে তো কারও মাথা ব্যথা দেখি না। দুই কোটি মানুষের শহর ঢাকা, হাজার কোটি টাকার দান করা হয় এই মাসে... বিশাল ব্যাপার। খেয়াল করলে দেখবেন শহরের আনাচে কানাচে এখন ফকির-মিসকিনে ভরে গেছে। সারা বছর অন্য কাজ করলেও মৌসুমি এই সময়টাতে তারা দল বেধে ঢাকায় আসে শুধু ভিক্ষা করতে!!! আর যাকাত যেহেতু আদায় করতে হবেই মানুষও দান করে এদের। এছাড়া বাড়ির বুয়া, দারোয়ান তো আছেই। পকেট থেকে টাকা বের করে গরিব, অসহায় দেখতে কারও হাতে টাকা দিলেই মানুষ দায়িত্ব শেষ হয়েছে মনে করে। অথচ যাকাত দেয়ার নিয়মই হলো, এমন কিছু একটা করা যেন সে সামনের বছর যাকাত নেয়ার মতো অবস্থায় না থাকে... স্বাবলম্বী হতে পারে। খলিফা উমার (রাঃ) এর আমলে যাকাত ব্যবস্থা এতো সুন্দর ছিল যে সারা দিন ঘুরেও যাকাত দেয়ার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যেত না। আর এখন যাকাত পরিণত হয়েছে কিছু লোকের আর্থিকভাবে আরও বড়লোক হবার কৌশলে... কোটি কোটি টাকার একটা ব্যবসাতে।
.
এইযে হাজার হাজার মানুষ এই সময় ঢাকা আসে ভিক্ষা করতে এরা কি আসলে দান বা যাকাত পাবার যোগ্য?? খোঁজ করলে দেখবেন এদের গ্রামে বাড়ি ঘর আছে, অনেকে তো বিন্ডিং বাড়ীতে থাকে.... তারপরও এরা ভিক্ষা করে কারণ এটাই তাদের ব্যবসা। আপনি এদের যত কিছুই করে দেন না কেন এরা ভিক্ষা করা ছাড়বে না। এখন অনেকে বলবে, আমাদের নিয়ত তো ঠিক আছে, বিশ্বাস করে দান করেছি... কেউ যদি প্রতারনা করে আমার কি করার আছে? সমস্যা তৈরি হচ্ছে এখানেই... ধরেন, আপনি যখন কোন পরীক্ষার খাতায় লেখেন তখন যথাসম্ভব গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করেন যেন পরীক্ষক দেখে খুশি হয়ে ভালো নাম্বার দেয়; ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভালো করে সাজিয়ে রাখেন যেন ক্রেতা বেশি আসে... কিন্তু আল্লাহ্‌র দেয়া নিয়ম যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে কেন দায়সারা ভাব। নিজের কষ্টের টাকা যখন দানই করবেন, একটু দেখেশুনে দান করলে কি হয়।
.
এবার আসি ধর্মের বিষয়ে, ইসলামে ভিক্ষা হালাল। ভালো কথা, কিন্তু কতক্ষন পর্যন্ত একটু যেনে নেয়া যাক। তিন ব্যক্তি ছাড়া কেহ ভিক্ষা করবে না (এক) যে ব্যক্তি ঋণী হয়ে পড়েছে। ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সাহায্য ভিক্ষা প্রার্থনা করা তার জন্য হালাল। (দুই) যে ব্যক্তি প্রাকৃতিক দুর্যোগে পতিত হয়েছে এবং এতে তার যাবতীয় সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে। তার জন্যও সাহায্য চাওয়া হালাল যতক্ষণ না তার নিত্য প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ হয়। (তিন) যে ব্যক্তি এমন অভাবগ্রস্ত হয়েছে যে, তার গোত্রের তিনজন জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন লোক সাক্ষ্য দেয় যে, সত্যিই তিনি অভাবে পড়েছেন। তার জন্য জীবিকা নির্বাহের পরিমাণ সম্পদ লাভ করার পূর্ব পর্যন্ত সাহায্য চাওয়া হালাল। (মুসলিম ১০৪৪; সহীহ আবু দাউদ)..... কিন্তু বাস্তবে হয় টা কি .... কাজকর্ম করার সামর্থ্য বা আর্থিক সচ্ছলতা থাকলেও কিছু শ্রেণির মানুষ এটাকে পেশা হিসেবেই নিয়েছে। তারা লোভে পড়ে এটাকে ছাড়তে পারে না, আরও বেশি অর্থ আয় করার সুযোগ এরা হারাতে চায় না... আর আমরা সহজে পার পেয়ে যাবার জন্য এদেরকেই বেছে নিই। কোনভাবে এদের হাতে টাকা বা শাড়ি পৌঁছে দিতে পারলেই কাজ শেষ মনে করি।
.
এমনটা মোটেই না যাকাত আদায় করার মত মানুষ এখন খুব কম। বহু মানুষ আছে যারা আসলেই অভাবগ্রস্থ কিন্তু কারও কাছে চাইতে পারছে না... গ্রামে যাচ্ছেন খোঁজ করে দেখবেন অনেকেই আছে যারা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না, ছেলেমেয়েকে পড়াতে পারছে না.. সরকারি হাসপাতালে ওয়ার্ডে গেলে দেখবেন কত মানুষ ওষুধ কিনতে পারছে না... চুপ করে এক সপ্তাহের ওষুধ কিনে হাতে ধরিয়ে দিন। বিধবা বা আসলেই অভাবী কাউকে যারা যাকাত দিচ্ছেন এরকম তিন-চারজন মিলে ছোট খাটো একটা চলার মত দোকান করে দেন বা গবাদি পশু কিনে দেন যেন সে নিজের পায়ে দাড়াতে পারে। চাইলে অনেক কিছুই করা সম্ভব। দরকার একটু সদিচ্ছার, সামান্য কষ্ট করে খোঁজ করার.... এইটুকুই আমাদের হয় না। হবেই বা কি করে, আমরা তো আছি ইনফিনিটি নিয়ে ব্যস্ত, ট্রায়াল কেন দিতে দিবে না শালারা... সাহস কত
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৭ রাত ১১:৫৫
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×