স্ত্রী অতিশয় উপকারী প্রাণী। অন্তত কুড়ি বছর যাবৎ এটাই আমার খুব করে মনে হচ্ছে।কারণ এ বিষয়ে আমি পাক্কা কুড়ি বছরের অভিজ্ঞ।
কেউ যদি কোন প্রাণী পোষ মানাতে চায় তবে তারা যেন সর্বাগ্রে স্ত্রীকে পোষ মানায়। কারণ এ প্রাণীকে পোষ মানালে আদর যত্নের পাশা-পাশি অতীব সুস্বাধু খাবার কপালে ঝুটে।
স্ত্রীর সাথে সংঘর্ষে জড়ালে কপালে দুঃখ থাকে।সে সময় বিভিন্ন রকম বিপত্তিতে জড়িয়ে পড়ে দিশেহারা হতে হয়। অনেকেই নাকি নারীর মন বুঝেন না। অথচ তারা এমন একটা বিষয় বুঝে না, যেটা বুঝা সবচেয়ে দরকারী।
স্ত্রীর মনে পরকীয়া থাকলে সেটাকে ভালোবাসার রাবার দিয়ে ঘষে ঘষে তুলে ফেলতে হয়, সেটাকে কোন রকেমেই ডাল-পালা মেলার সুযোগ দেওয়া যাবে না।
স্ত্রীকে নিজের মনের মত করে গড়ে তোলা খুবই দক্ষতার বিষয়। তথাপি এ দক্ষতা সবাইকে অর্জন করতেই হবে। ইহা যেন কোন রকমেই ফোঁস-ফাঁস করতে না পারে সে দিকে অবশ্যই তীব্র নজর থাকতে হবে।
স্ত্রীর সমালোচনা, গায়ে হাত দেওয়া জীবন বিনষ্টকারী বদভ্যাস হিসেবে পরিগণিত। এর কারণে অনেক আত্ম-হত্যার ঘটনা ঘটে জীবন বিপাকে পড়ে। কাজেই জীবন বিপাকে পাক খাওয়ার পূর্বেই ইত্যকার বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান হাসিল করতে হবে।
কবুতর পর্যন্ত নিজ স্ত্রীর মন রক্ষা করে চলতে পারে, অথচ মানুষ হয়েও কতিপয় স্ত্রীর মন রক্ষা করে চলতে পারে না। তাদের জন্য সত্যি অনেক লজ্জা হয়।অনেক দক্ষ স্ত্রীরা আবার স্বামীকে বশিভুত করে ফেলে। তাদেরকে লোকে আবার স্ত্রৈন বলে লজ্জা দিয়ে থাকে। তাদেরকে আমি বলতে চাই আমার সাজেশন হলো আপনারা স্ত্রী বশিভুত করবেন। আর আপনারা তার বশিভুত নন সেটা যেন তারা গুনাক্ষরেও টের না পায়। আর পাবলিক যেন আপনাকে স্ত্রৈন বলতে না পারে সেদিকেও অবশ্যই খেয়াল থাকতে হবে। এটা আসলেই এক মহা যোগ্যতার বিষয়।
স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা সন্তানরা পছন্দ করে। কারণ স্বামী স্ত্রীর ঝগড়াতে তারা খুব অসহায় বোধ করে। স্ত্রী কেমন ভালোবাসার সেটা বুঝার ভালো আদর্শ সম্রাট শাহজাহান।তার বানানো তাজমহল এ বিষয়ে কালের সাক্ষি।
স্ত্রী রেগেগেলে যে কোন মূল্যে তাকে হাসাতে হবে তাহলে তার রাগ জল হয়ে যাবে।স্ত্রী কেন গলায় দড়ি দেয় এ এক বিরাট প্রশ্ন। এ সব স্বামীর পক্ষে যতই সাফাই গাওয়া হোক না কেন আমি তাদেরকে অযোগ্য মনে করি। কারণ তারা তাদের স্ত্রীর গলায় দড়ি দেওয়া ঠেঁকাতে পারেনি, এটাই তাদের বড় অযোগ্যতা। স্ত্রী গলায় দড়ি দিবে কেন? বরং স্ত্রী গুন গুন করে গান গাইবে, ‘তোমায় নিয়ে হাজার বছর বাঁচতে বড় ইচ্ছে হয়’। তারমানে মূল কথা এটাই দাঁড়ালো যে যাদের স্ত্রী গলায় দড়ি দেয় তারা আসলে ভালোবাসতে জানে না। এ জন্য তাদের স্ত্রীর এক দন্ড বাঁচতে ইচ্ছে হয় না বিধায় গলায় দড়ি দিয়ে মরে যায়। এ সব স্বামীদের জন্য ভালোবাসার বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা যেতে পারে। সরকার পুরগী পালনের ট্রেনিং দেয়, অথচ বউ পালনের ট্রেনিং দেয় না। কাজেই স্ত্রীর গলায় দড়ি দেওয়ার ঘটনায় সরকার দায় এড়াতে পারে না। এ বিষয়ে আমি অনতি বিলম্বে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
আমার স্ত্রী বললেন, সোজা কথা স্ত্রীর সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে। বাসের গায়ে অনেক সময় লেখা থাকে ব্যবহার বংশের পরিচয়। তো সুবংশীয় স্বামী হলে স্ত্রীরা খানিকটা মান ইজ্জত করে বৈকি!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৪৮