বাংলাদেশ বিশ্বের মাছ উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে সমুদ্র উপকূল থেকে মাছ আহরণ হয় ১৭ শতাংশ। সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পর মৎস্য বিভাগের একটি গবেষণা জাহাজ মৎস্য আহরণে কাজ শুরু করেছে। সামুদ্রিক মাছের চাহিদাও আগামীতে রফতানি পর্যায়ে পৌঁছবে। এদিকে দেশ থেকে মিঠাপানির অনেক মাছ হারিয়ে গেছে। নানা প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করে হারিয়ে যাওয়া মাছগুলো ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুকুর-জলাশয় থেকে মাছ মেলে ৫৫ শতাংশ। নদী, খাল-বিল ও উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মেলে ২৮ শতাংশ। নদীর পানি কমে যাওয়ায় চর জেগে ওঠায় নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষ যখন কমে যাচ্ছে, তখন দেশীয় নতুন এ প্রযুক্তি মাছ চাষে আশার সঞ্চার করেছে। কৃষকরা এভাবে মাছ চাষে এগিয়ে আসায় মাথাপিছু মাছ খাওয়ার পরিমাণও বেড়েছে। বছর ছয়েক আগে বছরে মাছ খাওয়ার হার ছিল প্রতি জনে ১৪ কেজি করে। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৯ কেজি। এ হার স্বল্পোন্নত দেশের চেয়ে অনেক বেশি, যা উন্নয়নশীল দেশের মাছ গ্রহণের সমান। মাছের উৎপাদনের সঙ্গে পুষ্টি চাহিদা মিটছে। বর্তমানে মাছ থেকে পুষ্টি মিলছে ৬০ শতাংশ। প্রতিদিন প্রতিজনের মাছের চাহিদা ৬০ গ্রাম। বছরে প্রায় ২২ কেজি। দেশে প্রতি বছর মাছের চাহিদা ৩৭ দশমিক ৬৫ লাখ টন। সেখানে বছরে মিলছে ৩৮ দশমিক ৮৪ লাখ টন। উদ্বৃত্ত মাছ রফতানি হচ্ছে। ‘জল আছে যেখানে, মাছ চাষ সেখানে’- প্রতিপাদ্যে মাছচাষীরা ব্যাপক উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। বাঙ্গালী নদীতে বিশেষ দেশীয় প্রযুক্তিতে মাছ চাষ শুরু করেছে অনেকেই। এ প্রযুক্তিটির এখনও নামকরণ হয়নি। জাল, বাঁশ, ড্রাম আর ইট দিয়ে নদীর মধ্যে খাঁচা বানিয়ে চাষ করা হয় মাছ। দেখে মনে হবে নদীর ভেতর মশারি টাঙানোর মতো জাল দিয়ে ঘিরে দেয়া একেকটি মিনি পুকুর, যা পর্যবেক্ষণের জন্য নদীর ভেতরে ড্রাম ভাসিয়ে ঘর বাননো হয়েছে। এ ধরনের প্রযুক্তি প্রথম শুরু হয় মাছের এলাকা চাঁদপুরে, যা দেখে বর্তমানে অনেক এলাকায় মাছচাষী নদীতে মাছ চাষ করছে। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে আবার আমরা হয়ে উঠব মাছে ভাতে বাঙ্গালী।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩