somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কি করবেন তারা আগামীতে?

২৬ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





এ দেশে অপ-রাজনীতির অনুসারী কিছু রাজনৈতিক নেতার স্বার্থচিন্তা এতোই প্রকট, তারা এতো নির্লজ্জ যে, তাদের মানসিকতা হলো, ‘আমার পক্ষে যেটি যাবে সেটি ভালো, তা না হলে এটা খুবই খারাপ।’ তবে সকলকে একটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে, রাষ্ট্র এবং জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে যেকোনো মূল্যে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন গণতান্ত্রিক চেতনা ও মূল্যবোধকে। কেননা জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে গণতন্ত্রই আর জনগণই দেশের প্রকৃত মালিক। তারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেন সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনার নিমিত্তে। তাদের এ অধিকার কেড়ে নিলে তারা আর দেশের মালিক থাকে না। তখন আর তাদের মর্যাদা ও শক্তি অবশিষ্ট থাকে না। তবে আমাদের এ দেশের অতীত ইতিহাস অনেক উজ্জ্বল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পেছনে এ অঞ্চলের মানুষের ভূমিকাই ছিল অত্যন্ত বলিষ্ঠ। এ কারণেই একসময় বলা হতো, What Bengal Thinks today the rest of India thinks tomorrow. এ দেশের মানুষ আবহমান কাল থেকে খুবই স্বাধীনচেতা, অত্যন্ত সচেতন। তবে সে দেশেই আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা। মহান মুক্তিযুদ্ধের অনির্বান মূল্যবোধ লালন করা এই স্বাধীন দেশে এমনটি হওয়া নিতান্তই অনভিপ্রেত। এ দেশের স্বাধীনতা আনয়নে গণমানুষের যে আত্মত্যাগ, তা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ দেশের স্বাধীনতা। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল, দেশের মানুষ শান্তির সাথে ঘুমাবে এবং স্বচ্ছন্দে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে অসুবিধা হবে না; গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত থাকবে এবং মানুষের মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হবে না।’ অনেক স্বপ্ন ছিল এ দেশের মানুষের। কিন্তু কিছু কুচক্রির অব্যাহত ষড়যন্ত্রে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও এ দেশে মানুষের মৌলিক অধিকার এখনো হুমকির মুখে। এদের অপরাজনীতির নীতিহীনতার দায় মানুষের জীবনকে প্রতিনিয়ত বিব্রত করছে। দেশের রাজনীতিকে এদের কলুষমুক্ত করা না হলে এই হানাহানি ও বিশৃঙ্খলার মূলোৎপাটন করা যাবে না। তবে জনরায়ে নির্বাচিত বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার এদেশের রাজনৈতিক পরিমন্ডলে ইতিবাচক ধারা প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তায় বিভিন্ন সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক সংস্থা যেমন - নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, বিচার বিভাগ ইত্যাদিতে দলীয় লোকজনকে বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ, দৃঢ়চেতা, সুদক্ষ, মেধাবী, দায়িত্ববান, দেশপ্রেমিক ব্যক্তির নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়েছে যাতে তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে পারেন। যাতে পক্ষপাতিত্ব না হয়; মানুষ সুবিচার পায়। রাষ্ট্র ও সরকারকে আলাদা রাখার প্রক্রিয়া অনুসৃত হচ্ছে। অতীতের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের অপধারা থেকে বেরিয়ে দেশে statesman-তৈরির মানসিকতা বিকশিত হচ্ছে। কেননা দেশের গণমানুষের প্রতি দায়বদ্ধতায় উজ্জীবিত বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গী হচ্ছে - “A politician thinks for next election but a statesman thinks for next generation. তবে বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো, ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে অবশ্যই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, সব দলের অংশগ্রহণমূলক এবং বিতর্কমুক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার ভূমিকা হতে হবে সৎ ও নিরপেক্ষ। সংশ্লিষ্ট সকলকেই নির্বাচন কমিশনকে পরিপূর্ণভাবে সহায়তা এবং নির্বাচন কমিশনকেও তার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থেই দল কিংবা গোষ্টি স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে জনমতকে শ্রদ্ধা জানাতে হবে। অতীতে অপশাসনের বেড়াজালে আবদ্ধ দেশে সঠিক ইতিহাস লেখা না হলেও এখন প্রকৃত ইতিহাসের কালানুক্রমিক বর্ণনা লিপিবদ্ধকরণ শুরু হয়ে গেছে। সরকার ও বিরোধী দলসহ দেশের সকল রাজনৈতিক দলের ভূমিকাই নির্ণীত হবে ইতিহাসে। কোনো দল বা ব্যক্তির তথাকথিত উজ্জ্বল অতীতের বাগড়ম্বর নয় জাতীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালনে সফলতা-ব্যর্থতার মানদন্ডেই মূল্যায়িত হবে তার অবস্থান, না হয় ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে। নির্বাচন কমিশনের যে দায়িত্ব, সরকারের যে ভূমিকা, রাজনৈতিক দলগুলোর যে প্রত্যাশিত সহযোগিতা, এ ক্ষেত্রে তা নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। লাখো শহীদের রক্ত, লাখ লাখো মা-বোনের ইজ্জত, আর কোটি কোটি টাকার সম্পদহানি যেন আমরা কেউ ভুলে না যাই। কেউ যেন না চায় যে, তাদের নামগুলো ইতিহাসে কলঙ্কিত হয়ে থাকুক। যে বিতর্কিত দলটির হটকারীতায় দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বারংবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের নেতানেত্রীদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। নইলে জনতার আদালতকে ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। হটকারীতার জন্য তাদের জবাবদিহি করতেই হবে, বিষয়টি ভুলে থাকার চেয়ে বড় বোকামি নেই। অতীতের ভুলের দায়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া দলটি নিজেদের শুধরে নিতে অযথা টালবাহানা না করে নিঃশর্তভাবে আগামী নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে চলমান রাখতে সচেষ্ট হবে – এটাই প্রত্যাশিত। নইলে অস্তিত্বের সংকটে থাকা দলটি অস্তিত্ব হারিয়ে অচিরেই স্থান পাবে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে। এবার সিদ্ধান্ত নেবার পালা তাদের, কি করবেন তারা আগামীতে?
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×