নজির সাহেব একজন নাম করা ব্যবসায়ী। বয়স চল্লিশের কোঠায়। তার কোন কিছুরই অভাব নেই। এক ইনশুরেন্স কম্পানিতে চাকুরীরত নবীন সাহেব তার কাছে এসে জীবন বিমা করানোর জন্য বায়না ধরলেন। দু’ একদিন পর পরই নবীন নজিরের কাছে ধন্যা দিতে লাগলেন। কি আর করা। অগত্যা নজির অনেকটা অতিষ্ট হয়েই দীর্ঘ মেয়াদি জীবন বিমা করায় সায় দিলেন।
তাকে একটি ফরম পুরন করতে দেয়া হলো। নজির সাহেবের এসিস্টেন্ট ফরম খানার বেশির ভাগ অংশ পুরোন কোরে যথাস্থানে তার সাক্ষর নিলেন। বিধিমত স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য প্রদানের জন্য এসিস্টেন্টকে দিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফাইল পরিচিত একজন চিকিৎসকের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু ডাক্তারবাবু তার মতামত প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করলেন। নজির সাহেব তো রেগেমেগে খুন। তিনি ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিৎকার কোরে বলতে লাগলেন যে, তিনি গত মাসেই সিঙ্গাপুর থেকে পুরো বডি চেকাপ করে এসেছেন। সেখানে তার তেমন কোন বড় ধরনের রোগই ধরা পড়ে নাই। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা তার শরীরের ফিটফাট অবস্থা সম্পর্কে বেশ ভালই বলেছেন। কিন্তু এখন আবার এমন কি হলো যে ডাক্তার মশাই তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সাফাই গাইতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন!?
বিষয়টি জানার জন্য তিনি ডাক্তারের কাছে ছুটে গেলেন। ডাক্তার তাকে অপারগতার কারণ খুলে বললেন। আসলে স্বাস্থ্যগত কারণে নয়, বরং সেই ইস্সুরেন্স কম্পানী কাস্টোমারের পক্ষে ডাক্তারী সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য এমন একটি পয়েন্ট লিখে রেখেছে যা একজন ইমানদার মানুষের পক্ষে পুরোন করা ও কারানো সত্যিই বিব্রতকর। সেই পয়েন্ট অনুসারে নজির সাহেবের দীর্ঘ জীবন লাভের সম্ভাবনা অতি উজ্জল বলে ডাক্তরকে প্রত্যায়ন করতে বলা হয়েছে। ডাক্তার বললেন, ভাই বর্তমানে আপনি সুস্থ আছেন এবং গুরুতর কোন রোগে যে আপনি ভুগছেন না- সে সম্পর্কে আমি পরীক্ষা কোরে বলার অধিকার রাখি। কিন্তু আপনার জীবনটা দীর্ঘ হবে, নাকি হবেনা- সে বিষয়ে গ্যারান্টি দেবার অধিকার ও যোগ্যতা আমার নেই।
প্রথমে নজির সাহেবও বিষয়টি বুঝতে পারেন নাই। কিন্তু বিষয়টা তিনি যখন বুঝতে পারলেন তখন তো খুবই অবাক হলেন এবং সেই ইস্সুরেন্স কম্পানীর উপরে বেশ রেগে গেলেন। ডাক্তারের সামনেই জীবন বিমার ফরমটি ছিড়ে ফেলে দিলেন। আর ডাক্তারকে ধন্যবাদ ও সালাম জানিয়ে বিদায় নিলেন।