somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এপ্রিল ফুল (লুতুপুতু গল্প)

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-বিল তুই দে ।আমার ভাংতি নাই । ফুচকার খালি প্লেটটা মামার হাতে দিতে বলল নিকিতা ।
-অজুহ্যান্ড ছাড় মামী ।প্রতিদিন একই কথা ।

পার্স থেকে এক হাজার টাকার নোট বের করে শাওনের মুখের সামনে দোলায় নিকিতা ।অগ্যতা প্যান্টের পিছনের পকেটে হাত দিতে হয় শাওনকে । একশ টাকার একটা নোট মানিব্যাগ থেকে হালকা হয়ে গেল । প্রতিদিন ক্লাস শেষ হবার পর নিকিতাকে দু প্লেট ফুচকা খাওয়াতে গিয়ে নিজের বিড়ির বাজেটে টান পড়ে যায় তার । তারপরও সওয়া যায় ।কারন ভার্সিটির হার্টথ্রব আগুনটার সঙ্গে তাকে দেখে অনেকের হৃদয়ে যে দাবানল জ্বলে তা উপভোগ্য শাওনের কাছে ।

-পৌছেঁ দিতে হবে বাসায়?
-ধইন্যাপাতা আপনাকে । মুখ ভেঙিয়ে বলে নিকিতা ।অতঃপর রিকশায় পাশাপাশি দুজন । নিকিতার উরুর উষ্ন সান্নিধ্য তার হার্টবিটের বেড়ে যাওয়া লাব-ডাব শব্দ যে আটগুন বাড়িয়ে দিচ্ছে সেটা কি নিকিতা শুনছে?

-কি শ্যাম্পু দিছিস রে? বাতাসে উড়ে আসা সফট চুল গুলো নাকে মুখে জড়িয়ে যায় শাওনের ।
-গার্নিয়ের । অরিজিনাল ।
-ফেইক না অরিজিনাল জিগাইসিলাম?খালি আলগা পার্ট । খোচাঁটা মেরেই দেয় শাওন । রেগে জোড়ে জোড়ে তার জিনসের প্যান্টের উপর চিমটি কাটে নিকিতা ।

-জরুরি একটা কথা বলার ছিল তোকে । রিকশা থেকে নামতে নামতে বলে নিকিতা ।
-ডা,মাদমোয়াজেল ।
-SMS করে জানাব ।
-ওকে ।
নিকিতাকে রেখে রিকশাটা বেশিদূর যায়নি ।শাওনের ফোনে টুংটাং টোনে মেসেজ এল ।

"kal sakale saboj panjabe pore asbe cls a.bye" মুচকি হাসল শাওন নিকিতা টাকলির মেসেজ পড়ে ।সুন্দরীদের টাকলা রোগ থাকা বিচিত্র কিছু নয় । কি কারনে পাঞ্জাবি পড়তে বলল কে জানে! ওর তো পাঞ্জাবি পড়ার অভ্যাস নেই ।যাক গে!রুমমেট শিবির শিহাব থেকে ধার নিলেই হবে । পরদিন ক্যাম্পাসে সবুজ পাঞ্জাবি পরিহিত শাওনকে দেখা গেল ক্যাফেটেরিয়া টু ক্লাস চিন্তিত ভঙ্গিতে মার্চ করতে । লাল সেলোয়ার কামিজের সাথে ম্যাচিং ওড়না প্যাচিয়ে নিকিতা এল আগুনের বহ্নিশিখার মত । পেছনে হাত লুকিয়ে শাওনের সামনে এসে দাড়াঁয় সে ।

-কথাটা অনেকদিন বুকে চেপে রেখেছি ।আর পারছি না ।
-ক্ক ..ক্ব ..ক্কি? ক্কি?
-ওমা!মুরগীর মত কক কক করছো কেন?
-ক্ক ..ক্কই? নাতো!
শাওনের তখন দিল মে বাজে গিটার । তবে কি?... তবে কি?

-আই লভ ইউ ।
পেছন থেকে মুঠি ভরা গোলাপ এগিয়ে দিয়ে বলে নিকিতা । লাজে লাল রাঙা গালে চেয়ে আছে নিজের পায়ের বুড়ো আঙুলের দিকে । শাওন মনে হয় ঘোরে চলে গেছে ।ধুমের আলীর মত সেও নিকিতাকে নিয়ে ফ্যামিলি প্ল্যানিং ভেবে ফেলেছে ।দুটো ছেলে ,দুটো মেয়ে ।হ্যাপি ফ্যামিলি,এক্সপোর্ট ফ্যামিলি ।

-তুই ...থুক্কু! তুমি এতদিন সময় নিলে কেন?আমিতো কবে থেকে তোমাকে...
-এপ্রিল ফুল!হি হি হি হি!

অট্টহাস্যে ফেটে পড়ে ছলনাময়ী ললনা ।সাথে হাসির তুবড়ি ছোটায় স্তম্ভিত করিডরে দাড়িঁয়ে থাকা স্টুডেন্টরা । অভিমানে গলায় মেঘ জমে শাওনের । ঢোক গিলেও নামানো যায়না সে মেঘ ।ওদিকে হেলেদুলে হেসে যাচ্ছে নিকিতা ।বন্ধুর অপদস্থ হওয়া সহ্য হলনা দাড়িঁয়ে থাকা শাওনের বন্ধু সৌরভের ।

-অই ছেমড়ি!খাড়া!
শাওনের বদনা হয়ে যাওয়া দেখে হেসে কুটি কুটি তখন লাস্যময়ী নিকিতা । সৌরভের ডাকে তব্দা ফিরে তার ।
-কিস্সে রে কুট্টি?
কুট্টি নিক শুনে মেজাজ বিলা হয় সৌরভের ।মাথা ঠান্ডা রেখে বলে সে
-হেরে ভুয়া কথা কইয়া এপ্রিল ফুল বানাইছস ঠিক ।মাগার হাতে কইরা এই ফুল কিল্লাইগা আনছস?হুম?

-ইয়ে... না মানে... এগুলো এপ্রিল ফ্লাওয়ার আরকি! আমতা আমতা করে বলে নিকিতা ।

-সোজাসুজি কইয়া দে ভালবাসস ।তগো মাঝে চক্কর চলে হগলে জানে । চোখ কঠিন করে সৌরভের দিকে তাকায় নিকিতা ।

-হ্যা !আমি শাওনকে ভালবাসি ।ও আমার জান । এতগুলা অবাক চোখের সামনে জড়িয়ে ধরে নিকিতা শাওনকে ।শাওনের দৃস্টি তখন হতভম্ভ । নিকিতা তখন আগুনঝরা চোখে তাকিয়ে আছে সৌরভের দিকে ।

- লও ঠেলা ।মাঝখান থেকে আমি ভিলেন ।ছেমড়িগো মাথায় যে গু থাকে আবার প্রমানিত । অনুচ্চারিত স্বরে বলে সৌরভ ।

-কি কইলি কুত্তা ? তেড়ে মারতে আসে তাকে নিকিতা । হেসে ওঠে সবাই ।সাথে শাওন ও ।পাখিরাও কি গেয়ে উঠল গান শাওনের খুশিতে?
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×