রোদেলা'র সাথে আজকে ফোনে কথা হচ্ছিল। আমাকে জিজ্ঞেস করলো, "এই, আমাকেতো বলনি কখনো তোমার লাইফের প্রথম ক্র্যাশ কে ছিল?
ফোনের এ প্রান্তে আমি মোটেও অপ্রস্তুত হলাম না। মৃদু হাসলাম।
গার্লফ্রেণ্ডকে লাইফের সব কথা বলাটা যদিও ঠিক না। তারপরেও কিছু কথা থেকে যায় যেগুলো বললেও বিপদ, না বললেও বিপদ।
পেইন রে ভাই। গার্লফ্রেণ্ড মানেই পেইন।
বললাম, "শোন বেইবি, তুমি ছাড়া আমার লাইফের বড় ক্র্যাশ আর কে হতে পারে বলো?"
সাথে সাথে রোদেলা ছ্যাঁত করে উঠলো। "এহ্! ন্যাকা? ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানোনা বুঝি? বলো বলো, কে কে ছিল?"
"ছিল একজন" - একটু দম নিয়ে বললাম আমি।
"কে? কে সেই জন?" রোদেলার কণ্ঠ এবারে উদ্ধত।
"আমি তখন ক্লাস থ্রি তে পড়ি। কো-এড এ। আমার সাথেই একটা মেয়ে পড়তো। ওর নাম ছিল মনিকা। উমমম... মিথ্যে বলবোনা। এই মনিকা-ই ছিল আমার লাইফের ফার্স্ট ক্র্যাশ। যদ্দুর মনে পড়ে মনিকা ছিল গোলগাল খুব সুন্দর একটা বাচ্চা। ক্লাসে সব সময় আমার পাশেই বসতো। আর ওকে আমি এতই ভালোবাসতাম যে, ওর সব জিনিসপত্র আমি আমার নিজের মনে করে অর্থাৎ মনিকার ছোঁয়া আছে ভেবে ওর জিনিসগুলো নিজের ব্যাগে ভরে নিতাম।
একদিন মনিকার মা স্কুলে এলেন। আমাকে আদর করে ডেকে নিয়ে বললেন, বাবু, যাওতো, তোমার স্কুল ব্যাগটা নিয়ে এসোতো।
আমি ভদ্র বাচ্চার মতো আমার স্কুল ব্যাগখানা আন্টির কাছে নিয়ে এলাম।
তিনি খুব যত্ন করে ব্যাগের চেইন খুলে আমার ব্যাগের মধ্যে রাখা মনিকার সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর জিনিসপত্র যেমন, ইরেজার, পেন্সিল, কলম হাবিজাবি আরও যা যা ছিল সেগুলো আমার চোখের সামনে নিয়ে নিলেন। আর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, এরকম অন্যের জিনিস আর কখনো নিবেনা বাবু, বুঝলে?
আমিও মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক একটা ভাব দেখালাম।
এর পরদিন মনিকার সাথে আমার ব্রেক-আপ হয়ে গেল।"
ফোনের ও পাশ থেকে শুনলাম রোদেলার খিল খিল করে হাসি।
বাঁচা গেল বাবা!
https://www.facebook.com/mahee.chowdhury.75
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:১৪