বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের হাওর ও জলাভূমিগুলোর পরিবেশ এখন মারাত্মক হুমকির মুখোমূখি। ৪১১টি হাওর ১১টি বাওর এবং ২৯টি বিলের প্রতিবেশ এবং পরিবেশের উন্নয়নে দীর্ঘদিনেও কোন ধরনের পদক্ষেপ না থাকার ফলে প্রতিবছর এ এলাকায় প্রাক মৌসুমী ঢলের কারণে কৃষকরা সোনালী ধান ঘরে তুলতে পারছে না। মৎস সম্পদও দিন দিন কমে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সরকার হাওর এলাকার উন্নয়নে একটি দীর্ঘ মেয়াদী মাষ্টার প্লান গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
বৃহত্তর সিলেট এবং বৃহত্তর মসয়মনসিংহ এবং ব্রাক্ষন্যবাড়িয়ার কিছু কিছু এলাকায় দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হাওর এবং জলাভূমিগুলোর অবস্থান। এগুলোয় বছরের প্রায় সাত মাস থাকে পানি, সে সময় ঐ এলাকার মানুষ মৎস আহরণ করে এবং পাঁচ মাস এখানকার কৃষকরা চাষ করে বোরো ধানের। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর যাবত এই সকল এলাকায় নানা কৃষক এবং জেলেদের চলছে চরম দূরদিন। একদিকে পরিবেশের উপর নানা ধরনের অত্যাচারের কারণে এখানে মৎস সম্পদ দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে, প্রতি বছর আগাম বন্যার কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যাবার ফলে কৃষকদের মাথায় হাত পড়ছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া এক হিসাবে দেখা গেছে, এই এলাকায় প্রতি বছর সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের ধান উৎপাদন হয়। এবারে আগাম বন্যার কারণে তা প্রায় সাড়ে চারশ কোটি টাকার ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ এলাকার সুনামগঞ্জের মাত্র দুটি হাওর ছাড়া বাকি সবগুলোর সংশ্লিষ্ট এলাকায় আগাম বন্যার কবলে পড়েছিল।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক শাহ ফতেহ আলী মিয়া জানান, অত্যান্ত সম্ভাবনাময়ী এবং ঘোলা মাছের খনি নামে পরিচিত উত্তর পূর্বাঞ্চলের হাওর ও জলাভূমিগুলোর অবস্থা এখন দিন খারাপ পর্যায়ে যাচ্ছে। এখন এখানকার মৎস সম্পদ ক্রমেই কমে যাচ্ছে। এখানকার অনেক জলজ উদ্বিদ এবং প্রাণীর আবাসস্থলও নাজুক হয়ে পড়েছে। পুরা প্রতিবেশ ক্রমে হয়ে উঠছে অসামঞ্জস্যপূর্ন। তিনি জানান, মূলত আসাম থেকে এ এলাকায় পানি নেমে আসে, সেখানেও নানা ধরনের পবিবেশ বিধ্বংশী কার্যকলাপের কারণে এখানকার পানি দূষিত হচ্ছে। পানি দিয়ে ধেয়ে আসছে পলি এবং বালি এগুলোও ভরাট করে দিচ্ছে হাওর জলাধারগুলোকে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে জানান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে পরিবেশের কথা বিবেচনা না করেই হাওর এলাকায় বাঁধ কালভার্টের মত নানা অবকাঠামো গড়ে তুলছে। এ কারণেও প্রাকৃতিক হাওরগুলো ধবংশ হচ্ছে।
হাওর সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞরা বলছেন, হাওরের ওয়াটার রেজিম সংরক্ষননার্থে সুরমা নদীর মূখ সহ আসেপাশের এলাকায় ডেজিং শুরু করা দরকার। পাশাপাশি কালনি, কুশিয়ারা, সুরমা, বৌলাই, মনু ,যদুকাটা, রক্তি সহ বিভিন্ন ছোট বড় নদী এবং এর আশেপাশের খালগুলোর পর্যায়ক্রমিক খনন করা দরকার। তাতে ঐ এলাকায় বর্ষার সময পানি আসবে এবং বর্ষার পর তা আবার চলেরও যাবে। তখন সেখানে কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারবে।
হাওর জলাভূমির পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে, কমে যাচ্ছে মৎস সম্পদ, হচ্ছে আগাম বন্যা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।
পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন
একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়
সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।
সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?
সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঘুষের ধর্ম নাই
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।
হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।
পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন