somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু পুংটা পোলাপাইনের আলাম ভাইয়ের রোদ চশমা ষড়যন্ত্র ও তদ্বিষয়ক আমার ভীতিকর অভিজ্ঞতা

২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্ববর্তী পোষ্ট পড়ে আসুন।

মনিটর হ্যান্ডসাম ছেলে উজ্জল ক্যারিয়ার, লামিরাদের বাসার সবাই ওকে পছ্ন্দ করে। লামিরা দেখতে একটু স্থূলকায় হলেও চেহারা খুব মিস্টি ও মায়াবী। পাশাপাশি দুজনকে বেশ লাগে। প্রথম দিকে মনিটর লামিরার বড় বোন নাদিরার প্রতি অনুরক্ত ছিল। দুজনের বেশ খাতির। পরে দেখা গেল সে নাদিরাকে এড়িয়ে চলছে, ছোট বোনের কূলেই তার ভালবাসার তরী ভিড়েছে। এরূপ দিক পরিবর্তনের কারণ জিজ্ঞেস করলেই সে ভুংভাং কথা বলে প্রসঙ্গান্তরে চলে যেত। কারণে অকারণে আমার কানের কাছে এসে ঘ্যান ঘ্যান করত নাদিরা তার প্রতি নয়, আমার প্রতিই অনুরক্ত। সুতরাং আমিই যেন তার দায়িত্ব নেই। অনবরত ঘষাঘষিতে পাথরের ঘাটও ক্ষয়ে যায়। আমারও মন গলল, নাদিরাকে গ্রহণ করতে রাজি হলাম।

আলাম ভাইয়ের বাসা থেকে ফেরার পথে অচেনা বাঙালীকে লিফট দেয়ার সময় মনিটর আরেকটি দুই নাম্বারী করল। আলাম ভাইয়ের যাদুকরী রোদ চশমাটা সে হাসিবকে ফেরত না দিয়ে আমাকেই দিতে বলল। লামীরার কাছ থেকে শুনেছে, সেই বিকেলে নাদিরার সাথে আমার ডেটিং আছে, রোদ চশমাটা আমাকে গছাতে পারলেই তার পথের কাঁটা সরে যাবে। অচেনা বাঙালী মনিটরের ছলায় ভুলে হাসিবের সাথে দুই নাম্বারী করে বাসায় যাওয়ার পথে রোদ চশমা আমাকে গছিয়ে দিয়ে গেল।

নাদিরার সাথে ডেটিংয়ে গিয়ে আমি বেকুব হয়ে গেছি। মাইরি! এইটুকুন শইলে এত্ত ভালবাসা তার আসে কোথা থেকে? এক পড়ন্ত যৌবনা মোটাসোটা মহিলা কবি ভিন্ন আর কারো মধ্যে আমি এত প্রেমাবেগ দেখি নাই। হাত ধরেছে তো ধরেছেই, আর ছাড়ে না। চুল ধরে একটু টান দেয়, নাক ধরে একটু টিপি দেয়, থুতনিতে তুতুতু করে। এত আদরের ধাক্কায় আমি হালায় ত্রাহি ত্রাহি করি আর পুংটা মনিটরের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করি। হালায় আমারে ফাসাইছে!

এত অত্যাচারের মধ্যেও অচেনা বাঙালীর কাছ থেকে আলাম ভাইয়ের রোদ চশমা পেয়ে আমার মনে দুষ্টুবুদ্ধির উদয় হয়। চশমা ছাড়াই প্রেমের যে তোড়, চশমা পাইলে তা কোনদিকে যায়, দেখার বিষয়। এমনও হইতে পারে, বিষে বিষক্ষয় হইয়া স্বাভাবিক জীবনেও ফিরে আসতে পারে আমার নাদিরা। পকেট থেকে আলাম ভাইয়ের রোদ চশমা বের করেই মুচকি হাসি দিয়ে নাদিরার দিকে ফিরলাম। সে আমাকে দেখে নির্বাক হয়ে গেল। মনে হচ্ছে প্রচন্ডভাবে শকড হয়েছে। পাগল চিকিৎসায় শক ট্রিটমেন্ট কাজে লাগছে ভেবে আমি মনে মনে পুলকিত হয়ে উঠি। সে পুলকের স্থায়ীত্ব খুব বেশি নয়। এক মিনিট, দুই মিনিট.......এভাবে টানা পাঁচ মিনিট পরে নির্বাক নাদিরার অধরপল্লব নড়ে ওঠে।

: আমাকে পিটাও!
:: অ্যাঁ!
: বাংলা বুঝ না? আমাকে পিটাও।

পার্সের ভিতর থেকে একটি ছোটখাট চাবুক বের করেই বলে,
: এটা নাও। শুরু কর।

এই মাল কোন মেয়ের পার্সে থাকতে পারে আমি স্বপ্নেও ভাবি নি। সমস্ত বোধশক্তি বিলুপ্ত হয়ে আমিই অপ্রকৃতিস্থ বোধ করছি।
নাদিরা গর্জে ওঠে,
: সময় নষ্ট করছ কেন? গো অ্যাহেড!

বিড়বিড় করে কি যেন আবৃত্তি করে সে। সম্ভবত কোনো রেফারেন্স মনে করার চেষ্টা করছে, যেখানে স্বামীর হাতে প্রহৃত হওয়া স্ত্রীর জন্য কতোটা ফজিলতের তা খুব স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে। সেই রেফারেন্সকে এক্সট্রাপোলেট করে প্রেমিকের হাতে প্রেমিকার প্রহৃত হওয়া যে আরো অনেক বেশি ফজিলতের, তা ও হয়তো সে প্রমাণ করতে চাইবে!

বিহবলতা হালকা কাটিয়ে উঠে আমি ধুম করে অন্যদিকে ফিরেই আলাম ভাইয়ের রোদ চশমাটা খুলে ফেলি। নাদিরার চোখে সেই খুনে ভাবটা আর নেই। একটু দূরে দেখি জনগণের ভিড়ের সুযোগে লামীরার সাথে দাড়িয়ে মনিটরটা মজা দেখছে। বদের হাড্ডি কোথাকার!

মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি, এই চশমা আর হাসিবকে দেয়া হবে না। যার মাল, তাকেই গছানো হবে। অর্থাৎ এটা ফিরে যাবে আবার আলাম ভাইয়ের হাতে। এত বয়স হয়ে গেল লোকটার, এখনো গীটার বাজিয়েই চলছে। এই যাদুকরী রোদ চশমায় তবু তার যদি কোনো গতি হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:০৪
৬৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×