আমাদের কর্তারা অনেকেই নীতি নির্ধারণ করতে ভালবাসেন। নীতি নির্ধারণ করা মন্দ নয়; অবশ্যই দরকারী। তবে সমস্যা হয় তখনই যখন সেসব নীতিকে বাস্তবে কাজের রূপ দেয়া যায় না। আপনার বস যদি নিজে কাজ করে উপরে ওঠেন তাহলে তার নীতি নির্ধারণে হয়ত বাস্তবায়নের বিষয়টি বিবেচনায় আসতে পারে। কিন্তু কোনো ব্যক্তি কোনো কাজ সম্পর্কে না জেনেই যদি নীতি নির্ধারণ করেন তাহলে প্রায়ই দেখা যাবে যে সেই নীতিকে বাস্তব কাজে রূপ দেয়া যাচ্ছে না। যেমনটি ঘটেছে এক ঘাসফড়িঙের ক্ষেত্রে।
এক ঘাসফড়িঙ পড়েছে মহাসমস্যায়। তার সমস্যা হলো শীতের সময় শীত তার পক্ষে অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এটি থেকে বাঁচার জন্য কী করা যায় তা জানতে সেই ফড়িং পাড়ি জমাল বিজ্ঞ পেঁচার কাছে। প্রাণীকূলের মধ্যে পেঁচার মতো বিজ্ঞ আর কেইবা আছে? পেঁচা তার সমস্যার কথা শুনল। এবং শোনার পর বিজ্ঞের মতোই মাথা নেড়ে সমাধান দিয়ে দিল: তুমি এক কাজ করো। শীতাকাল তুমি নিজেকে গুবড়ে পোকায় রূপান্তর করে ফেলো এবং শীতনিদ্রায় কাটিয়ে দাও পুরো শীতকাল।
এমন সহজ সমাধানের কথা ঘাসফড়িঙের মাথায় আসেনি। সে বেশ আনন্দে বাড়ি ফিরল। ফেরার আগে বিজ্ঞ পেঁচাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাতে ভুলল না। বাড়িতে এসে এবার সে সেই সমাধান কাজে লাগাতে চাইল। আর তখনই ঘটল বিপত্তি। আরে, এ সমাধানতো কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ঘাসফড়িং নিজেকে কীভাবে গুবরে পোকায় রূপান্তর করবে?
পরদিন আবার ধর্না দিতে হলো পেঁচার কাছে: বিজ্ঞ পেঁচা মহাশয়, আপনি যে পরামর্শ দিলেন সেটিতো কাজে লাগাতে পারছি না।
বিজ্ঞ পেঁচা মহাশয় এবার একটু ক্ষিপ্তই হলেন। বললেন: আমি নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, বাস্তবায়ন করার খুঁটিনাটি তোমাকেই বের করতে হবে!
পাঠক, আপনি কি এরকম পেঁচা দেখেছেন? নেই আপনার চারপাশে? আপনার অফিসে?