স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রি গুলোর বর্তমান অবস্থা টেক্সটাইল সেক্টরের সাথে জড়িত বাংলাদেশের সবাই খুব ভালোভাবে জানে । যদি এই দূরবস্থার কারন অনুসন্ধান করা হয়,তাহলে ২ টি কারন চোখে পড়বে-
১. দেশে গ্যাস বা জ্বালানি তেলের স্বল্পতা
২. কাচামালের( Raw materials) তথা কটন এর স্বল্পতা। বাংলাদেশের স্পিনিং মিল গুলো কটনের জন্য ১০০% আমদানী নির্ভর। আমদের দেশ মুলত ভারত,আমেরিকা,উজ বেকস্থান, থেকে কটন আমদানী করে। ভারত বর্তমানে কটন রপ্তানিতে বিধিনিষেধ বৃদ্ধি করেছে শুধু তাই নয় তারা Damping price এ আমাদের দেশে সুতা Export করছে। বাংলাদেশের স্পিনিং শিল্প ধ্বংশ হয়ে গেলে ভারত হঠাৎ করে সুতার দাম বাড়ীয়ে দিবে তখন আমাদের নীট শিল্পও ধ্বংশ মুখে পতিত হবে।
গ্যাস বা জ্বালানি তেল জনিত সমস্যাটি সার্বজনীন এবং এটি শুধু স্পিনিং বা টেক্সটাইল শিল্প নয় বরং সকল ভারি শিল্পের জন্য প্রযোজ্য।
দ্বিতীয় যে সমস্যা সেটির মুলত ভৌগলিক। টেকনোজলিকাল জ্ঞান আর মানসিকতার পরিবর্তন ছাড়া তা কাটিয়ে ওঠা মোটামুটি অসম্ভব। কারন বাংলাদেশে বানিজ্যিক ভাবে তুলা উৎপাদন খুব সম্ভবত অসম্ভব,এইঘনবসতি পুর্ন দেশে যেখানে পর্যাপ্তখাদ্যের উৎপাদন ই হয় না সেখানে তুলা উৎপাদনের চিন্তা করাও কষ্টকর। তুলা উৎপাদন একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার এবং এটির উৎপাদন কাজে প্রায় ২৭০ দিন সময় লাগে। অনেকে এক্ষেত্রে পাটের কথা বলে, পাট অবশ্যই অতি গুরুত্বপুর্ন ফাইবার। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এটি তুলার প্রতিস্থাপক নয়। গঠনগত দিক থেকে পাট তুলার থেকে আলাদা। তবে আমরা পাটকে Clothing বাদে অন্য কাজে যেমন Packing,Home textile, Carpet, Fancy item ইত্যাদি তৈরিতে খুব সহজেই কাজে লাগাতে পারি। এজন্য প্রয়োজন Technological knowledge । আর এই Knowledge যোগান দেবার দায়ীত্বটেক্সটাই ল শিক্ষা প্রতিষ্টানসমুহে র। টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠানগুলোত ে Jute Technology শিক্ষা দেবার জন্য প্রইয়োজনীয় অবকাঠামো আছে [তবে যেটি নেইতা হল আমাদের শিক্ষক- ছাত্রদের সদিচ্ছা। আমাদের চিন্তা ধারা বাজার ভিত্তিক যে বিষয়টির বাজার মুল্য ভাল সেটিই ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম পছন্দ। সিলেবাসের মাত্র ১০% এর মত জুট টেকনোলজি । যেখানে সমগ্র সিলেবাসের প্রায় ৮০% জুড়ে আছে Cotton Processing.
যাহোক এখন দেখা যাক তুলার বিপরীতে কি ব্যবহার করা যায়- যদিও তুলার বিকল্প তেমন কিছুই নেই তবে Blending করে cotton consumption কমানোর কথা বিবেচনা করা যায়। তুলার সাথে মুলত Modals, viscose,ইত্যাদি Blend করা হয়। এখানেও আমাদের টেকনোলজিক্যাল জ্ঞানের অভাব । অভিজ্ঞাতার বলে ভিসকোস বা মোডাল এর জন্যও আমরা ভারতের উপর নির্ভরশিল। তাদের কাছ থেকে কটনের সাথে সাথে এগুলোও আমাদের আমদানি করতে হয়।
শুধু তাই না Lycra নিটিং শিল্পের জন্য খুবই দরকারি একটি সুতা যেটিও আমাদের দেশে তৈরি হয় না। আমাদের তা ধার করতে হয়ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া,ভার ত, থাইল্যান্ড এর মত দেশ থেকে। আমাদের দেশে এই সকল কৃত্রিম ফাইবার তৌরীর কথা কেঊ কল্পনাও করে না এখন আমদের চিন্তা করতে হবে আমরা যদি দেশে সুতা তৈরী করতে চাই কি না? যদি চাই তাহলে Cotton থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতেই হবে এর বিকল্প কিছুই আছে বলে মনে হয় না। এদেশে তৈরি করতে হবে Man Made fibre (from Homemade Polymer chips not imported )
বাংলাদেশেই তৈরি হবে Spandex, Rayon,Modal, viscose, Milk fiber,আর সেই সাথে আলোর মুখ দেখবে দেশের স্পিনিংশিল্প ( তবে প্রচলিত কটন স্পিনিং নয়)।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০০