somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাদের পারভেজ নামের সেই পাকিপশু

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৬ ডিসেম্বর বাঙালি বীরত্বের কাছে নির্লজ্জভাবে আত্মসমার্পন করেছিল পাকিস্তানী সেনাবাহিনী। ঐদিন বিকাল ৪ টা ২১ মিনিটে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে জেনারেল নিয়াজী মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমার্পনের দলিলে স্বাক্ষরের সাথে সাথে সমার্পন করেন সকল সামরিক স্বাক্ষর- নিজ পিস্তল, বেল্ট, ব্যাজ- যেগুলো আর কখনোই তাদের পড়ার কথা নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটিই সর্ববৃহৎ আত্মসমার্পণের ঘটনা। সামরিক বিধিতে একজন সৈন্যের কাছে আত্মসমার্পনের চেয়ে আত্মহত্যা অনেক বেশি গৌরবের। আত্মসমার্পিত সৈন্য চিরকালই মাথা নীচু করে বাঁচে তার রাষ্ট্রে। শুধু আত্মসমার্পনকারীই নয় যথেষ্ট যৌক্তিক কারেণেও যদি কোন সৈন্য যুদ্ধবন্দি হয় তাকে আর কোনদিন স্বপদে ফিরিয়ে আনা হয় না, এটাই প্রচিলত যুদ্ধ বিধি। কিন্তু বিশ্বাসঘাতক রাষ্ট্র পাকিস্তান বরাবরই চলেছে উল্টো রথে। আত্মসমার্পিত সেনা অফিসারদের অনেককেই স্বপদে বহাল রেখেছেন, অনেককে আবার ভূষিত করেছে বীরোচিত রাষ্ট্রীয় সম্মানে। বিশ্বাসঘাতক রাষ্ট্রের তেমনই এক বিশ্বস্ত সেবক মেজর নাদির পারভেজ (Maj Raja Nadir Pervaiz) যাকে দুই দুইবার পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব সিতারা-ই-জুরাত (Sitara-e-Jurat) প্রদান করা হয়েছিল। ৭১ এর গনহত্যা, জাতিগত নিধন, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুন্ঠন এবং অগ্নিসংযোগের জন্য চিহ্নিত যে ১৯৫ সেনা অফিসার সরাসরি যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ছিলেন নাদির পারভেজ তাদের অন্যতম।

নাদির পারভেজ, যে নাম শুনলে এখনও শিউরে ওঠে পটুয়াখালী। ৬ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের কোম্পানি কমান্ডার নাদির পারভেজ ১৯৭১ এ পটুয়াখালী জেলার প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ছিলেন। তার নেতৃত্বেই হয়ে ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুণা ও পটুয়াখালীতে হাজার হাজার মুক্তিপ্রাণ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছিল, ধর্ষিত হয়েছিল অগণিত বাঙালি নারী। যার নাম শুনলে এখনও ভয়ে শিউরে ওঠেন ইটবাড়িয়ার বীরাঙ্গনারা।

আত্মসমার্পেনর পর যুদ্ধবন্দি (Prisoner of War-POW) অবস্থায় ১৭ সেপ্টম্বর, ১৯৭২ সালে কলকাতা থেকে পালিয়ে যায়। পাকিস্তানে ফিরলে তাকে চাকুরী থেকে অব্যহতি না দিয়ে, প্রচলিত সকল সামরিক নিয়মকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে তাকে রাষ্ট্রীয় খেতাব দিয়ে স্বপদে বহাল করে। ১৯৭৪ সালে নাদির পারভেজ মেজর থেকে লেঃ কর্ণেল পদে পদোন্নতি পেয়েও ব্যজ পড়া হয়িন কেননা এই সময়েই সামরিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে তার বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শালে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণা করা হয়। অভিযোগ ছিল কোনপ্রকার সামরিক অনুমতি না নিয়ে গোপেন নেওয়াজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ।নাদির পারভেজের দুলাভাই ও কাজিন ছিলেন তৎকালীন ক্ষমতাধর অফিসার লেঃ জেনারেল তারিক পারভেজ। তার বেদৌলতে বেকসুর খালাস ও চাকুরী হতে অব্যাহতি নেন। তারপর শুরু করেন ব্যবসা ও রাজনীতি। যোগদেন ইসলামী জামুহুরী ইত্তেহাদে (Islami Jamhoori Ittehad)। মুসলিমলীগের টিকিটে পরপর পাঁচবার ফয়সালাবাদ থেকে সংসদ সদস্য (MNA) নির্বাচিত হন। তিনবার মন্ত্রী হয়েছেন এই ঘৃণ্য অপরাধী । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী( ৮৭-৮৮ ), পানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী ( ৯১-৯৩ ) এবং যোগাযোগ মন্ত্রী ( ৯৭-৯৯ )। খুবই ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন নেওয়াজ শরীফের। সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ নাদিরের কোর্সমেট ছিলেন। নাদিরের ছেলের বিয়েতে পারভেজ মোশাররফকে দাওয়াত দেয়ায় নেওয়াজের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে। তার বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে ভয়ংকর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গতবছর ১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে মুসলিম লীগ থেকে ইস্তফা দেয়, এবং ঘোষণা করেন জীবনে আর কোনদিন রাজনীতি করবেন না। কিন্তু এপ্রিল ফুলের মতই আবারও প্রতারণা করলেন নাদির। ২০১৩ সালের ৫ মে যোগ দেন ইমরান খানের দল পিটিআইয়ে (Pakistan Tehreek-e-Insaf) । উল্লেখ্য নাদির পারভেজের বাবা নাদির খানও জিন্নাহর ঘনিষ্ঠ ছিল।

ওয়েব রেফারেন্সঃ
01. Click This Link
02. Click This Link
03. en.wikipedia.org/wiki/Raja_Nadir_Pervez
04. http://www.thenews.com.pk › Today's Paper
05. Click This Link
06. http://www.amarblog.com/pritomdas/posts/143374
07. http://www.samakal.net/2013/12/08/24949
08. Click This Link

৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×