সো, হিয়ার কামস থার্ড কিস্তি!! অনেকেই আছেন যারা ফেসবুকে সব গুলো লেখা একিসাথে চাইছেন। এভাবে পড়ুন, ভাললাগবে! অনেক ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইসি আমি, নানা ভাবে ফেস করতে হইসে নতুন দেশ, নতুন পরিবেশ! আমি যদি কিছুটা হলেও আপনাদের আমার অভিজ্ঞতা থেকে ভাগ দিতে পারি, আমি নিজেই সত্যি খুব খুশি হব! ধন্যবাদ!
আগের দুই পর্বের লিঙ্ক নিচে দেয়া আছে, যারা আগে পড়েন নি, পড়তে পারেন, ভাল না লাগতে পারে, খারাপ লাগবে না! আই সয়ার!
১৫ই অগাষ্ট ২০১৪ ইং
আরব দেশের গল্প। গল্প হলেও সত্য। একটা দেশের মালিক হতে হলে দেশের লোকজন এর মৌলিক অধিকার ফুলফিল করতে হবে। বলতে দ্বিধা নাই, আম্রিকার গোলাম, গোলামেশ্বর বাদশা একাজে খুব ই পটু। খাওয়া আর একাধিক বিবাহ নিয়ে এরা যে ব্যস্ত থাকে, তাতে আর কিছু লাগে না! ব্যাসিকালী এডমিনিস্ট্রেশন এর কন্ট্রোল আমেরিকান দের হাতে, সব কিছুই কম বেশী ওদের হাতে প্রসেস করা!
আজ হাসপাতালের গল্প। গল্প হলেও সত্যি। আমি যেখানে আছি, জায়গাটা বদু (গ্রাম) এলাকা। তো এখানে কেউ সিক হলে সে আগে মিউনিসিপাল হসপিটালে আসবে, তার সব কিছুই ফ্রী, এমন কি ঔষধ দিবে ফ্রীতে হাসপাতালের ফার্মেসি। তো ধরেন সে এখানে সুস্থ হল না, অথবা হাসপাতালের চেহারা পছন্দ হল না, এখন তাকে রেফার করা হবে নিকটতম শহর নাজরান। যদি ইমার্জেন্সী কেস হয়, তাহলে দ্রুত নিতে হবে। এখন আমাদের এখানে যেহেতু এয়ারপোর্ট নাই, সেহেতু ইমার্জেন্সীতে হেলিকপ্টার বা চপার ব্যবহার হয়, এটাও টোটালি ফ্রী। আর নতুবা এয়ার এম্বুলেন্স আছে। মোটামুটি অবস্থার রোগী পাঠানো হয় গাড়ি এম্বুলেন্স এ।
এখন রোগী নাজরানে আসল, রোগী সুস্থ হল না! নো টেনশন! যদিও নাজরানে রাজকীয় হাসপাতালের অভাব নেই, কিন্তু রোগী আরো ভাল ট্রিটমেন্ট চায়, ঠিকাসে ভায়া, নো প্রব্লেম, সরকার রোগীর প্লেন ভাড়া দিবে রাজধানী রিয়াদ পর্যন্ত। এখন, রোগী তো একা যেতে পারে না, তার সাথে যাবে আত্মীয়, কথা হল কয়জন? ডাক্তার যে কয়জনের পার্মিশন দিবে সে কয়জনের প্লেন ফেয়ার দিবে সরকার। রোগী সিরিয়াস কেস হলে সাথে ডাক্তার ও সিস্টার/ব্রাদার যাবে। ইউজুয়ালী ভারতীয় উপমহাদেশীয় ডাক্তাররা সিস্টার দের বাঁচান, কারন ফাক পেলেই সিস্টারদের চেপে ধরে আরব চুতিয়ারা।
রোগী এখন রিয়াদে। রোগী না হয় হাসপাতালে থাকল, আত্মীয়স্বজন কই থাকবে? কি খাবে? সরকারী খরচে হোটেলে থাকবে, হোটেলে খাবে! এখন রিয়াদে কিছুদিন থেকে রোগীর আর ভাল্লাগেনা, বৈদেশে না গেলে আর হইতেসে না মামা!! ডাক্তার, তুমি লেখ, বিদেশে যাওয়া দরকার, কি লেখবা না? মামলা করব, মোরে চেন? আনা সৌদ! ডাক্তার চিন্তা করে, এই মামলা যদ্দিন চলবে সে ততদিন বাড়ি যেতে পারবে না, ঠিকাসে, যাও বিদেশ। রোগীর আমেরিকা যাওয়া-আসা, চিকিৎসা এবং তার আত্মীয়ের থাকা খাওয়া যাবতীয় খরচ সরকারের!!
বলেন, এদেশের লোক খাওয়া আর বিয়ে ছাড়া অন্যকিছু কেন ভাববে? তাও যদি ভালমত কোন কিছু খেতে জানত!!
১৮ই অগাষ্ট ২০১৪ ইং
ডিউটি শেষে বাসায় যাব, বাসা ৭৫ কিমি দূরে অন্য শহরে। এক ইজিপ্সিয়ান, এক সৌদি, আর এক পাকিস্তানীরর গাড়ী করে অর্ধেক রাস্তা পার হলাম, আসলাম ঘাতানে। মরুভূমির রোদ মাথায় নিয়ে দাড়ায় আছি, কোন গাড়ী নাই, একটা ছায়া নাই। অনেকক্ষন পর দুই আরব চ্যাংড়া আসল, চেহারা দেখে সুবিধার মনে না হলেও গাড়ী নাই দেখে সাদিক দ্বয়ের গাড়িতে উঠলাম। বেশ খাতির করল, হাম্বিয়াত (মিরিন্ডা) দিল খাইতে, এখন সাদিক আমার ভাষা জানেনা, আর আমার আরবি ভয়াবহ! তাই জিগেস করলাম
-আন্তা কালাম ইংলিশ? ( ইংরেজি জানো?)
-ওয়াল্লা, সাদিক লাজেম! (আল্লাহর শপথ, অবশ্যই বন্ধু!!)
এরপর সে তার পার্ফরমেন্স দেখাইল, আমারে
জিজেস করল
- হোয়াত ইজ ইয়োর নেইম, সাদিক?
-নাম বলে বল্লাম, হোয়াট ইজ ইয়োর্স?
- সাদিক আমার দাত বের করে বলে, ওয়াল্লা! আনা মাফি মালুম ইংলিশ!
আনা ফি কুল্লি ইংলিশ!
(আমি খালি বলতে পারি, সাদিক, বুঝি না!!)
আমার লেখা আরব্য রজনীর গল্প গুলো! প্রথম পর্ব!
আমার লেখা আরব্য রজনীর গল্প গুলো! দ্বিতীয় পর্ব!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪১