somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিবসেনা এবং বিজেপি ভারতে আবার সাম্প্রদায়িক বাধানোর চেষ্টা করছে.....কেনো এটা কি ওদের নিজের কেনা দেশ?

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে সামপ্রদায়িক শক্তিগুলো ব্যাপক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আরএসএস-এর মতো কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো সারা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে তত্পরতা শুরু করেছে। বিজেপি, শিবসেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদসহ অন্যান্য নানা হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতাদের সামপ্রতিক বিবৃতি ও কার্যকলাপে ঘোর সংশয় সৃষ্টি হয়েছে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র বহাল থাকবে কিনা তা নিয়ে। ওই সব সংগঠনগুলোর ছোট বড় মাঝারি প্রায় সব নেতার মুখেই এখন কার্যত ‘হিন্দি, হিন্দু এবং হিন্দুস্তান’ প্রসঙ্গ উঠে আসছে বারবার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন সংবিধানের অন্যতম রক্ষক হলেও তিনিও কম যাচ্ছেন না কিছুতে। তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে হিন্দুত্ববাদী একটা বড় অংশ উপস্থিত ছিলেন। ‘জয়শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তথা তার সহযোগীদের অভিনন্দিত করা হয়েছিল সেদিন। বস্তুত তারপর থেকে এখন খোলাখুলি হিন্দুত্বের আবহাওয়া ছড়ানো হচ্ছে সারা দেশে।
৬৮তম স্বাধীনতা দিবসে দিল্লির লালকেল্লায় দেয়া ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিনবার ‘ভারত মাতা কী জয়’ ধ্বনি দিয়েছেন। ‘জয় হিন্দ’ এবং ‘বন্দে মাতারম’ ধ্বনিও দিয়েছেন তিনবার করে। শেষোক্ত ধ্বনি দুটি অবশ্য ডানপন্থী প্রায় সব দলগুলোই দিয়ে থাকে। কিন্তু ‘ভারত মাতা কী-জয়’ ধ্বনি সাধারণত হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমপ্রতি জাপান সফরে গিয়ে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদ্ভগবত গীতা উপহার দিয়েছেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে। শুধু তাই নয়, হিন্দু সন্যাসী বিবেকানন্দের বই ও উপহার দিয়েছেন তাকে। হিন্দুত্ববাদী দলগুলো স্বামী বিবেকানন্দকে তাদের অন্যতম আদর্শ বলে মনে করে থাকে। তার বিখ্যাত উক্তি ‘গর্ব করে বল আমি হিন্দু’ কে নানাভাবে উপস্থাপন করে তারা।
ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে কোনো একটি দল বা সংগঠনের পক্ষ থেকে কি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন? না ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বিদেশ সফর করেছেন? গীতা উপহার দেয়া নিয়ে বিতর্ক উঠতে পারে সেকথা অবশ্য নরেন্দ্র মোদি নিজেই স্বীকার বলেছেন ‘আমাদের দেশের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ মানুষজন হয়তো এতে বিচলিত হতে পারেন।’
কংগ্রেস দলের মুখপাত্র রশিদ আলভি এ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিজেপি নেতা শেষাদ্রি চারী সাফাই দিয়ে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের লক্ষ্য করে ওই কথা বলেছেন।’
এসবের আগেই অবশ্য ‘গুজরাট ল’ সোসাইটি’ আয়োজিত এক সম্মেলনে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি এ আর দেব রাখঢাক না করেই মন্তব্য করেছেন ‘স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকেই গীতা, মহাভারত পড়ানো উচিত।’ তিনি যদি একনায়ক হতেন প্রথম শ্রেণি থেকেই তা চালু করে দিতেন বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
সমপ্রতি বিজেপি সংসদ সদস্য ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতা যোগী আদিত্যনাথ একের পর এক মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে চলেছেন। আর এস এস এর প্রধান মোহন ভগবত হিন্দুত্ব এবং হিন্দু রাষ্ট্রের পক্ষে প্রচার করছেন। শিবসেনা নেতা বলছেন- একথা তো আমরা অনেক আগেই বলেছি। একই প্রসঙ্গে গোয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পাররিকার, উপমুখ্যমন্ত্রী ফ্রান্সিস ডিসুজা, মন্ত্রী দীপক ধবলীকর প্রমুখ বিবৃতি দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন।
বিজেপি নেতা সুব্র্যমনিয়ম স্বামী খুঁচিয়ে তুলেছেন রামমন্দির ইস্যু। দেশের সাধু-সন্যাসীরাও সম্প্রতি দ্রুত রামমন্দির নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়াও বলেছেন, যে কোনো মূল্যে রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে। স্বভাবতই ধ্বংস করা বাবরি মসজিদ চত্বরের ভবিষ্যত্ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ ওইসব নেতাদের দাবি ‘মন্দির ওহি বনায়েঙ্গে’ অর্থাত্ মন্দির ওখানেই তৈরি করতে হবে।
আর এস এস নেতা মোহন ভগবত দেশজুড়ে হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন। সামনের ৫ বছর নাকি তাদের অনেক কাজ বাকি।
বিজেপি মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন, মুখতার আব্বাস নাকভি, এম জে আকবর প্রমুখ নিজ ধর্মের বাইরে অন্য ধর্মাবলম্বীকে বিয়ে করলেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দার লক্ষ্যে কথিত ‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে তোলপাড় করছে বিজেপি এবং অন্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। বিষিয়ে তোলা হচ্ছে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে সুসম্পর্ককে। সামপ্রদায়িক দাঙ্গায় অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক সঙ্গীত সোমসহ অন্য অনেক অভিযুক্তরাও এখন পাচ্ছেন জেড প্লাস অথবা জেড পর্যায়ের সুরক্ষা।
সমপ্রতি আলিগড়ের অসরোইতে ১৯ বছর আগে হিন্দু থেকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়া ৭১ জনকে ‘ঘর ওয়াপসী’ বা কথিত ‘ঘরে ফেরা’ কর্মসূচির মাধ্যমে ফের তাদের হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এখানকার সংশ্লিষ্ট গির্জাটি এখন রাতারাতি শিব মন্দিরে পরিণত হয়েছে।
আলিগড়ের খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের নেতা ওজমন্ড চার্লস এসব দেখেশুনে মন্তব্য করেছেন ‘এটা কী হিন্দুরাষ্ট্র তৈরি হওয়ার লক্ষণ নয়?’
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×