somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম পরিচয়ে নয়, রহিঙ্গাদেরকে লড়াই করতে হবে নিজস্ব জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুধু রহিঙ্গা মুসলিমদের উপরই নির্যাতন হচ্ছে তা নয়। সারা জগতজুড়েই কথিত মুসলমানের উপরে এমন নির্যাতন চলছে। ঘটনাকে এমনভাবে বর্ণনা করা হয়, অন্য ধর্মালম্বীরাই শুধু কথিত মুসলমানের উপর নির্যাতন করছে। কিন্তু ঠিক একইভাবে কথিত মুসলমানরা যে কথিত মুসলমানের উপরে নির্যাতন করছে, কথিত মুসলমানদের মধ্যে এমন অভিযোগ শুনা যায় না। কারণ মধ্য-প্রাচ্যের দিকে তাকালেই আমরা এ দৃশ্য স্পষ্ট দেখতে পাই।

কথিত মুসলমান যখন কথিত মুসলমানের উপরে আঘাত হানে বা নির্যাতন হত্যা লুন্ঠন করে, তখন অন্য রাষ্ট্রের কথিত মুসলমানেরা কোন প্রতিবাদ করে না, যেমন করে নি একাত্তরে বাংলাদেশের জন্য। বরং সৌদি আরব তো সরাসরি বাঙালীর এই স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলো। তখনও এই দেশে শতকরা আশিভাগ কথিত মুসলমান ছিলো। কিন্তু তারা কথিত মুসলমান হলেও, যুদ্ধ করেছিলো বাঙালী জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার জন্যে। তখন তারা কখনও কোন রাষ্ট্রের কাছে করুণা চেয়ে বলে নি, "আমরা মুসলমান জাতি, সারাবিশ্বের মুসলমানেরা আমাদেরকে সাহায্য করো।" বরং তারা বলেছিলো, "আমরা বাঙালী! পাকিস্তানীরা আমাদের বাঙালী জাতিসত্তাকে ধ্বংস করতে আমাদেরকে হত্যা করছে, লুন্ঠন করছে, ধ্বর্ষন করছে। এই জগত থেকে বাঙালী জাতিসত্তাকে বিলীন করার চেষ্টা করছে। তাই বাঙালী জাতিসত্তা রক্ষার্থে বিশ্ববাসী এগিয়ে আসুন।" হয়তো তাই আল্লাহ সারাবিশ্বের সকল জাতির মধ্যে, বাঙালী জাতিসত্তা রক্ষার্থে করুণার অনুকম্পা সৃষ্টি করেছিলেন। তাই ধর্ম বর্ণ ও জাতি বৈষম্যের ভদাভেদ বাদ দিয়ে সারাবিশ্বের মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছিলো বাঙালী জাতির পাশে।

কথিত মুসলমানেরা যতোদিন পর্যন্ত রহিঙ্গাদেরকে মুসলিম পরিচিতি উপস্থাপন করে সাহায্য চাইবে, ততোদিন আল্লাহ তাদের সাহায্যে মানুষের মনে কোন অনুকম্পা সৃষ্টি করবেন না। এর নিদর্শন আমরা মধ্য-প্রাচ্যে কথিত মুসলমানের উপর এতো হত্যা নির্যাতনের পরেও আল্লাহর সাহায্যের কোন নমুনা খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ কথিত মুসলমানেরা আসলে মুসলিমের কোন সংজ্ঞায় পড়ে না বলেই আল্লাহ তাদের পাশে নাই। কথিত মুসলমানেরা হলো শয়তানের জগতে শয়তান দ্বারা বিভ্রান্তকারী আদম-সন্তান। যারা আল্লাহর প্রকৃত-মুমিন(অন্ধবিশ্বাসী নয়, আল্লাহর অনুভূত বিশ্বাসী) ও মুত্তাকীন, শয়তান তাদেরকে কোনরূপ স্পর্শ করতে পারে না। কারণ তারা আল্লাহ হেফাজতে সবসময় থাকেন। তাই আল্লাহ কথিত মুসলমানের হেফাজত দানে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ নন।

রহিঙ্গাদেরকে প্রথমত রহিঙ্গা জাতি বলেই পরিচিতি দিতে হবে। ওদেরকে লড়াই করতে হবে তাদের জাতিসত্তা রক্ষার্থে। প্রয়োজনে তাদের জাতিসত্তাকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাদের জন্য ভূখণ্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ নিজস্ব ভূখণ্ড না থাকলে জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা লাভ করে না। জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা লাভের জন্য যা মৌলিক প্রয়োজন তা হলো, নিজস্ব ভূখণ্ড, প্রতিষ্ঠিত নিজস্ব ভাষা এবং নিজস্ব সংস্কৃতি। তারপরেই অন্য জাতির পরাধীনতা থেকে নিজের জাতিসত্তাকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করতে হবে। তবেই না আল্লাহ সেই জাতির জন্য এগিয়ে আসবে। কারণ আল্লাহ নিজেই বলেছেন, সকল জাতি ও ভাষাকে তিনিই সৃষ্টি করেছেন এবং প্রতিষ্ঠা দান করেছেন। অতএব কথিত মুসলিম সেজে কথিত মুসলমানের কাছে করুণার অনুকম্পার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করলে আল্লাহ কারো অন্তরে করুণার অনুকম্পা সৃষ্টি করবেন না। বরং কথিত মুসলমানরা আহাজারী করছে যে রহিঙ্গা জাতির উপরে নয়, মগরা মুসলিমের উপরে অত্যাচার করছে। ফলে কথিত মুসলমানদের এই মিথ্যাচারের জন্য আল্লাহ তাদেরকে ইসলামীক-জঙ্গী বলে কলুষিত করছেন।

মুসলিম পরিচয়ে নয়, রহিঙ্গাদেরকে লড়াই করতে হবে নিজস্ব জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০১
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×