somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাড়িয়ে তুলুন ইচ্ছাশক্তি

১২ ই জুন, ২০১১ রাত ১২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আলো ঝলমলে সুখের দিনে মনের কোণে জমে থাকা মেঘলা আকাশ ছায়া ফেলতে পারে নিত্যদিনের চলার পথে। জীবনের এই প্রতিনিয়ত পরিবর্তনে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে চলতে প্রয়োজন প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি। সাফল্য-ব্যর্থতা এই দুটোকে কেন্দ্র করেই জীবনের পথচলা। তবে প্রচণ্ড ইচ্ছা শক্তি থাকলেই যেকোনো কাজই সাফল্যে রূপান্তরিত করতে পারবেন আপনি। এ বিষয়ে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার

অনেক সময় মনে হয়, ডেডলাইন মেনটেইন করাই হয়তো আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য। আর এই ইঁদুর দৌড়ে পিছিয়ে পড়লেই আঁকড়ে ধরে ডিপ্রিশন আর হেরে যাওয়ার যন্ত্রণা। তাহলে কি এই স্ট্রেস থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনো রাস্তা নেই? অবশ্যই আছে। স্ট্রেস, টেনশন, অ্যাংজাইটি মোকাবিলা করার একটাই অস্ত্র, তা হলো—প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি। অর্থাত্ আয়নার সামনে নিজেকে কয়েকগুণ আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেখার চেষ্টা করুন। সাধারণত নিজেকে নিয়ে একটু বিশ্লেষণ করলেই দেখতে পাবেন যে, আমরা অনেক কাজ শুধুমাত্র ইচ্ছা করে না বলেই সম্পন্ন করতে পারি না। মনকে নিয়ন্ত্রণ করে আপনার ইচ্ছাশক্তিকে বারিয়ে তুলতে পারলেই আপনিও পারবেন পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি কাজ করতে।

দৃষ্টিভঙ্গিতে আনুন ইতিবাচকতা

আমরা মনে যা ভাবছি, তার ওপর নির্ভর করে আমাদের কথাবার্তা, আচার-আচরণ এমনকি বিভিন্ন বিষয়ে নেওয়া হয় বহু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ধরা যাক, কারও ব্যবহারে আপনি খুব অপমান বোধ করেছেন; সারাদিন সেই অপমানবোধই আপনার মধ্যে জাগিয়ে তুলছে রাগ, বিদ্বেষ, সন্দেহের মতো নানা খারাপ অনুভূতি। দিনের শেষে হয়তো দেখা গেল অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ফেলেছেন, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন এবং নিজেকে আরও সমস্যার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। ঠিক এ সময় কাজ দেবে পজিটিভ থিঙ্কিং। জীবনের নানা চ্যালেঞ্জ, প্রতিকূলতার মধ্যে এই পজিটিভ আউটলুকই ফিরিয়ে আনতে পারে আশা, আনন্দ এবং স্বস্তি। একটি সমৃদ্ধজাতিকে যদি একটি মনোরম প্রাসাদের সাথে তুলনা করি, তবে জাতির অনেক সদস্যই হচ্ছে সেটির খুঁটি। কেউ ইট, বালু, সিমেন্ট যাই হোক, কারও গুরুত্বই কম নয়; অত্যন্ত মূল্যবান। সবার শক্তি, সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসেই মজবুত প্রাসাদ গড়ে উঠতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, যার ক্ষমতা, যোগ্যতা যে পরিসরে যতটুকুই থাকুক, তা ভেজালমুক্ত, খাঁটি হওয়া চাই। একজন প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব—দায়িত্ব গ্রহণ করেন, সুবিবেচনা করেন, সকলের লাভ হোক এই চিন্তা করেন, সতর্কতার সাথে শব্দচয়ন করেন, অপরের ব্যবহারের ইতিবাচক ব্যাখ্যা করেন; সমালোচনা এবং অভিযোগ করেন না, আলোচনা করেন তবে তর্ক করেন না, খোশগল্প করেন না। এই রকম ব্যক্তিত্ব গঠনের প্রতি হচ্ছে, প্রসন্ন এবং সদয় হওয়া, ভালো শ্রোতা হওয়া, সত্ ও আন্তরিকভাবে কাজের মূল্য উপলদ্ধি করে অন্যের প্রশংসা করা, ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে স্বেচ্ছায় ভুল স্বীকার করে নেওয়া, কেউ ভুল স্বীকার করলে তা মেনে নেওয়া এবং তার মুখ রক্ষার সুযোগ দেওয়া, প্রতিজ্ঞাকে অঙ্গীকারে পরিণত করা, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, অন্যের কাছে কৃতজ্ঞতার আশা না করা, নির্ভরযোগ্য হওয়া এবং আনুগত্য অনুশীলন করা, উদ্যমী হওয়া, বিদ্বেষ পোষণ না করে ক্ষমা করা, সততা-সার্বিক ন্যায়পরায়ণতা ও আন্তরিকতা অনুশীলন করা, বিনম্রতা অনুশীলন করা, অপরকে বোঝবার চেষ্টা করা এবং তার সম্পর্কে মনোযোগ দেওয়া, প্রতিদিনের ব্যবহারে সৌজন্যমূলক আচরণ অনুশীলন করা, বিদ্রুপাত্মক বাক্য পরিহার করা, অন্যকে দমনের মনোভাব না থাকা, বন্ধুলাভের জন্য বন্ধু হওয়া। নিজের চিন্তাভাবনার ওপর নিয়ন্ত্রণ আনুন। কোনো মন্তব্য বা ঘটনা আপনার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার আগেই সেটা মনে মনে একবার কাটাছেঁড়া করে নিন। ঠিক যে কথা বা ঘটনা আপনার মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করছে, সেটাকে যুক্তি দিয়ে সাজিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন। যদি আপনার কোনো দোষ থেকে থাকে, তাহলে সেটিকে একটা টার্নিং হিসেবে নিন, যাতে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার না হতে হয়। যদি আপনার আদৌ কোনো ভুল না হয়ে থাকে, তাহলে অন্তত নিজের কাছে নিজে পরিষ্কার আছেন জেনে নিশ্চিন্তে থাকুন। অপরের ভুলের জন্য নিজের মনকে কলুষিত করা কোনো কাজের কথা নয়।

l ‘আমি পারবো’ নিজের প্রতি এই বিশ্বাস রাখুন।

l যখন যে কাজ করতে ভালো লাগে সেটি করুন।

l ইতিবাচক চিন্তাভাবনা দিয়ে সব কিছু বিবেচনা করুন।

l লক্ষ্য অর্জনে সচেতন হোন।

l ইচ্ছাশক্তি বাড়াতে সৃজনশীলতাকে কাজে লাগান।

l যে কাজই করেন না কেন স্বতঃস্ফুর্তভাবে করুন।

পারস্পরিক সম্পর্ক ও বন্ধুত্বের

ব্যাপারে সচেতন থাকুন

অসচেতন বন্ধুর চাইতে সচেতন শত্রু উত্তম। অসচেতন ব্যক্তির গভীর সংস্পর্শ সচেতন ব্যক্তির বড় বিড়ম্বনা। কী ধরনের মানুষের সঙ্গে মেলামেশা শুধু তাই দিয়ে নয়, কাদের সঙ্গ এড়িয়ে চলে তাই দিয়েও মানুষের চরিত্র বিচার হয়। প্রত্যেকের মধ্যেই প্রতিভার স্ফুলিঙ্গ বিদ্যমান। চরিত্রবান মানুষের সংস্পর্শে এসে এই স্ফুলিঙ্গ সহস্র শিখায় দীপ্তিমান হয়ে উঠতে পারে, আর সম্পর্ক রক্ষা করতে প্রয়োজন অন্যের প্রতি আগ্রহ, অন্যকে বোঝার চেষ্টা, হাসি হাসি মুখ। অতিদর্প ভালো নয়, আড়ালে সমালোচনা কখনো নয়; অন্যকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রচেষ্টার দ্বারা মহত্তর জীবনে উত্তরণের পথ খুলে যেতে পারে। বন্ুদের মধ্যে যারা প্রচণ্ড ইচ্ছা শক্তির অধিকারী, তাদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন। কোনো সমস্যায় পড়লে তাদের থেকে পরামর্শ চান। এরা আপনার কর্মক্ষমতা বাড়াবে, সাহস দেবে এবং জীবনকে ভালোভাবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করবে। যারা নেগেটিভ টেম্পারমেন্টের মানুষ অথবা সবকিছুর অহেতুক সমালোচনা করেন, অন্যের সাফল্য সন্দেহের চোখে দেখেন, তাদের এড়িয়ে চলুন। প্রতিদিন সকালে উঠে নিজেকে নিজে বলুন, ‘আমি ভালো আছি। আমি ভালো থাকব। দৃঢ় বিশ্বাস এবং ইচ্ছাশক্তির ওপর নির্ভর করে বলা এই কথাগুলো আপনাকে নতুন সাহস জোগাতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া ‘আমার কপালটাই খারাপ বা আমার দ্বারা কিছু হবে না।’ এ জাতীয় মন্তব্য করা বন্ধ করে দিন। বরং এ কাজটা শক্ত কিন্তু আমি পারব এ চিন্তাটাই মনে গেঁথে নিন।

বই পড়ার অভ্যাস

গড়ে তুলুন

সেলফ ইমপ্রুভমেন্ট বা পার্সোনালিটি ডেভেলপমেন্টের বইও দৈনন্দিন জীবনের জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। নিজের লক্ষ্য ঠিক করুন। যেকোনো কাজকর্মই হোক বা ক্যারিয়ারথ সব ব্যাপারেই একটা খসড়া পরিকল্পনা থাকা খুবই জরুরি। প্রতিদিন না হোক সপ্তাহের শুরুতে বাড়ির কাজ আর বাহিরের কাজের দুটি আলাদা আলাদা চেকলিস্ট বানিয়ে নিন। একেকটা কাজ শেষ হলেই লাল পেন্সিল দিয়ে কেটে দিন। সব কাজ ঠিকমতো শেষ হলে নিজেকেই ছোট একটা প্রাইজ দিন। ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণ করতে করতে আত্মবিশ্বাস থেকেই গড়ে উঠবে ইচ্ছাশক্তি। সারাদিনে যা করেছেন, তা দিনের শেষে মনে করুন। কোন কাজটি পারেননি, সেটা নিয়ে চিন্তা না করে যেখানে সাফল্য পেয়েছেন সেটা নিয়ে ভাবুন। যে কারণে সফল হয়েছেন সেটা অন্যান্য কাজে প্রয়োগ করুন। দেখবেন নতুন কাজের প্রতি আপনার ইচ্ছাশক্তি বাড়বে।
Click This Link
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×