নফস এবং রূহ এ দুটি অংশ নিয়েই মানুষ ৷ রুহ কে কেন্দ্র করে তিনটি পরিবৃত্ত স্বরূপ নফস বেষ্টিত ৷ ব্যাপারটাকে একটু দৃষ্টিসুলভ করার জন্যে বলা যায়- নিওক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ইলেক্ট্রন যেমন পরিভ্রমণরত বা সূর্যকে কেন্দ্র করে গ্রহ গুলো যেমন পরিভ্রমণরত ঠিক তেমনি রূহের চতুর্দিকে নফসের তিনটি স্তরের অবস্থান ৷ সর্বশেষ স্তরটি ১৷ নফসে আম্মারা- খুব শক্তিশালী নফস যা ষড়রিপুর দড়ি দ্বারা শক্ত ভাবে বাঁধা ৷ ষড়রিপু হল কাম,ক্রোধ,লোভ,অহংকার,হিংসা,পরশ্রীকাতরতা ৷
কোন মানুষ যদি আধ্যাত্মিক গুরু বা মুর্শিদের দ্বারস্থ হয় এবং মুর্শিদের নির্দেশে থাকে এবং যদি আল্লাহর ইচ্ছা থাকে তবে সে এই দড়ির বাঁধন খুলে পরবর্তি স্তরের নিকটবর্তী হবে ৷ পরবর্তি স্তর হল- ২৷ নফসে লাউয়ামা- নফসের এই স্তর 'বিবেক' নামে পরিচিত ৷ এ স্তরে ন্যায়-অন্যায়,ভাল-মন্দ কাজের বিচার করা যায় ৷ ষড় রিপুর তাড়নায় কোন মন্দ কাজ করলে অনুশোচনা হয়ে থাকে ৷ অনুতাপ বোধ করা এই নফসের বৈশিষ্ট্য ৷ মানুষ যখন সাধনার মাত্রা বৃদ্ধি করে তখন নফসের পরবর্তি ধাপ ৩৷ নফসে মোতমাঈন্না- তে অধিষ্ঠিত হয় যা রুহের সবচেয়ে নিকটবর্তী স্তর ৷ এ স্তরে উন্নীত ব্যাক্তি প্রশান্ত হৃদয়ের অধিকারী ৷ কোন পাপ পঙ্কিলতা তাকে স্পর্শ করতে পারে না ৷ নিষ্কলুষ শুদ্ধতম জীবনাচরণে সদা সচেষ্ট থাকে ৷
এই স্তরে রুহ তথা আত্মার সাথে মানুষের পরিচয় হয় ৷ কেন্দ্র তথা আত্মায় আল্লাহর সিফত/গুন প্রতিফলিত হয় ৷ ধীরে ধীরে স্রষ্টা ও সৃষ্টির সম্পর্ক ও নিগূঢ় রহস্য সম্পর্কে মানুষ জ্ঞান লাভ করে ৷ প্রচন্ড রকম সুখে তাঁর অন্তর উদ্ভাসিত থাকে ৷ বেহেস্তের সুখ তখন সে উপভোগ করার যোগ্যতা অর্জন করে ৷ আল্লাহর নৈকট্য এবং দীদার লাভ করে ৷ এ ধাপে মানুষ ও আল্লাহর মিলন সাধন হয় ৷ তখন মানুষের কথা আল্লাহর কথা হয়, মানুষের শ্রবন আল্লাহর শ্রবন হয়, মানুষের চোখের দৃষ্টি আল্লাহর দৃষ্টি হয় ৷
এ ধরনের মানুষ আল্লাহর অলী নামে পরিচিত ৷ তখন তাঁরা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাঁদের তা দান করেন ৷ আল্লাহ তাঁদের ভালবাসেন ৷ তাঁদের যারা বিরোধিতা করে আল্লাহ তাদের সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করেন ৷
এ সকল মানুষ যা বলেন তাই মানুষের জন্য আইন কানুন, জীবন বিধান ৷ কারন তাঁদের কথা তখন তাঁরা বলেন না ৷ মূলতঃ আল্লাহই বলেন ৷ এমনকি তাঁদের দ্বারা অনেক অলৌকিক কাজ ও হয়ে থাকে ৷ তা কোন জাদু নয় ৷
এগুলো কারামত ৷
আল্লাহ সর্বজ্ঞ ৷
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯