somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাত কামড়াই আর বুঁদ হয়ে থাকি জগজিৎ- এই।(বাঙলা ব্লগিঙের তিন বছর শেষে)

১৩ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জগজিৎ সিং- গজলের মহরুহ। আমাকে মুগ্ধ করে রেখেছেন বিগত এক দশক।
এমন একটা সময় ছিল যখন দিনের আঠারো ঘন্টাই বোধহয় জগজিৎ শুনতাম। আনন্দ-বেদনায় মিশেছিল-
‘খুমার গাম মেহেক তি ফিজা মে জীতে হ্যায়,
তেরে খায়াল কি আব-হাওয়া মে জীতে হ্যায়।’

Sober gaiety and redolent air,
Prettify your memories here.
Abuzz with pals good n' true,
I beguile admiring your virtue.


কিংবা

‘আপ কো দেখ কার দেখ্‌তা রেহ গায়া,
কেয়া কাহু, আউর কেহনে কো কেয়া রেহ্‌ গায়া’।

While watching you, I remain watching,
What’ll I say and what’s rest saying?


মাঝখানে কিছুদিন কিশোর কুমার আর অনুপ জালোটায় মজে ছিলাম।
ফিরে এসেছি আবার জগজিৎ-এ।
‘আপ কে দিল নে হামে আওয়াজ দি, হাম আ গায়ে,
হাম তো লে আয়ি মোহাব্বাত আপকি, আ গায়ে।’

You’re heart calls me, I came,
With the love for you, I came.


জীবনটা আসলে এক রকম হাত কামড়ে কামড়েই পার করে দিলাম।
বলতে গেলে কিছু করতে পারি নি, আবার অনেক সময় করার মত থাকলে নিবীর্য্যতায়-কাপুরুষতায় চুপ মেরে থেকেছি।
‘কাভি খামোশ বেইঠো গি, কাভি কুছ গুনগুনাও গি;
ম্যায় উত্‌না ইয়াদ আঁয়ু গা, মুঝে যিত্‌না বুলায়ো গি!’

Sometime sit silence and sometime murmur,
I’ll be as memorized much as you remember.


ভীড় মাড়িয়ে-যানজট ঠেলে ৯টা-৫টা অফিস করে আমরা কিছু টাকা আয়-রোজগার করি। সেখান থেকে থেকে বছর শেষে কিছু টাকা আবার সরকারকে ট্যাক্সও দিই। সে টাকায় কেউ কেউ সপরিবারে ট্যুর করেন ইউরোপ-আমেরিকা। আমি হাত কামড়াই।
‘আদমী আদমী কো কেয়া দে গা?
যো ভী দেগা, ও হি খুদা দে গা!’

What can a man donate other?
It’s God who is the only provider.


ব্যালকনি-ছাঁদ থেকে ফেলে দিয়ে, রাতের আঁধারে কুপিয়ে আমার দেশের ভবিষ্যতকে মেরে ফেলা হয়। প্রকাশ্য দিবালোকেও পিটিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে নেয়া হয়। তারপরে আরাম কেদারায় হেলান দিয়ে কেউ কেউ আইন-শৃংখলা পরিস্থিতিকে ভাল বলেন। হাত কামড়াই।
‘খুদা হাম কো অ্যায়সে খুদায়ী না দে,
কে আপনি সি-ভা কুছ দিখা ঈ না দে!’

O God! Never promote me godliness
As I can see myself unless


ছোট-ছোট গাড়িগুলোকে সাইড দিতে দিতে আমাদের বাসগুলো শেষপর্যন্ত ব্রীজকেও সাইড দিয়ে নদী-নালায় নেমে যায়। লঞ্চগুলোর অবশ্য সাইড দেয়ার দরকার হয় না-এমনিতে যাত্রীদের সাথে নিয়েই নদ-নদীর নাব্যতা পরিমাপে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বেঁচে থাকা স্বজনেরা কাঁদে। বিচার চায় না-লাশ চায়। ক’দিন পরে অন্ততঃ কংকালটা চায়। ওটাও দিতে পারি না। এক সময়, ছাগল দিতাম; এখন তাও দিই না। শুধু হাত কামড়াই।
‘কুছ খো-না, কুছ পা-না চলতা রেহতা হ্যায়,
সাঁসো কা আফসানা, চলতা রেহতা হ্যায়।’

Losing some and having some- story of life,
Romance of the hearts- story of life.


জনতার অধিকার আদায়ে আমরা সবাই সচেতন। মাঠের অভাবে আমরা তাই রেললাইনের উপরেই জনসভা করে ফেলি। রেলগাড়ি আবার খুব খারাপ যানবাহন- বাসের মত সাইড দিতে জানে না। ‘সরকারী ষড়যন্ত্রে’ তাই, কেউ কেউ কাটা পড়ে। অন্যেরা এই অন্যায় সইতে পারে না। আগুন লাগিয়ে দেয়, চালক পিটিয়ে মেরে ফেলে; মালামাল লুট করে। জনগনের সম্পত্তি জনগনের হাতেই পোড়া যায়-কার কী বলার আছে? আর আমি? হাত কামড়াই!
‘ইস্‌ দুনিয়া মে আপনা কেয়া হ্যায়?
ক্যাহ্‌ নে কো সব কুছ আপনা হ্যায়!’


সব কিছুই কি খারাপ!
না!
দেশ ক্রিকেটে জিতে যায়।
সালমান খান মাইক্রোসফটের টেকি অ্যাওয়ার্ড পান।

কেউ কেউ আবার অ্যাভারেস্টের চূড়ায়ও উঠে যায়। এই নিয়ে একদল অ্যাভারেস্ট আরোহনের বিপণন করে; ‘হুহ্‌ হু! আমরাই বদলে দিয়েছি, পেরেছি ওকে ওখানে তুলে দিতে’ আর অন্যদল টেনে নামিয়ে দিতে চায়; ‘অ্যাহ! আইছে, দুই দিনের বৈরাগী, ভাতেরে কয় অন্ন! আমরা সদা সত্যবাদী, মিথ্যা সইতে পারি না’। দুইয়ের মাঝে পড়ে আমি আবারো হাত কামড়াই।
‘ইয়াদ নেহি কেয়া কেয়া দেখা থা, সারি মাঞ্জার ভুল গায়ে,
উস্‌কো গালিও সে যব লৌটা, আপনি ঘর ভি ভুল গায়ে।’

I can’t recall what I saw, forgot all the sights of mine,
While returning from her place, I lost way to home of mine.


রিদওয়ান আর ইদ্রিস ছোট্ট মানুষ! বাবুনি সুপ্তি আর বাপ্পীও ছোট্ট।
না! না! ছোট্ট কোথায়!
‘ইয়ে দওলত ভি লে লো, ইয়ে শোহ্‌রাত ভি লে লো,
ভালে ছিন্‌ লো মুঝ্‌সে মেরি জাওয়ানী,
মাগার মুঝ্‌ কো লৌটা দো ও বাচ্‌পান কা শাওন
ও কাগাজ কি কাশতি, ও বারিষ কা পানি।’

Take my wealth and take my fame,
Snatch my youth even from me,
Return me but, the childhood days,
And the floating paper boats in the rainy days.


বয়সে ছোট হলে, দুনিয়াতে দু’দিন পরে এলেই বুঝি ছোট্ট হয়ে যায়? ‘এমনকি এক টুকরা প্রসন্নতাও অনেক বড় দান’ (Even a smile is charity!)- কত ছোট্ট একটা কথা! ক’জন পেরেছে এমন করে সত্য করে তুলতে!
‘তুম ইত্‌না যো মুস্‌করা রেহে হো,
কেয়া গাম হ্যায় জিস্‌কো ছুপা রেহে হো!’

So that you are smiling,
What sorrows which are hiding?


কমিউনিটি অ্যাকশানের হাত ধরে
অসহায় মেয়ের বিয়ে হয়;
দরিদ্র রিকশাচালকের নিজের মালিকানায় রিকশা হয় ;

নিমতলীর মানুষেরা আগুন প্রতিরোধ শিখে

পথশিশুরা ইফতার করে-মেহেদী দিয়ে হাত রাঙায়,

বগুড়ার অজপাড়াগাঁয় শিক্ষার্থীদের খাতা-পেন্সিলের অভাব ঘুচে

‘ধুপ মে নিক্‌লো গা তো নাহা কার দেখো,
জিন্দেগী কেয়া হ্যায়, কিতাব কো হাঠা কার দেখো!’

Singing in the shower and check out the sunshine,
What is life; check out keeping the books out of thine.


সেবার মাধ্যমেই বিজয়ের প্রকাশ ঘটে।
গাইবান্ধার শীতার্তরা পায় উষ্ণ কাপড়।
আমি শুধু ফেইসবুকে আপলোডেড অ্যালবাম দেখি; লাইক বাটনে চাপ দিই আর হাত কামড়াই।
‘ইয়ে কারে আউর ও কারে, অ্যা্য়সা কারে ওয়েসা কারে,
জিন্দেগী দো দিন কা হ্যায়, দো দিন মে হাম কেয়া কেয়া কারে!’

Let’s do this n that, let’s do it these ways n those ways,
Life of two days, what should we do in those days?


দিনকে দিন এক কামড়াকামড়ি করা জাতিতে পরিণত হচ্ছি বোধ হয়। আলোর রেখা দেখি মাঝে মাঝে-আপন অন্ধত্বে সেও হারিয়ে বসি।
তাই, হাত কামড়াই আর বুঁদ হয়ে থাকি জগজিৎ-এ।[/sb

‘তুম ইয়ে ক্যায়সে জুদা হো গায়ে,
হর তারাফ হর জাগা হো গায়ে।
আপনা চেহরা না বদলা গায়া
আয়নে সে খাফা হো গায়ি।’

How have you departed here,
And being all around everywhere?
Change has not come to your face
Why upset with the mirror?


কিংবা

‘যো ভি বুরা-ভালা হ্যায়, আল্লাহ জান্‌তা হ্যায়,
বান্দে কি দিল মে কেয়া হ্যায়, আল্লাহ জান্‌তা হ্যায়।’

What’s good or bad, Allah knows well,
What’s in fellow’s heart, Allah knows well.


বিঃদ্রঃ
১. যারা উর্দু পছন্দ করেন না কিংবা বোঝেন না কিংবা লেখায় উর্দুর আধিক্যে বিরক্ত হয়েছে, তাঁদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
২. গজল সমূহের দূর্বল ইংরেজী অনুবাদে গুগুল-ট্রান্সলেটরের সাহায্য নেয়া হয়েছে।
৩. বাংলা ব্লগিঙের তিন বছর পার করে সহব্লগারদের কিছু প্রিয় গজল উপহার দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৯:২৫
৩২টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×