আমার আকস্মিক মৃত্যু সংবাদ পেলে
মনে করবে- আমি একজন কাপুরুষ ।
ভেবোনা আমি তোমাকে হারাবার ভয়ে আতঙ্কিত ছিলাম,
তোমার ভালবাসা না পেয়ে মানসিক বিপর্যস্ত ছিলাম,
মনে করবে- মনখুলে কাঁদতে পারিনি,
অপেক্ষা করতে করতে দ্বগ্ধ হৃদয় পুড়ে হাড়ে দাগ পড়েছিল।
মনে করবে- সময়ের সাথে জীবনের রূপান্তরে
অধিকারবোধ হারিয়ে ভালবাসা চলে যেতে দেখেছি
আমি যখন মারা যাচ্ছি মনে পড়েছিলো-
হিমছড়িতে উড়তে থাকা তোমার চুল,
ইনানীর পাথরে ভিজে পায়ে দাড়িয়ে তুমি,
কক্সবাজারের সৈকতে এক সন্ধ্যার স্মৃতি।
যতিবিহীন ঘুমের আগে মনে পড়েছিলো-
সাড়ংকোটে উদিত সূর্য়ের আলোতে ঝলমলে তোমার মুখ,
পোখারার লেকে তোমার সাথে নৌকা ভ্রমণ।
ক্যাবলকারে শুধু আমরা দুজন।
হৃৎপিণ্ডে পেরেক ঠোকার আগেই মনে পড়েছিলো-
শাহবাগ, আজিজ সুপার, পাবলিক লাইব্রেরীর চত্বরে
জীবনের গল্প বলার দিনগুলি।
এক বৃষ্টিভেজা রাতে রিকসায় প্রথম হাত ধরেছি
সেরাতের তোমার কথাগুলো।
এবার নিশ্চিন্তে কাঁদতে পারো, প্রিয়তমা
আমি আর তোমাকে কষ্ট দিবোনা।
যদি পারো কোন এক জন্মদিনে
আমার কবরে একটা বৃষ্টিস্নাত কদমফুল রেখে এসো।
যাবার সময় ছিড়ে নিয়ে যেও
আমার রক্ত মাংসে বেড়ে উঠা কালো গোলাপটি।
তখনও কন্ঠস্বরবিহীন কন্ঠে চিতকার করে বলবো তোমাকে ভালবাসি।
তোমরা হয়তো বলবে জীবনের চেনা সীমানায় মৃত্যু কেনো?
হতাশা নিয়ে প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙে যার,
সমগ্র সত্ত্বায় সুতীব্র অভিঘাতে
হাহাকারের গভীর অনুরণন যার।
শোকের আতিশয্যে বিহ্বল, জীবনের প্রবাহমানতা বিঘ্নিত।
তার জন্য মৃত্যু বিলুপ্তি নয়
তার জন্য মৃত্যু ব্যক্তিত্বের সীমানা ছাড়িয়ে অসীম
জীবনের সম্পূর্ণ প্রকাশ, পরিপূর্ণ মুক্তি।
মৃত্যুই অনুভবে প্রিয়জনকে আরও নিবিড়ভাবে অনিবার্য করে তোলে।
মৃত্যুর বিচ্ছিন্নতায় উম্মোচিত হয় শাশ্বত ঐকান্তিক প্রেম;
ভালবাসার অপরিমেয় মূল্যের সুতীব্র অভিজ্ঞতা
২২ জানুয়ারি ২০১৭, রাত ৯.৩২
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:০২