somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবন নিয়ে হতাশ হলে ২

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনার জীবন আপনার এটাই চরমভাবে বিশ্বাস করা শিখতে হবে। আপনি মনে যত কষ্ট পান, আপনার কাছে আপনার জীবন যত ভারি মনে হোক, আপনি চিৎকার করে যদি বলেন আপনি একা, আপনি বাচতে চান, লোক লজ্জার ভয়ে টয়লেটে বসে কাঁদেন, হাটতে চলতে ফিরতে দু;খ ছাড়া আর কোন অনুভূতি নেই আপনার, কারো কাছে যদি হাত জোড় করে বলেন- প্লিজ আমাকে ভালোবাস, আমি বড় একা। কেউ সেটা বুঝতে আসবে না। এই নিষ্ঠুর আর গতিশীল পৃথিবীতে আপনাকে নিয়ে ভাবতে যাবার মতো ইমোশন কারো নেই। নিজেকে নিজেই উদ্ধার করতে হবে, এই চরম সত্য মেনে নিলে জীবন সহজ হয়ে যায়

আপনি যদি ভাবেন আহ অমুক যদি এসে একটু সান্তনা দিতো, আমি আবার চেস্টা করতাম, মাত্র একবার এসে বলুক আমি তোমার সাথে আছি, পরিশ্রম করে ফাটিয়ে ফেলবো, কেনো অমুক এসে আমার দু:খটাকে দেখছে না, কেনো আমাকে বুঝতে পারছেনা, এরকম ভাবনা করে আপনি মনখারাপের বড় বড় এভারেস্ট বানান না কেনো, কোন লাভ হবে না এতে করে শুধু অন্যের প্রেরণার আশায় আপনার সময় নষ্ট হবে, কারণ কেউ যদি আপনার প্রকৃত শুভাকাঙ্খী হয় তাহলে অপেক্ষা করতে হবে না আপনার দুর্দিনের কথা শূনে আপনা আপনি চলে আসবে, যখন দেখবেন আসছে না, আপনাকে সহযোগিতা করছে না, তখন ভেবে নিন তিনি আপনার বন্ধু নয়, তাকে এভয়েট করাটা সবচেয়ে ভালো, তার আশায় থাকা বোকামি। তখন আপনি নিজেকে ধন্যবাদ দিন যে, প্রকৃতি শুভাকাঙ্খী চিনেছেন, এবার নিজের জন্য ঝাপিয়ে পড়ুন, দেখবেন কিছূদিন পর আপনার আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। আপনার সফলতা নিশ্চিত।

আপনি যতই আশ্রয়ের জন্য চিৎকার করে কাদেন, নিজেকে বিপর্যস্ত ভাবেন, সাময়িক সময়ের জন্য শান্তনা দিবে হয়তো কেউ কিন্তু আপনার কাজ আপনাকেই করতে হবে, নিজেকে গুছিয়ে উঠার প্রাণন্তকার চেষ্টাটা আপনাকেই করতে হবে।
হ্যা এটাও ঠিক মানুষের দু;খ বলার জন্য একজন মানুষের দরকার হয়, তিনি দু;খ কমাতে পারবেনা কিন্তু শুনবে আর এই শুনাটাই দু:খকে হালকা করে দেয়, আপনারও একজন শুভাকাঙ্খী আছে এই ভাবনা একাকীত্বকে কমিয়ে দেয়। ভিতরে ভিতরে আস্থা জাগায়, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ করে দেয়। যত ইমোশন শেয়ারিং হবে তত স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে। আমাদের মধ্যে নিজের দু:খকে অপরের কাছে না বলতে পেরেই জীবনটাকে মানসিক বিপর্যস্ত করে ফেলি। জীবনটাকে আনন্দশূন্য একগুয়ে জীবনে পরিনত করে ফেলি।
তাই জীবনকে সহজ করতে ইমোশন আটকে না রেখে, শেয়ার করাটা যুক্তিযুক্ত, কারো সাথে শেয়ার না করে নিজেই নিজের বোঝা বহন করার ঝুকিটা না নেয়াটা ভালো, হয়তো মানসিক আঘাতটাকে নিজেই ওভারকাম করবেন বলে চেষ্টা করে যাচ্ছেন, এতে করে হয়তো আপনি সপ্তাহ দুয়েক মানসিক শক্তি ধরে রাখতে পারবেন কিন্তু এরপর ভেঙে পড়ার ঝুকিটাই বেশি থাকে, তখন আপনার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাটা এক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হবে। হয়তো আপনি একা একা ওভারকাম করতে পারবেন, কিন্তু প্রতিদিন যে নিজের সাথে নিজের যুদ্ধ করতে করতে যে পরিমাণ মানসিক শক্তি ব্যবহার করেবন এ শক্তিটা আপনি আপনার উন্নতির জন্য ব্যবহার করতে পারতেন।
এরপর বলবেন শেয়ারটা কার সাথে করবেন, পৃথিবীতে বাবা মায়ের মতো নিরাপদ আশ্রয়স্থল আর নেই, বড় হয়ে গেছেন এসব দ্বিধা একদম ঝেরে ফেলে তাদের সাথে শেয়ার করুন, বাবা মা না থাকলে পরিবারের কারো সাথে শেয়ার করাটা ভাল, এর সাথে সাথে মানসিক চিকৎসকদের পরামর্শ নেয়াটা সবথেকে ভালৌ উপায়, আমাদের সমাজে মানসিক চিকৎসকের কাছে যাওয়ার ব্যাপারে একধরনের নেতিবাচক ধারণা আছে, এটাকে কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না আমাদের শরীরের অসুখ হলে ডাক্তার দেখাই তেমনি মনের অসুখ হলে কেনো একজন মনোচিকিৎসকের কাছে যাবোনা। অবশ্যই যাবো, একবার যেয়ে দেখুন, দেখবেন মনোচিকিৎসকরা আপনাকে কতটা দারুনভাবে বুঝতে পারছে।

আপনি কাঁদতে কাঁদতে ভাসিয়ে ফেলুন, আর আল্লাহকে ডাকতে থাকেন, আর যদি বলেন হে আল্লাহ আমাকে আর কষ্ট দিওনা, প্লিজ আর আমার প্রতি নিষ্ঠুর হয়ো না। এতে করে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরতে পারেন কিন্তু আপনার পেন্ডিং কাজের একবিন্দুও কমবে না, বরং মাঠে এখনই নেমে পড়াটা বুদ্ধিমানের কাজ, শুরু করুন দেখবেন শেষ হয়ে গেছে। পারবেন না শব্দটা মাথায় ঢুকে গেলে আর কিছু হবে না, দিন দিন অলসতা শুধূ বাড়বে। আর একবার কাজ জমা হতে থাকলে, খালি না পারার ভাবনা জন্মাবে। শেষে এসে ভাববেন একাজ আমার দ্বারা সম্ভব না।
ধরুন মানুষ পানিতে সাতার কাটতে পারে, কখনও এভাবে ভেবেছি আকাশে উড়তে পারে না কেনো, যদি এভাবে ভাবি মানুষ পানিতে সাতার কাটাটা শিখেছে তাই সাতার কাটতে পারে, কিন্তু আকাশে উড়াটা এখনও শিখতে পারে নাই তাই পারে না। তাই সাতার কাটার মতো মনযোগের সাথে উড়াটা শিখতে থাকতে হবে একদিন ঠিক মানুষ এই হাত পা নিয়ে আকাশে উড়বে, মুল কথা হলো মনযোগের সাথে কাজ করলেই সফলতা আছে ।

প্রতিযোগিতায় নেমে বারবার হেরে যাচ্ছেন, এতে ভেঙে পড়ার কিছু নেই, এই হেরে যাওযার গল্পটা, প্রতিবার হেরে যাওয়ার পর লিখে রাখুন, কেনো হারলেন, হারার পর মানসিক অনুভূতি কি, আবার প্রতিযোগিতায় নামার আত্মবিশ্বাস কিভাবে অর্জন করলেন, হারার বিভিন্ন পাশ্বৃপ্রতিক্রিয়া, সব লিখে রাখূন, বিশ্বাস করুন কয়েক বছর পর এই বই নিয়েই আপনি বিখ্যাত রাইটার হয়ে যেতে পারেন। ইতিহাস বিজয়ীর লেখা হলেও, ব্যর্থতা বিজয়কে মূল্য দিতে শিখায়, ব্যর্থতা না থাকলে বিজয়ের স্বাধ নেই। একজন ভবিষ্যত বিজয়ীর কাছে ব্যর্থ মানুষের কথা সবথেকে গুরুত্বপুর্ন। তাই ব্যর্থতাকে লিখুন ভবিষ্যতের নির্দেশক হোন। এভাবে ব্যর্থতাকে সফলতায় পরিণত করতে পারেন আপনি।

ধরুন ব্যর্থতায় আপনার মরে যেতে ইচ্ছে করলো, আচ্ছা ঠিক আছে আমি মরে যাবো, আমি মরে গেলে কার কি হবে হিসেব করি। এবার খাতা কলম নেই এবার লিখি।
বাবা-মা-ভাই: কয়েকদিন কাঁদবে তারপর ভুলে যাবে। মৃত্যু বার্ষিক আসলে মিলাদ, কিছু গরিব খাওয়াবে।
বন্ধূরা: কেউ কেউ আসবে, কেউ আসবে না, দুএকজন একসপ্তাহ মনে রাখবে, এরপর সারাবছরেও মনে রাখবে না। এমনিক সারা জীবনেও কেউ মনে রাখবেনা।
গার্লফ্রেন্ড: প্রথম কয়েকদিন খূব ইমোশনাল, এরপর বিয়ে, সন্তান স্বামী নিয়ে সুখের জীবন।
হিসেব করলে দেখবেন কারো জীবন থেমে থাকবে না। এমনকি আপনি মরে গেলে প্রতিবছর শোকসভা হবে না, তাজিয়া মিছিলও হবে না, এ পৃথিবী আপনাকে আর মনে রাখবে না।

কিন্তু আপনি বেচে থাকলেন, ব্যর্থ ব্যর্থ হতে হতে, একেবারে শেষ জীবনে সফল হয়ে গেলেন, এমন কিছূ অর্জণ করলেন, শেষ জীবনে মরার পর রাষ্ঠ্রীয়ভাবে তিন দিনের শোক ঘোষণা করল, শহীদ মিনারে আপনার লাশ রাখা হলো, মানুষ সারিবদ্ধ হয়ে ফুল দিয়ে যাচ্ছে, বছরের পর বছর আপনার মৃত্যুবার্ষিক পালিত হয়, শোকসভায় আপনাকে নিয়ে কবিতা আবৃত্তি হয়, এবার বলুন কোনটা ভালো। বর্তমানের একবার ব্যর্থতায় ভেঙে পরে মরে যাওয়া নাকি বারবার হেরে গিয়ে শেষবারে চরম সফলতা অর্জন করা, যা আপনাকে বছরের পর বছর মানুষের মাঝে জীবিত রাখবে। তাই একবার ব্যর্থতা বা পরাজয় আপনাকে মূল্যায়নের শেষ মাপকাঠি নয়। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:১৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×