somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসম্ভবের গল্পঃ বঙ্গোপসাগরে ১২০০ বর্গ মাইল নতুন ভূখণ্ড

১০ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সমুদ্র জয়ের ফল হিসাবে নাকি বঙ্গোপসাগরে ১২০০ বর্গ মাইল নতুন ভূখণ্ড যোগ হচ্ছে আর তা নাকি ১০ বছরে আয়তন দাঁড়াবে ২০ হাজার বর্গমাইল।


হাসিবুল ইসলাম, সুন্দরবন থেকে ফিরে শুনাতে লাগলেন এই সব কথা। তার ভাষায়,
দেশের মধ্যেই আরেক বাংলাদেশের হাতছানির আনন্দ আবেশে পুলকিত হওয়ার দিন এসে গেছে। বঙ্গোপসাগরের নোনাজল ছাপিয়ে তার বুকে জেগে উঠছে অসংখ্য খণ্ড খণ্ড দ্বীপ। প্রকৃতির নিঃস্বার্থ রক্ষক বনভূমি দ্বীপের খণ্ডগুলোকে অকাতরে সৃজন করে চলছে। সৃজনশীলতার মধ্যে গড়ে উঠতে শুরু করেছে বসতি। সাগরের বুকজুড়ে জেগে ওঠা খণ্ড খণ্ড দ্বীপ এখন প্রায় ১ হাজার ২০০ বর্গ মাইল আয়তনের ভূখণ্ড তৈরি করেছে।

সৃষ্টি হয়েছে নিঝুম দ্বীপের মতো দৃষ্টিনন্দন বনাঞ্চল। এ বছর যুক্ত হবে আরও ২ হাজার ২০০ বর্গ মাইল ভূমি। আগামী ১০ বছরে ওই এলাকার আয়তন দাঁড়াবে ২০ হাজার বর্গমাইল। এ যেনো প্রকৃতির অপার মহিমায় বঙ্গোপসাগরের বুকে আরেকটি বাংলাদেশের হাতছানি। সেখানে সমুদ্রের অথৈ জলে প্রকৃতিকভাবেই বিশাল বিশাল চর জেগে ওঠা দ্বীপপুঞ্জগুলো দীর্ঘদিন ধরে শুধুই ‘ডোবা-চর’ হিসেবে পরিচিত ছিল। এখন সেসব স্থানে জনবসতিও গড়ে উঠেছে। একই ধরণের আরও প্রায় ২০টি ‘নতুন ভূখণ্ড’ এখন স্থায়ীত্ব পেতে চলেছে। বঙ্গোপসাগরে ২/৩ বছর ধরে জেগে থাকা এসব দ্বীপখণ্ড ভরা জোয়ারেও আর তলিয়ে যাচ্ছে না। উপকূলীয় এলাকায় গবেষণাভিত্তিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম), অ্যাকচুয়ারি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইডিপি) ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিস (সিইজিআইএস) প্রতিষ্ঠানগুলো এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক অনুসন্ধানী গবেষণামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে।


বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শীঘ্রই ২ হাজার ২০০ বর্গ মাইল ভূখণ্ড বাংলাদেশের মানচিত্রে যুক্ত হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ মুহূর্তে পানি ও পলির ক্ষেত্রে কিছু প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার পরিকল্পিত উদ্যোগ নেয়া খুব জরুরি। সাগর বুকের ভূমি উদ্ধার ও ব্যবস্থাপনার জন্য যেসব প্রযুক্তির প্রয়োজন, সেগুলো বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে উদ্ভাবনও করেছেন। যে মুহূর্তে জলবায়ূ পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের সিংহভাগ ভূখণ্ড সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে, ঠিক সে মুহূর্তেই দেশের এই অভাবনীয় সম্ভাবনা জনমনে সীমাহীন আশা জাগিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, সমুদ্র-বক্ষে জেগে ওঠা ৪০ হাজার হেক্টর ভূমিকে এখনই স্থায়ীত্ব দেয়া সম্ভব। পর্যায়ক্রমে এর পরিমাণ দুই লক্ষাধিক হেক্টরে বিস্তৃত হতে পারে। নিঝুম দ্বীপের কাছাকাছি এলাকাতেও কয়েক শত বর্গ মাইল নতুন চর জেগে উঠেছে। সেখানেও এখনই বসবাস উপযোগী ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব।

নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত ইডিপির এক জরিপ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সাল পর্যন্ত শুধু নোয়াখালী উপকূলেই সাড়ে ৯শ বর্গমাইল ভূমি জেগে ওঠে। তবে ভাঙনসহ নানা দুর্যোগে এরমধ্যে প্রায় সাড়ে ৭শ বর্গমাইল ভূখণ্ড টিকে আছে। উপকূলীয় জেলে-মাঝিদের নিকট হতে জানা গেছে, সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে প্রায়ই তাদের নৌকাগুলো নতুন নতুন চরে আটকে যাচ্ছে। নিঝুম দ্বীপ থেকে ৩৫-৪০ মাইল দক্ষিণে ভাটার সময় বড় বড় চরভূমির অস্তিত্ব থাকার তথ্যও জানতে পেয়েছেন গবেষকরা। কিন্তু এই চরগুলোকে পরিকল্পিতভাবে স্থায়ীত্ব দিতে সরকারি উদ্যোগ-আয়োজন চলছে ঢিমেতালে। বিষয়টি শীর্ষপর্যায়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বও পাচ্ছে না। সমুদ্রবক্ষে সম্ভাবনার বিশাল স্বপ্ন-সম্ভার এসব নতুন ভূখণ্ড পরিকল্পিত ব্যবহার, বনায়ন ও সংরক্ষণের সমন্বিত কার্যক্রম শুরু হয়নি এখনো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে সফরের সময় মুহুরি প্রজেক্টে জেগে ওঠা চরভূমির বিস্তারিত জেনে রীতিমতো আপ্লুত হন। সাগরে জেগে ওঠা ১৭ হাজার একর ভূমিতে তিনি শিল্প পার্ক নির্মাণেরও ইচ্ছা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর এ ইচ্ছা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়-য়ার সভাপতিত্বে এরই মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হযেছে বলেও জানা গেছে। আইডব্লিউএমের উপকূলীয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক জহিরুল হক খান সরেজমিন পরিদর্শন শেষে বলেন, ‘নঙ্গলিয়া এলাকায় নতুন জেগে ওঠা চরে গিয়ে মেঘনার মোহনা জুড়ে বড় বড় আয়তনের নতুন ভূখণ্ড দেখা গেছে। সেসব চরের পরিণত জমিতে বনভূমি জš§ানোর অনুকুল তৈরি হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, উডরিচর থেকে জাহাজের চর পর্যন্ত ক্রসবাঁধ নির্মাণ করে এ মুহূর্তেই ৫৫ হাজার হেক্টর ভূমি উদ্ধার করা সম্ভব। হাতিয়া-নিঝুমদ্বীপ-ধামারচর এবং ধুলা-চরমোন্তাজ-চরকুকরি মুকরি ক্রসবাঁধের মাধ্যমে মূল স্থলভূমির সঙ্গে সংযুক্ত করার খুবই চমৎকার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে মাত্র দশ বছরের মধ্যেই অন্তত ২০ হাজার বর্গমাইল আয়তনের ‘অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড’ পাওয়া যাবে। কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে অন্তত ২০ বর্গ মাইল নতুন চর জেগে উঠে। তবে নদী-চ্যানেলের গতিপথ পরিবর্তন ও সমুদ্র উপকূলীয় ভাঙনের কবলে পড়ে ৭/৮ বর্গ মাইল হারিয়ে যায়। এমন ভাঙাগড়ার মধ্যেই প্রতি বছর গড়ে ১২-১৩ বর্গ মাইল ভূমি দেশের মানচিত্রে মূল ভূখণ্ড হিসেবে যুক্ত হয়। আশির দশকের শেষ ভাগ থেকে জেগে ওঠা চরভূমির পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বেড়ে উঠতে দেখা যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেঘনা মোহনা সমীক্ষায়ও এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়। পাউবো সমীক্ষায় বলা হয়েছে, নদীর ভাঙা-গড়ার খেলায় ভূমি প্রাপ্তির হারই বেশি।এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭০ পরবর্তী ৩০ বছরে সাগর থেকে উদ্ধারকৃত জমিতে প্রায় সাড়ে ৯ লাখ ভূমিহীন মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। বয়ারচর ও ফেনী মোহনার উপকূলীয় এলাকায় নতুন চরভূমির স্থায়ীত্ব ও বিস্তার ঘটবে এবং লাখ লাখ ভূমিহীন পুনর্বাসিত হতে পারবে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এসব চরে পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা নেয়া হলে প্রতি বছর গড়ে ২০ বর্গ মাইলেরও বেশি ভূমি টিকিয়ে রাখা সম্ভব। চট্টগ্রামের মুহুরি প্রজেক্ট, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীর উপকূলয় অঞ্চল ছাড়াও সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকা সংলগ্ন সাগরেও বড় বড় চরভূমি জেগে ওঠার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে সুন্দরবন (পশ্চিম) বন বিভাগের কর্মকর্তা মান্দারবাড়িয়া অভয়ারণ্যের ৩/৪ মাইল দক্ষিণে বিশাল আয়তনের নতুন চর জেগে ওঠার তথ্য জানিয়েছেন। সুন্দরবন (পশ্চিম) বন বিভাগের ডিএফও তার ঊর্ধ্ববতন কর্তৃপক্ষকে দেয়া প্রতিবেদনেও নতুন চর জেগে উঠার কথা উল্লেখ করেন। বন অধিদফতর সূত্র জানায়, নতুন বন সৃজনের মাধ্যমে চরের স্থায়ীত্ব দেয়ার ব্যাপারে পরিকল্পনা চলছে। কাদা-মাটি, পলিযুক্ত চরভূমিতে ম্যানগ্রোভ বনায়নের মাধ্যমে টেকসই ভূখণ্ড গড়ে তোলা সম্ভব হবে। বন বিভাগের প্রচেষ্টায় নিঝুম দ্বীপের মতো আরও কয়েকটি চরভূমি ঘন বনাঞ্চল, বন্যপ্রাণী-পাখ-পাখালির মনোমুগ্ধকর অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, বিগত ৪০ বছরের ইতিহাসে পটুয়াখালী, ভোলা এবং বরগুনার নদী মোহনা-সাগরে চর জেগে সর্বাধিক ভূমি সৃজন হয়েছে। অপরদিকে সিইজিআইএসের স্যাটেলাইট ইমেজ-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীর উপকূলেই সবচেয়ে বেশি ভূখণ্ড জেগে উঠছে। ইতোমধ্যে ক্রসবাঁধ পদ্ধতিতেও বঙ্গোপসাগর থেকে লক্ষাধিক হেক্টর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় এক হাজার বর্গ মাইল আয়তনের নতুন ভূখণ্ড পাওয়া গেছে সেখানে। আরও কয়েকটি ক্রসবাঁধের মাধ্যমে নোয়াখালীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপের সংযুক্তির সম্ভাব্যতা নিয়েও এখন গবেষণা চলছে। এটা সম্ভব হলে স্বপ্ন দেখা শুরু হবে বাংলাদেশের সাথে আরো আরো বাংলাদেশের।
সুত্র
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:১৮
১৪টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×