somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিথি ভ্রষ্টা কেন খালেদা?

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া এ বছর নিজ হাতে তার ৬৯তম জন্মদিনের কেক কাটেননি। অথচ প্রতি বছর তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কেক কাটেন।


[পাসপোর্ট তথ্য অনুসারে ম্যাডামের বাড়তি আরেকটা জন্মদিন যোগ হল। পাসপোর্ট অনুসারে তার জন্মদিন দেখা যাচ্ছে ৫ইঅগাস্ট। গোলাবি একাই কত রঙ্গ দেখাইলিরে!! - ফেবু হতে কপি]


বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর দিনে নিজের জন্মদিনের উৎসব নিয়ে প্রতি বছর তীর্যক সমালোচনাও সহ্য করতে হয় তাকে। এমনকি এই শোকের দিনে জন্মদিনের আনন্দ না করার জন্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে অনুরোধও করা হয় তাকে।
তারপরও প্রতি বছর ১৪ আগস্ট রাত ১২টা ১ মিনিটে (১৫ আগস্ট দিবসের শুরুতে) তিনি কেক কাটেন। কিন্তু ব্যতিক্রম এ বছর। ১৪ আগস্ট রাতে তিনি জন্মদিনের কেক কাটেননি। এমনকি বাসভবন থেকে বের হয়ে গুলশান কার্যালয়েও যাননি।
না কাটার কারণ সম্পর্কে এক একজন বলছেন এক এক কথা। কেউ বলছেন নতুন ধারার রাজনীতি করার ঘোষণা দেয়ায় তাদের নেত্রী এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেউ বলছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এখন থেকে তিনি আর এদিন জন্মদিন পালন করবেন না। কেউ বলছেন জাতীয় নির্বাচন খুব কাছাকাছি হওয়ায় তিনি এখন বিতর্কিত সব কর্মকা- এড়িয়ে চলবেন। এ কারণে এবার জন্মদিনের কেক কাটেননি।
কিন্তু নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে অন্য কথা। জামাতের হরতালের কারণেই গুলশান অফিসে আসেননি বিএনপি নেত্রী। হরতালের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেই তিনি নিজ জন্মদিনের কেক কাটা থেকে বিরত থাকেন। এমনকি তার জন্মদিনের কারণে জামাত হরতাল ১২ ঘণ্টা কমাতে চাইলেও তিনি জামাত নেতাদের ৪৮ ঘণ্টা হরতাল অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন। তার পরামর্শেই জামাত তাদের পূর্ব ঘোষিত ৪৮ ঘণ্টা হরতাল বহাল রাখে।
পাশাপাশি হরতালের কারণে দলের কোনো কর্মসূচিতেও অংশ নেননি বিরোধীদলীয় নেত্রী। দলীয় নেতাদেরও কোনো কর্মসূচিতেও অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরও স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এতে তাদের কড়া ধমক খেতে হয়েছে বলে দাবি করেছে দলের একটি সূত্র।
জামাতের হরতালের কারণেই যে তিনি কেক কাটেনটি সেটা পরিষ্কার হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায়। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দল, ছাত্রদল ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) আয়োজনে ৭টি কেক কাটা হয়। এমনকি রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানের কার্যালয়ে খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান দলীয় নেতাকর্মীরা।
এদিকে বিরোধীদলীয় নেত্রীর প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো নিভৃতে পারিবারিকভাবে জন্মদিন পালন করেন বিরোধীদলীয় নেত্রী। তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন জামাতের হরতালের কারণে এবার কেক কাটাকাটির আনুষ্ঠানিকতা হবে না। একই কারণে বুধবার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে যাননি তিনি। তবে জন্মদিন উপলক্ষে সকালে তার গুলশানের বাসায় দোয়া মাহফিল হয়। আত্মীয়-স্বজনরা বাসায় এসে খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আওয়ামী লীগ যে সময় থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের ঘোষণা দেয়, ঠিক সেসময় থেকে হঠাৎ করেই দেশবাসী জানতে পারে যে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিনও নাকি ১৫ আগস্ট।
মানুষের জন্মদিন ১৫ আগস্ট হতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে তখনি যখন রাজনীতির অঙ্গনে ১৯৮৩ সাল থেকে দাপিয়ে বেড়ানো, জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী অতি ঘটা করে হঠাৎ করেই তার জন্মদিনকে স্থানান্তরিত করে ১৫ আগস্ট পালন করা শুরু করেন। যদিও তার জন্মদিন নিয়ে অনেক কথাই দলিল দস্তাবেজসহ চালু আছে।

চলুন আরেকবার দেখি বিভিন্ন সময়ের জন্মদিনগুলা।
■ ১৯৯১ সালের ২০শে মার্চ তারিখে দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সরকারী সংবাদ সংস্থা বাসস থেকে পাঠানো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জীবনী ছাপা হয়। এতে উল্লেখ করা হয় যে ওনার জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯শে আগষ্ট।
■ ম্যাট্রিক পরীক্ষার মার্কশীট অনুসারে খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর
■ বিয়ের কাবিননামা অনুসারে ওনার জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৯ই আগষ্ট।
■ ২০০০ সালের ভোটারের তথ্য বিবরনী ফরমে খালেদা জিয়া উল্লেখ করেন যে তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ১৫ই আগষ্ট! এছাড়া তিনি নিজেকে এইচএসসি পাস দাবি করেন যদিও শিক্ষাবোর্ডের ডকিউমেন্ট (মার্কশীট) অনুসারে তিনি ম্যাট্রিকে ফেল করেছিলেন।
■ ১৫ই আগষ্ট, ২০১০ তারিখের দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্ট: সাবেক হুইপ জামালের পরামর্শে ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসের দিনে জন্মদিন পালন শুরু করেন খালেদা জিয়া।
সুত্র
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮
১৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×