somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেইতো মল খসালি তবে কেন লোক হাঁসালি

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রায় ৩ মাসের স্বেচ্ছাবন্দি জীবনের অবসান ঘটিয়ে শিগগিরই গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নিজ বাসভবনে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রায় তিন মাসের আন্দোলনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে হিসাব-নিকাশ শেষে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এ নিশ্চিত করেছে। তবে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, গুলশান কার্যালয়ের দক্ষিণ পাশে গুলশান মডেল স্কুল এন্ড কলেজটিতে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হওয়ায় খালেদা জিয়া তার কার্যালয় ছেড়ে বাসভবনে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সূত্র জানায়,
আগামী সপ্তাহের যে কোনো দিন গুলশান কার্যালয় ছেড়ে গুলশানের বাসভবনে যেতে পারেন খালেদা জিয়া। তবে কার্যালয় ছাড়ার আগে তিনি রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশের ঘোষণা দিতে পারেন।
সূত্র জানায়, প্রায় তিন মাসের আন্দোলনের ফলাফল শূন্য। চলমান জনবিচ্ছিন্ন কর্মসূচিতে আসছে না কোনো বৈচিত্র্য, আন্দোলনরত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। আগামী দিনের আন্দোলনের সফলতা নিয়ে নেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে পারেনি ২০ দলীয় জোট। সব মিলিয়ে মানসিক টানাপড়েনের মধ্যেই নিজের অনড় অবস্থান থেকে সরে গুলশান কার্যালয় ছেড়ে নিজ বাসায় ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন খালেদা জিয়া।
দলের শীর্ষ নেতারা জানান, গুলশান কার্যালয়ের দক্ষিণ পাশে গুলশান মডেল স্কুল এন্ড কলেজটিতে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হওয়ায় খালেদা জিয়া তার কার্যালয় ছেড়ে বাসভবনে ফিরে যাবেন। তাছাড়া টানা আন্দোলন কর্মসূচি সফল না হওয়ায় এখনো কেন আন্দোলনে বিরতি দেয়া হচ্ছে না আর কেনইবা দলের চেয়ারপারসন কার্যালয় ছেড়ে বাসায় যাচ্ছেন না, এমন প্রশ্ন নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে দেশের মানুষ। আর এ ধরনের প্রশ্নের কোনো সদুত্তরও দিতে পারছেন না বিএনপি নেতাকর্মীরা। সর্বস্তরের নেতাকর্মীই এতে বিব্রতবোধ করছেন। বিষয়টি খালেদা জিয়ার কান পর্যন্ত পৌঁছালে সব দিক বিবেচনা করে তিনি কার্যালয় ছেড়ে বাসায় যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সূত্র জানায়, তিন সিটি নির্বাচনে নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে গণসংযোগসহ সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকতে চান খালেদা জিয়া। তাছাড়া সব শ্রেণির নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে চান তিনি। শুধু তাই নয়, তার এবং দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে যাতে কেউ দল ভাঙার ষড়যন্ত্র না করতে পারে এ বিষয়টিও মাথায় রয়েছে তার।
বিএনপির হাইকমান্ডের বরাদ দিয়ে সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া সাময়িকভাবে তার কার্যালয় ছেড়ে চলে যাবেন। কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে তিনি আবারো কার্যালয়ে ফিরে আসবেন। তবে ফিরে এসে আবারো অবরুদ্ধ হয়ে থাকবেন নাকি কার্যালয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাবেন এ বিষয়ে কিছুই নিশ্চিত করেননি তারা। গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া মনে করেন, কার্যালয়ে অবস্থান না করে নেতাকর্মীদের কাছাকাছি থাকা উচিত। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দুর্বলতার প্রভাব পড়ছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ওপর। কেননা, গত ৫ জানুয়ারি থেকে চেয়ারপারসনের ডাকে সাড়া দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা যেভাবে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তা এখন অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়েছে। মামলা-হামলা আর গ্রেপ্তার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা হতাশার মধ্যে রয়েছেন। তাদের মধ্যে তৈরি করেছে ক্লান্তির ছাপ। কর্মসূচির প্রথম দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ-হরতাল পালিত হলেও এখন তাতে কোনো প্রাণ নেই। তাই ২০ দলের আন্দোলন কর্মসূচিও আস্তে আস্তে শিথিল করে আনা হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, আগামীতে হরতাল-অবরোধ পুরোপুরিভাবে উঠিয়ে নিয়ে দেশজুড়ে সভা-সমাবেশ ছাড়াও গণমিছিল, অবস্থান ধর্মঘট, গণঅনশনসহ জনসম্পৃক্ত নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে ২০ দল। বিশেষ করে পেট্রলবোমাসহ নাশকতার ব্যাপারে ক্ষমতাসীনদের দেয়া অপবাদের ক্ষত ঘোচাতেই এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আর এসব বিষয়ে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গ্রিন সিগন্যাল রয়েছে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।
দলীয় সূত্র মতে, আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও দুই সপ্তাহ ধরে জোটের শরিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে রাজধানীতে। জোটনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেই তারা এসব বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা যে কোনো মূল্যে চলমান আন্দোলনকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে এগিয়ে নেয়ার কর্মকৌশলসহ সিটি নির্বাচনে সফলতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানান এনডিপির একজন শীর্ষ নেতা। এছ্ড়াাও নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ পাওয়ার ব্যাপারে সরকারের আচরণ বিধির ওপর নজর রাখছেন খালেদা জিয়া। ঢাকা ও চট্টগ্রামে সিনিয়র ও জুনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকার ও প্রশাসন কতটা ভূমিকা রাখছেন এ বিষয়ে তদারকির নির্দেশ রয়েছে খালেদা জিয়ার।
খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় ছাড়ার ব্যাপারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, সামনে সিটি নির্বাচন, আর নির্বাচনের বিষয় এলে তখন এমনিতেই অন্য রকম পরিবেশ তৈরি হয়ে যেতে পারে। তখন নির্বাচনের স্বার্থে ম্যাডাম কার্যালয়ে ছাড়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। তবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের এখনো অনেক সময় রয়েছে। তাই এখনই সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে কিছু একটা হবে সেটা আপনারা কয়েকদিনের মধ্যে জানতে পারবেন। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে একটি রাজনৈতিক দল বা দলীয় প্রধান যে কোনো সময় যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এটাই স্বাভাবিক। আর সরকার বাধা না দিলে জনগণের নেত্রী খালেদা জিয়া যে কোনো সময় যে কোনো স্থানেই যেতে পারেন। তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণার পর থেকেই বিএনপির আন্দোলনে ভাটা লেগেছে। কারণ বিএনপি সরকারের ফাঁদে পা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিএনপি নির্বাচনে গিয়ে সরকারকে আরো একবার ক্ষমতায় টিকে থাকার বৈধতা দিয়েছে। বিগত তিন মাসে বিএনপি যে আন্দোলন করেছে তার ফলাফল শূন্য।
উল্লেখ্য, গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে নিজের গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেখান থেকে ৫ জানুয়ারি বের হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। যা এখনো অব্যাহত। অবরোধের পাশাপাশি চলছে হরতাল কর্মসূচিও। এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় শতাধিক প্রাণহানি, বিশ্ব ইজতেমা, মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতেও খালেদা জিয়া এক দফা দাবি থেকে সরে আসেননি। সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত নিজ কার্যালয়েই স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ হয়ে থাকার ইচ্ছা ছিল তার। কারণ তিনি মনে করেন, কার্যালয় থেকে বের হলে দলীয় কার্যালয়ের মতো রাজনৈতিক কার্যালয়ের অবস্থাও ভুতুড়ে হয়ে যেতে পারে। আর সে কারণেই গত ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের প্রতি এবং ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নিজ দলের সঙ্গে শহীদ মিনার কিংবা স্মৃতিসৌধে যাননি খালেদা জিয়া।
সূত্র
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×