somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামী জঙ্গিবাদ মানে ধর্ম ও মানবতার অপমান

০৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান ও ইসরায়েলসহ উপসাগরীয় অঞ্চলের কিছু ধনাঢ্য দেশ তাদের বৈশ্বিক স্বার্থে ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলোর জন্ম দিয়েছে। বিন লাদেনকে 'স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে' প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নকে প্রতিরোধ করার জন্য। আইএসের প্রধানকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে সিআইএ। তালেবান তৈরি করেছে আমেরিকার সহায়তায় পাকিস্তানের আইএসআই, ইসরায়েলের মোসাদ ও সৌদি আরব। এছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহের সব দায়িত্ব এবং সমন্বয়ের কাজ পরিচালনা করছে পাকিস্তানের আইএসআই। গত ১৮ মার্চ ২০১৪ সংবাদে প্রকাশ, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ইসলামিক স্টেট (আইএস) সৃষ্টিতে সহায়তা করেছেন এমনটাই দাবি করেছেন রাশিয়ার নিম্নকক্ষ ডুমার আন্তর্জাতিক বিষয়কসংক্রান্ত কমিটির প্রধান আলেঙ্ িশুশকভ। খবর বিবিসি, আল-জাজিরার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, তার উত্তরসূরিরাই আল-কায়েদা, তালেবান ও আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর আত্মপ্রকাশের জন্য দায়ী।
গণবিধ্বংসী অস্ত্র ধ্বংস ও জনগণকে মুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে ২০০৩ সালের ২০ মার্চ ইরাকে হামলা চালিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট। মিথ্যা অজুহাতে চালানো ওই হামলার ১২ বছর পূর্ণ হলো গত ২০ মার্চ ২০১৫। অপারেশন 'এনডিউরিং ফ্রিডম' নামে ওই অভিযান চালায় জোট। প্রায় ত্রিশটির মতো মুসলমান শাসিত দেশ ওই অভিযানে সহায়তা ও সমর্থন করে। ইরাকের বিধ্বংসী মারণাস্ত্র ধ্বংস ও সাদ্দাম সরকারের পতনের ঘোষণা দিয়ে সেদিন প্রাচীন সভ্যতার তীর্থভূমি ইরাকের মাটিতে হামলা করে মার্কিন জোটবাহিনী। লাখ লাখ ইরাকি হতাহতের পর ২০০৪ সালের জুনে অভিযানের পূর্ণ সমাপ্তি ঘোষণা করে মার্কিন জোটবাহিনী। এরপর লিবিয়া ও সিরিয়ার সরকার উৎখাতের জন্য ওই দুই দেশের বিরোধী সংগঠনগুলোকে চাঙ্গা করে তোলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এবং অস্ত্রশস্ত্র্ত্র দিয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করে যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়। এভাবেই লিবিয়ার গাদ্দাফি সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশটিতে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়। সিরিয়ার আসাদ সরকারের পতন এখনও না ঘটলেও ওই দেশটিতে যুদ্ধ ও অরাজকতা চলছে।
ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়ার সরকারি দুর্বলতার সুযোগে গড়ে উঠে ইসলামী জঙ্গি সংগঠন আইএস। গত ২০১৪ সালে ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়ার ইসলামপন্থি জঙ্গি সংগঠন আইএসের (ইসলামিক স্টেট) উত্থানের পর আবারও ইরাকে মার্কিন সেনা অভিযান শুরু হয়। এবার আরও বড় জোট গঠন করে আইএস দমনের লক্ষ্যে দেশটিতে বিমান হামলা চালাচ্ছে তারা। 'অপারেশন ইনহারেন্ট রিজলভ' নামে ২০১৪ সালের ৮ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান এখনও চলছে। ২০ মার্চ ২০১৫, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন অভিযোগ করেছে, ইরাকে ইসলামপন্থি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) যোদ্ধারা দেশটিতে গণহত্যা চালাচ্ছে। শিশুসহ দেশটির বেসামরিক মানুষদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধ করছে। খবর-রয়টার্স। বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) নিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ইরাকে ইসলামপন্থি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) যোদ্ধারা গণহত্যা চালাচ্ছে, এটুকু বললে অভিযোগটি খ-িত হয়ে যায়, অসমাপ্ত থেকে যায়। শুধু ইরাক নয়, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, নাইজিরিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, তিউনেশিয়া, বাংলাদেশ প্রভৃতি মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলোতে আইএসের মতো উগ্রপন্থি ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলো গণহত্যা চালাচ্ছে। যেমন গত ১২ মার্চ ২০১৫ খবরে জানা গেছে, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় দুটো মসজিদে আত্মঘাতী হামলায় কমপক্ষে ১৪২ জন নিহত ও তিনশ'র বেশি আহত হয়েছেন। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামী জঙ্গি সংগঠন আইএস। নাইজেরিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চল দামাসাক শহর থেকে কমপক্ষে ৭০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইএসের অনুরূপ সংগঠন বোকো হারামের কাছ থেকে শহরটি পুনর্দখলের পর এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। (খবর বিবিসির)। পাকিস্তানের পেশোয়ারে এক স্কুলে আইএসের মতো সংগঠন তালেবান হামলায় ১৪৫ জন ছাত্র নিহত হয়েছে। এর আগে তালেবানরা দুটো মসজিদে হামলা চালিয়ে বহু মুসলি্লকে হতাহত করেছে। ২৪ মার্চ ২০১৫ খবরে প্রকাশ, তিউনিসের জাদুঘরে জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশি পর্যটকসহ ২০ জন প্রাণ হারান। ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে। গত ৩০ এপ্রিল সংবাদে প্রকাশ, নাইজেরিয়ার ইসলাম পন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারামের হাতে অপহৃত প্রায় ৩শ' নারী-কিশোরী উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। খবর রয়টার্স। ৭ মার্চ ২০১৫ খবরে জানা গেছে, ইরাকের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন গুঁড়িয়ে দিল আইএস। নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের হামলায় ৬৪ জন নিহত। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ খবরে জানা গেছে, লিবিয়া হামলার দায় স্বীকার আইএসের। এবার লন্ডনে হামলার হুমকি আল-শাবাবের। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ খবরে প্রকাশ, সিরীয় বিদ্রোহীদের সহযোগিতায় মার্কিন-তুর্কি চুক্তি। ২০ ফেব্রুয়ারি খবরে জানা গেছে, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের বিমান হামলায় প্রশিক্ষণ দেবে যুক্তরাষ্ট্র। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সংবাদে জানা গেছে, পাকিস্তানে শিয়া মসজিদে হামলায় নিহত ১৯। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ খবরে প্রকাশ, সহিংসতা প্রাণহানিতে জাতিসংঘের উদ্বেগ। আইএস নির্মূলে কংগ্রেসের অনুমোদন চাইলেন ওবামা।
শীতল যুদ্ধের সময়কার কথিত পরাশক্তি সোভিয়েত কমিউনিস্ট জুজুর ভয় দেখিয়ে মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে ইসলামী চরমপন্থার জন্ম দেয়া হয়। আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত বাহিনী বিতাড়নে ও সমাজতন্ত্রী সরকার উচ্ছেদের লক্ষ্যে মুসলমান চরমপন্থিদের দ্বারা মুজাহিদ বাহিনী গড়ে তোলা হয়। এতে অর্থ, জায়গা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করে সৌদি আরব ও পাকিস্তান। সেভিয়েত বাহিনীর বিদায় ও নাজিবুল্লাহ সরকারের পতনের পর বোরহান উদ্দীন রব্বানীর নেতৃত্বে মুজাহিদ সরকার গঠিত হয়। কিন্তু তাদের তাঁবেদারির প্রশ্নে সন্দেহ দেখা দেয়ায় আবার তালেবান বাহিনী গড়ে তোলা হয়। ফলে মুজাহিদ সরকারেরও পতন ঘটে। টু-ইন-টাওয়ার ধ্বংসে সন্দেহভাজন আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে প্রভু আমেরিকার হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করায় ক্ষেপে গিয়ে আবার মুজাহিদ বাহিনীকে সংঘবদ্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত মার্কিন ও মুজাহিদ বাহিনীর যৌথ অভিযানে তালেবান সরকারের পতন ঘটে। বিশ্বস্ত মার্কিন তাঁবেদার হামিদ কারজাই আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। জন পিলজারের লেখা 'দি নিউ রুলার্স অবদি ওয়ার্ল্ড' নামক গ্রন্থে চমৎকারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে- কিভাবে আমেরিকানরা ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই ৬ এর সহযোগিতায় শুধু ওসামা বিন লাদেন নয়, ইসলামী মুজাহিদানের অন্যান্য সন্ত্রাসীকে সৃষ্টি করেছে, দিয়েছে অস্ত্র ও অর্থ।
শীর্ষস্থানীয় এক ইরানি আলেম আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি (৮ জুলাই ২০০৫ সালে) বলেছেন, 'আপনারা আল-কায়দার কথা বলেন। কিন্তু আপনারা কি ভুলে গেছেন কারা এই আল-কায়েদার জন্ম দিয়েছে? এটি হলো আমেরিকা এবং ইউরোপের অবৈধ সন্তান। কিন্তু আপনারা একে ইসলামী সংগঠন বলছেন, এই বর্বরতা তো ইসলাম নয়। এটি আপনাদের অভ্যন্তর থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। এখন আপনাদের আঘাত করছে।' (আমার দেশ, ৯/৭/২০০৫)। যুক্তরাষ্ট্র নানা কৌশলে মুসলমান প্রধান দেশসমূহে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে চলেছে। আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, পাকিস্তান ও ফিলিস্তিনে তারা নির্লজ্জভাবে হস্তক্ষেপ করে চলেছে। সিরিয়া ও ইরান এখন তাদের টার্গেট। বহুদলীয় গণতন্ত্রের সুযোগে গণতন্ত্র চর্চাকারী মুসলমান দেশসমূহে ধর্মীয় চরমপন্থি ও সন্ত্রাসী সংগঠন গড়ে উঠেছে। গত ২৩ মার্চ ২০১৫ খবরে প্রকাশ, উন্নয়ন নয়, জঙ্গি সামলাতে ব্যস্ত পাকিস্তান সরকার।
আমাদের দেশের চরমপন্থি এক নেতা প্রয়াত ফজলুল হক আমেনী যখন বলেন, 'এখন থেকে ইসলাম নামক বৃক্ষটির গোড়ায় পানির পরিবর্তে রক্ত ঢালতে হবে।' তখন হানাহানি-খুনাখুনি, বোমাবাজি ছাড়া আর কিছু আশা করা যায় না। ২৪ মার্চ ২০১৫ সংবাদে প্রকাশ, চট্টগ্রাম মহানগীরর এক জেএমবি নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে জেএমবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান বলে পুলিশ জানায়। তার বাসা থেকে ককটেল-গ্রেনেড জাতীয় তিনটি বোমা, একটি সাইকেল, শক্তিশালী ডেটোনেটর ও বিপুল পরিমাণ জেল বোমা ও গ্রেনেড তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ছাত্রশিবির নেতা থেকে জেএমবির দীক্ষা নেন এরশাদ নামের ওই নেতা। গড়ে তোলেন শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। চট্টগ্রামেই জেএমবির শতাধিক দোকান আছে বলে সে জানায়। ভারত-বাংলাদেশ-মায়ানমারকে কেন্দ্র করে ইসলামিক স্টেট গড়ে তোলার স্বপ্নও দেখছে তারা। এর আগে ২০০৪ সালে জামায়াত-বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন বাংলাভাই নামক এক জেএমবি নেতা সরকারি সহায়তায় রাজশাহী অঞ্চলে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ভিন্নমতের বহু মানুষকে তখন হত্যা করা হয়। বিশ্বব্যাপী কঠোর সমালোচনার মুখে শায়েক আবদুর রহমান, সিদ্দিকুর রহমান বাংলাভাইসহ আরও অনেক জেএমবি নেতাকে তখন সরকার ধরতে বাধ্য হয়। কয়েকজনের ফাঁসিও হয়। এছাড়া ২০০১ সালে নির্বাচনে জেতার দাবি করে জামায়াত-বিএনপি জঙ্গি কায়দায় ভিন্নমতের বহু লোককে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে আগুন দিয়ে দেশ ছাড়া করে অনেক হিন্দুকে। ২০১৩ সালেও তারা একই কায়দায় খুন-হত্যা ও নাশকতা চালায় সারা দেশব্যাপী। সে সময় ১৭ জন পুলিশসহ শত শত মানুষ খুন হয় তাদের হাতে। এবার ২০১৫ সাল শুরু হতে শুরু হয় তাদের জঙ্গি আক্রমণ। ৯২ দিনের সন্ত্রাস-নাশকতায় হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়। ভূমি অফিসসহ সরকারি স্থাপনা, মানুষভর্তি বাস ও রেলগাড়ি পোড়ানো হয়েছে। ভয়ঙ্কর প্রক্রিয়ায় পেট্রলবোমা মেরে প্রায় শ'দেড়েক মানুষ পুড়িয়ে মারা, শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানোর মধ্যে দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয় ভয়ের অপসংস্কৃতিতে আবদ্ধ করায় তারা কত পারদর্শী। স্পষ্ট করা হয় আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের সঙ্গে কী নিবিড় সম্পর্ক, আন্তরিকতা, সহমর্মিতা ও সহযোগিতা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে অফিস বসিয়ে জঙ্গি সংগ্রহের দাওয়াত দেয়া হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আস্তানাসহ জঙ্গি সদস্যরা ধরা পড়ছে। দেখেশুনে মনে হচ্ছে যতই ধরপাকড় হোক এ সন্ত্রাস-নাশকতা, খুন-হত্যা থামবে বলে মনে হয় না।
এই মুহূর্তে ইরাক ও সিরিয়ার এক তৃতীয়াংশ জঙ্গিদের কবলে। এক এক করে গ্রন্থাগার, জাদুঘর আর প্রত্ন নিদর্শনের ওপর আঘাত হানছে জঙ্গিরা। ইরাকের সুপ্রাচীন ইতিহাস মুছে ফেলতেই সম্প্রতি একটি সরকারি গ্রন্থাগারের ১০ হাজারেরও বেশি বই পুড়িয়ে দেয় তারা। এর দিন কয়েকের মধ্যেই হামলা চলে মসুলের জাদুঘরের স্থাপত্য, মূর্তি ও প্রত্ন নিদর্শনের ওপর। বুলডোজারের ধাক্কায় ধুলোয় মেশে নিমরুদের প্রায় তিন হাজার বছরের সুপ্রাচীন সভ্যতা। (খবর ওয়েবসাইট)।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর এক লেখায় জানা গেছে, সম্প্রতি মক্কায় অনুষ্ঠিত এক বিশ্ব ওলামা সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছে, 'সন্ত্রাসে ইসলামের অনুমোদন নেই।' তাই যদি হয় তাহলে ইসলাম ও মহানবী (সা.)-এর নাম ভাঙ্গিয়ে যারা মুসলমান হয়ে মুসলমান হত্যা করছে, তারা কিভাবে নিজেদের মুসলমান দাবি করে?
সারা বিশ্ব আজ সত্যিকার অর্থে উগ্র ধর্মীয় জঙ্গিবাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ধর্মব্যবসায়ীরা ধর্মের অপব্যাখ্যা প্রদান করে পবিত্র ধর্মকে বিতর্কের মধ্যে ফেলে সারা বিশ্বে অশান্তির ঝড় বইয়ে দিচ্ছে। কামান-বোমা-ড্রোন দিয়ে এ ঝড় থামানো সম্ভব হচ্ছে না। পৃথিবীর দেশে দেশে উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠী সভ্যতাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। সভ্যতাবিরোধী ইসলামী জঙ্গিবাদ আজ মানবতা ও ধর্মের অবমাননার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পবিত্র কোরআনে তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, 'যখন তাদেরকে বলা হয়, পৃথবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না। তারা বলে আমরাই তো শান্তি স্থাপনকারী। সাবধান এরাই অশান্তি সৃষ্টিকারী। কিন্তু তারা বুঝতে পারে না।' (২ঃ১১,১২)। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, 'শিগগির মানুষ এরূপ একটা যুগ প্রত্যক্ষ করবে, যখন ইসলাম বলতে থাকবে শুধু নামটি এবং কোরআন বলতে থাকবে শুধু তার অক্ষরগুলো, সে যুগে মসজিদগুলো হবে পাকা ইমারত। কিন্তু সেগুলোতে হেদায়েত বা পথনির্দেশ থাকবে না। তাদের আলেমগণ হবে আকাশের নিচে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে দুষ্ট প্রকৃতির। তাদের থেকে সন্ত্রাস বা বিশৃঙ্খলার উৎপত্তি হবে এবং তাদের মধ্যে প্রত্যাবর্তিত হবে।' (বোখারী)।
সহিংসতা-নাশকতা ও মানুষ মারা কখনও ধর্মের পরিভাষা হতে পারে না, এতে ধর্ম অধর্ম হয়ে যায় এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনও হতে পারে না, এতে গণতান্ত্রিক কর্মীরা মাঠে থাকে না, সন্ত্রাসী ও নাশকতাকারীদের হাতে জাতি জিম্মি হয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র নিজ স্বার্থে দেশে দেশে যাদের সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধেই আজ তাদের যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আফগানিস্তানে আজ তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। সাদ্দাম হোসেনের পর ইরাকে যারা ক্ষমতায় বসেছে তাদের জঙ্গি দমন করতে হচ্ছে। লিবিয়ার গাদ্দাফির যারা পতন ঘটিয়েছে তাদেরও আইএস মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সিরিয়ার আসাদের বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করছে, তাদেরও আইএসের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। পাকিস্তান সরকার আজ উন্নয়ন নয়, জঙ্গি সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনুরূপ আমাদের দেশেও যারা জঙ্গি লালন-পালন করছে, জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র ধ্বংসে উঠেপড়ে লেগেছে, সন্ত্রাস-নাশকতা-খুন-হত্যা করে চলেছে, এতে তাদের সাময়িক লাভ হলেও আখেরে পুরো জাতি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির শিকার হতে পারে।
সুত্র
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×