somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহীদ মিনারের মূল বেদিতে খালেদা জিয়া, সমালোচনার ঝড়

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারের মূল বেদির সর্বোচ্চ ধাপে উঠে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। শহীদ মিনারের মূল বেদিতে উঠার নিয়ম না থাকলেও খালেদা জিয়া এবং বিএনপি নেতারা মূল বেদিতে উঠে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ মূল বেদির নিচে দাঁড়িয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও দলটির সিনিয়র নেতারা শহীদ মিনারের মূল বেদিতে উঠে পড়ায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্ট করা হয়েছে।

একুশের প্রথম প্রহরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদদের বেদিতে ফুল দেন। তারপর ফুল দেন স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়া, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। এরপর ফুল দিতে আসেন ঢাকার দুই মেয়র, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ প্রধান। কূটনীতিকদের পর ফুল দেয় ক্ষমতাসীন ১৪ দল। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, এ্যাটর্নি জেনারেলও ফুল দেন প্রথম প্রহরে।

রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানানোর পরে শহীদ মিনার সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার অমর একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাত ১টা ২৫ মিনিটের দিকে দক্ষিণ দিকের প্রবেশ পথ দিয়ে খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতারা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছান। রাত ১টা ২৮ মিনিটের দিকে তারা শহীদ মিনারের মূল বেদিতে যান। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউটের সদস্যরা মানবপ্রাচীর তৈরি করে তাদের শহীদ মিনারের মূল বেদির কাছে নিয়ে যান। এ সময় তারা বিএনসিসি সদস্যদের বাধা সত্ত্বেও মূল বেদির ওপরে উঠে যান এবং কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে এ সময় আরও ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মাহবুবুর রহমান, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ অনেকে। ফুল দিয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ দিকের পথ দিয়ে বের হয়ে যান খালেদা জিয়া।

রীতি অনুযায়ী খালি পায়ে দ্বিতীয় ধাপে দাঁড়িয়ে মূল বেদিতে পুষ্পাঞ্জলি রেখে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানান সবাই। কিন্তু খালেদা জিয়া দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারের মূল বেদির সর্বোচ্চ ধাপে উঠে শ্রদ্ধা জানান। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামান কাজল তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন- ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই মূল বেদির নিচে দাঁড়িয়ে মূল বেদিতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং এটাই নিয়ম। আর বিএনপির চেয়ারপার্সনসহ তাঁর দলের সবাই সেই মূল বেদি, যেটিতে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়- সেটির ওপর দাঁড়িয়ে ফুল দিলেন! আসলে তাঁরা কি ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিল? নাকি তাদের অপমান করতে এসেছিল?’

পল্লব হোসাইন ফেসবুকে লিখেছেন- ওরা কেন লোক দেখানো শ্রদ্ধা জানাতে যায়? যাদের মনে শহীদদের জন্য শ্রদ্ধাবোধ নেই, তারা কিভাবে শহীদ মিনারকে সম্মান করবে?

সাইদুর রহমান উজ্জ্বল তাঁর ফেসবুকে লিখেন- ভাষা শহীদের অপমান করার জন্যই শহীদ মিনারে গিয়েছেন খালেদা। কারণ ম্যাডামের মনের ভাষা তো উর্দু।

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও দলটির নেতারা শহীদ মিনারের মূল বেদিতে উঠে পড়ায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল জনকণ্ঠকে বলেন, ‘যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন এবং যারা নিজেদের জাতীয় নেতা বলে দাবি করে, তাদের কাছ থেকে শহীদ মিনারের অবমাননা কোনভাবেই কাম্য নয়। এটি শহীদদের অবমাননার শামিল। শহীদ মিনারে এসে কিভাবে ফুল দিতে হয় এবং শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করে ফুল দিতে আসা উচিত।’
সূত্র
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৩:২০
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×