somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তবুও এগিয়ে যাচ্ছে নারী

২২ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৬:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সোনার বেড়ির শৃঙ্খল পদদলিত করে আর চার দেয়ালে বন্দি চাপা কান্নার পাহাড় ডিঙিয়ে নারী আজ উন্নয়নের সহযাত্রী। রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে স্বাধীনতার ৪৫ বছরে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে আমাদের প্রিয় স্বদেশ। অনেক বাধা, তবুও লড়াই করে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। দেশের প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেত্রী, রাজপথের বিরোধীদলীয় নেত্রী, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, পুলিশ ও সেনাসদস্য, সচিব, বৈমানিক, বিচারক, উদ্যোক্তা, ক্রিকেটার তো বটেই; বাংলাদেশের নারীর বিজয় পতাকা উড়েছে সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট চূড়ায়ও। উন্নয়নের ধারা ভিন্ন হলেও আওয়াজ একই, ‘নারীরা এগিয়ে গেলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে বিশ্ব।’

‘ছিঁড়িতে পারি না দড়াদড়ি/ ভাঙ্গিতে পারি না দড়াদড়ি/ সমাজের শিকলে আটকাপড়া পা/ রান্নাঘরে খুন্তি লাড়ালাড়ি।’ কবি রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর এই গানের মতোই আজো রান্নাঘরে খুন্তি নাড়ানাড়ি করেই জীবন পার করছেন হাজার হাজার নারী। অথচ দেশের সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান। ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, নারী, পুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র কোনো বৈষম্য করবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। সমান অধিকার তো দূরের কথা, দেশের প্রচলিত আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারীরা। বঞ্চিত নারী সমাজের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে প্রতি বছর ৮ মার্চ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘দিনবদলে সাহসী হও।’ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতি বছর অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। যদিও আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবর্ষ পেরিয়ে গেলেও বদলায়নি নারীর ভাগ্য।

নারী দিবসের ইতিহাস : পেছন ফিরে দেখা

১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। দৈনিক ১২ ঘণ্টা পরিশ্রম, নিম্ন মজুরি, অমানুষিক নির্যাতন ও খাদ্যের অভাবের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিকরা রাস্তায় বিক্ষোভ করেন। এতে অনেকেই গ্রেপ্তার ও হয়রানির শিকার হন। সেই থেকে শুরু দিনবদলের পালা। তিন বছর পরে ১৮৬০ সালের ৮ মার্চে তারা নিজস্ব ইউনিয়ন গঠন করেন। ১৯০৮ সালের ৮ মার্চ বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিক স্বল্প শ্রমঘণ্টা, ন্যায্য মজুরি এবং ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এ ঘটনার দুবছর পর ১৯১০ সালের ৮ মার্চ ডেনমার্কের কোপেনহেগে অনুষ্ঠিত সাম্যবাদী নারীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৮ মার্চকে ঘোষণা করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে। আর এর প্রস্তাবকারী ছিলেন জার্মান কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেত্রী ক্লারা জেৎকিন। ৬৪ বছর পর ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। নারী শ্রমিক ছাড়াও বিশ্বের সর্বস্তরের নারীর অধিকার আদায়ের দিবস হিসেবে প্রতি বছর ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

পারিবারিক-সামাজিক নির্যাতন, যৌতুক, যৌন নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন, হত্যাসহ নতুন নতুন অত্যাচারের শিকার বাংলার নারীসমাজ। তবুও সার্বিক উন্নয়নের তাগিদেই প্রয়োজন নারীর উন্নয়ন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাজনীতিতে নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এগিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ক্ষেত্রে সার্কভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ পুরুষদের সমান বা কিছু বেশি। সরকারি চাকুরেদের মধ্যে নারী ২৪ শতাংশ। আর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী ৩৩ শতাংশ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদ আছে ১৪ লাখ ৭১ হাজার ৩৬টি। এর মধ্যে ২০১৪ পর্যন্ত কর্মরত চাকুরের সংখ্যা ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৪৪৯ জন। নারী চাকরিজীবী হলেন ২ লাখ ৮৮ হাজার ৮০৪ জন। শতাংশের হিসাবে মোট চাকুরের ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ নারী। তবে বিসিএসের মাধ্যমে নারীর চাকরি পাওয়ার সংখ্যাটি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ৩০তম বিসিএসে ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ নারী চাকরি পান।

রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে বাড়লেও নীতিনির্ধারণী পর্যায় বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে নারী এখনো অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নারী নেত্রীদের মতে, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নারীকে রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে দেয়ার বঞ্চনার সূত্রপাত হয় মনোনয়নের মধ্য দিয়ে। যথেষ্ট শিক্ষা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া কালোটাকা ও পেশিশক্তির রাহুগ্রাসে এখনো ব্যাপকসংখ্যক নারী জাতীয় নির্বাচনে সরাসরি মনোনয়ন পাচ্ছেন না। ফলে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখার জন্য সংরক্ষিত আসনই অন্যতম বিকল্প হিসেবে রয়ে গেছে। দলীয় স্বার্থে সংসদে কোরাম পূরণ ও হ্যাঁ-না ভোটে আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখা ছাড়া সংরক্ষিত সদস্যদের আর করার কিছুই নেই। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সুপারিশ অনুযায়ী ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয়টিকে নীতিগতভাবে মেনে নিলেও ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ নারীকে মনোনয়ন দিতে ব্যর্থ হয়েছে দলগুলো।

সম্প্রতি (গত ২১ সেপ্টেম্বর) নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য জাতিসংঘের ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অ্যাওয়ার্ড দুটি নিঃসন্দেহে জাতির জন্য অহঙ্কার, বিশেষ করে নারী সমাজের জন্য এগিয়ে চলার প্রেরণা। তবে একদিকে শত বাধা-বিপত্তির পাহাড় ডিঙিয়ে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় অন্যদিকে প্রচলিত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ নারীর চলার গতিতে সংকুচিত করে তোলে বারবার। ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ বিয়ের বয়সসীমা শিথিল করে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন শুধু নারী নয়, গোটা উন্নয়নকেই উল্টো পথে নিয়ে যাবে বলে আতঙ্কিত নারী সমাজ। আইনটি ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ বলে মন্তব্য করেছেন নারী আন্দোলন কর্মীরা। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর দেশের নারী সংগঠনগুলোর পাশাপাশি হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিলটি পাস না করতে বাংলাদেশের আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিল। এই আইন দেশে বাল্যবিবাহসহ নারীর প্রতি সহিংসতাকে উৎসাহিত করবে বলেও সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা। এতে ব্যাহত হবে সামষ্টিক উন্নয়ন।

দুর্গম পথ বেয়ে নারীর এগিয়ে চলার গতির পাশাপাশি প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললে নারীর প্রতি সহিংসতার যেসব চিত্র চোখের সামনে ভেসে ওঠে তাতে রক্তাক্ত হয় বিবেক। মানবাধিকার সংগঠন এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের প্রথম ছয় মাসে স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার ৩২ জন এবং খুন হন ১০১ জন। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার ৪ জন এবং মৃত্যু হয় ২৯ জনের। নিজ পরিবারের সদস্যদের হাতে সহিংসতার শিকার ৬ জন, প্রাণ হারান ১০ জন এবং আত্মহত্যা করেন ২৭ জন। যৌন সন্ত্রাসের শিকার ৩০৬ জন। বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার ৬৭ জন এবং একই কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন। যৌতুকের কারণে শারীরিক নির্যাতনের শিকার ৬৯ জন, নিহত ৭১ জন। পারিবারিক কলহ, যৌতুক, ব্যক্তিগত শত্রুতা, জমি নিয়ে বিবাদ, প্রেমে প্রত্যাখ্যান, মাদকের জন্য স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা আদায় ছাড়াও নিত্যদিন ঘটে যাওয়া জানা-অজানা আরো অনেক কারণে এসিড সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১৭ জন নারী। নারী ও শিশুর ওপর একের পর এক নির্মম-নিষ্ঠুর হামলায় জাতির সামনে একই প্রশ্ন, আমাদের চারপাশের প্রিয় পুরুষরাই যে রাতের আঁধারে হায়েনা হয়ে উঠবে না, তার নিশ্চয়তা এখন আমরা কার কাছ থেকে পাবো?

বৈষম্য পিছু ছাড়েনি আজো

বিশ্ব নারী সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা একমত হয়েছিলেন, নারীর উন্নয়ন মানেই সবার উন্নয়ন। নারীর সার্বিক উন্নয়নে ১৯৯৫ সালে বেইজিং সম্মেলনে নারী উন্নয়নের একটি রূপরেখাও প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু বেইজিং প্লাটফর্ম ফর অ্যাকশন-এ ১০ বছর পরের খতিয়ানে বহু দেশের নারীনীতি আর কর্মে রয়েছে বৈপরীত্যের প্রতিফলন। ৪র্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনে নারী উন্নয়নে অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত ১২টি ক্ষেত্রে পৃথিবীর কোনো দেশেই এখনো কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জিত হয়নি। নারীর চোখে বিশ্ব দেখার অঙ্গীকার এখনো শিশু পর্যায়ে।

এমনকি যাদের জন্য নারী দিবস পালন, সেই নারী শ্রমিকরা আজো পায়নি কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ, তাদের জন্য নেই আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা, নেই আবাসিক হোস্টেল, যাতায়াতের জন্য নেই কোনো ব্যবস্থা, এখনো ন্যায্য মজুরি, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত, যৌন হয়রানির শিকার তারা। আজো তারা এই দিনটিতে কর্মরত থাকে, তাদের ছুটি দেয়া হয় না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, নারীর শ্রমশক্তির ৫৬ শতাংশ ব্যয় হয় পারিবারিক কাজে। একই যোগ্যতা সম্পন্ন একজন নারী শ্রমিকের দৈনিক গড় আয় ৯২ টাকা আর একজন পুরুষ শ্রমিকের দৈনিক গড় আয় ১৩২ টাকা। এছাড়া বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, অভিভাবকত্ব, সম্পত্তির উত্তরাধিকারসহ সবক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে রয়েছে বৈষম্য।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রকাশিত জরিপ (২০১২ সালে) অনুযায়ী, কৃষি খাতে ২ কোটি নারী কৃষিশ্রমিকের শ্রমের মূল্যের স্বীকৃতি আজো দেয়নি বাংলাদেশ। কৃষি খাতের ২১টি কাজের মধ্যে ১৭টি ধাপেই নারী অংশগ্রহণ করলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের গুরুত্ব দেয়া হয়নি। রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে ১ কোটি ৩৯ লাখ কৃষক কার্ড বিতরণ করা হলেও নারীরা এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়ায় কৃষি ঋণও পাচ্ছেন না তারা। কৃষি উপকরণ, সার, বীজ, কৃষক কার্ড, ঋণ সুবিধা থেকে শুরু করে সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সহায়তা থেকে বঞ্চিত হন নারী কৃষি শ্রমিকরা। গৃহস্থালির কাজ করে কোনো মজুরি পান না ৯১ লাখ নারী। আবার মজুরি দেয়ার ক্ষেত্রেও নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। পুরুষের চেয়ে নারীদের কম মজুরি দেয়া হয়। শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৮ লাখ ৪৯ হাজার নারী দিনমজুর রয়েছেন। তারা পুরুষের সমান কাজ করেও মজুরি কম পান।

নারী-পুরুষের বৈষম্য রয়েছে গণমাধ্যমেও। নারীর পথচলা মসৃণ নয় এখানেও। গত বিশ বছরে ১১৪টি দেশ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বৈশ্বিক গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ প্রকল্পের (গ্লোবাল মিডিয়া মনিটরিং প্রজেক্ট) করা গবেষণায় যে চিত্র উঠে এসেছে, তা মোটেও ইতিবাচক বা সম্ভাবনাময় নয়। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও রেডিওতে প্রচারিত প্রতিবেদনের মাত্র ৩৭ ভাগ প্রতিবেদক নারী। যে হার ১০ বছরে এতটুকুও বৃদ্ধি পায়নি।

আমার মুক্তি আলোয় আলোয়

বিদ্যমান অনগ্রসরতা ও বৈষম্য পেরিয়ে মুক্তির আলোয় স্নাত হয়ে নারীকে অনেক বন্ধুর পথ হাঁটতে হবে। শিক্ষা, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, সচেতনতা এবং অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ- নারীর পথচলাকে সুগম করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

নারীর শ্রমে, ঘামে, চিন্তায়, মেধা, মননে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যেভাবে গড়ে উঠেছে সভ্যতা, তেমনি সময়ের প্রয়োজনে এই যৌথ প্রয়াসকে আরো সুদৃঢ় করা সবার নৈতিক দায়িত্ব। আর এই দায়িত্ববোধই প্রতিনিয়ত নতুন করে শুনিয়ে যাচ্ছে জেগে ওঠার গান, নির্যাতন, সহিংসতা, রক্তাক্ত চাপাতি কিংবা খুনের ভয় দেখিয়ে নারীকে দাবিয়ে রাখার সময় শেষ। সকল প্রতিবন্ধকতাকে পায়ে দলিত করে এগিয়ে যাবে নারী। আর এজন্য চাই সম্মিলিত আওয়াজ। নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রতিরোধ ব্যুহ। যা ভেঙে কোনো কালো পৈশাচিক হাতের নখর থাবায় ছিন্নভিন্ন হতে না পারে নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর উন্নয়ন। ‘জাগো বিবেক, জাগো মানবতা’ এই হোক আগামীর স্লোগান। নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রয়াসে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। এগিয়ে যাক বিশ্ব।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ভোরের কাগজ আয়োজিত ‘উন্নয়নে নারী’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধের সারসংক্ষেপ।
সুত্র
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৬:৪২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×