somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাস্তবতা বিবর্জিত অ্যামনেস্টি টিআইবির রিপোর্ট

০৭ ই মে, ২০১৭ ভোর ৬:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের (আরএসএফ) সদ্য প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের সূত্র অনুসারে আরএসএফের প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৪ থেকে পিছিয়ে ১৪৬-এ গেছে। প্রকাশিত বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গত তিন-চার বছরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পুরোপুরি কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। আতঙ্ক আর দমন-পীড়নের চাপে পড়ে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর পুরোপুরি স্তব্ধ। সরকার ধর্মনিরপে ব্লগারদের রা তো করতে পারেইনি, বরং নতুন আইন প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও ব্লগারদের স্বাধীন মতামত ও কাজকর্মকে অপরাধের তকমা দেওয়ার চেষ্টা করছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এও বলেছে যে, মুক্ত সাংবাদিকতাকে সরকার যেন একটা অপরাধ বলেই গণ্য করছে। তাদের মতে, বাংলাদেশে টানা বহু বছর ধরে সংসদীয় গণতন্ত্র থাকলেও সেটা স্বাধীন মতপ্রকাশের রাস্তা পরিষ্কার করতে পারছে না। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধে বাংলাদেশে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেভাবে বলতে চাইছে তার বাস্তবতা এ দেশে নেই। এখানে রাষ্ট্র, গণমাধ্যম ও সাংবাদিক কেউ কারো প্রতিপ নয়। সরকার গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা রায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তারা এমন কোনো আইন তৈরি করেনি, যাতে মুক্ত গণমাধ্যম বাধাপ্রাপ্ত হয়। বরং আইনের আধুনিকীকরণ ও যুগোপযোগী করে গণমাধ্যমের বিকাশে আরও সহায়তা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বর্তমানে রাষ্ট্র সাংবাদিকদের কোনো কর্মকা- বাধাগ্রস্ত করছে না। এমনকি রাষ্ট্র, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরাও সাংঘর্ষিক অবস্থায় নেই। সূত্রমতে, তথ্য অধিদপ্তরে নিবন্ধনের জন্য এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০-এর বেশি অনলাইন গণমাধ্যমের প থেকে দরখাস্ত জমা পড়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। প্রায় দুই হাজার অনলাইনের মধ্যে মাত্র ৩৫টি অনলাইনের প্রকাশনা বন্ধ রাখা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের উদ্দেশ্যপূর্ণ, মিথ্যা ও উসকানিমূলক রিপোর্ট প্রকাশের জন্য। সরকারের সমালোচনার জন্য আজ পর্যন্ত একটি অনলাইনও বন্ধ করা হয়নি। দেশে এত অনলাইন কাজ করছে তাতে সরকারের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। মূলত বিভিন্ন ধর্মের ওপর আঘাত দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশের জন্যই এসব অনলাইন বন্ধ করা হয়েছে। এগুলো আমাদের সংবিধান অনুমোদন করে না। এমনকি একটি অনলাইনে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল। দেশে চার কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। এর মধ্যে মাত্র ২০ জনের আইডি স্থগিত করা হয়েছে। এসব আইডি ছিল ভুয়া, মিথ্যা ও ফেক। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই করা হয়েছে। এটা কোনো গণমাধ্যম বা সম্পাদক দমনের জন্য করা হয়নি। একটি পত্রিকায় পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফের ছবি দিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য; তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে ২ হাজার ৮০০-এর বেশি পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। এতে হাজার হাজার সাংবাদিক কাজ করছেন। যখনই কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে সরকার বা রাষ্ট্র কিন্তু কখনো এ বিষয়ে হস্তপে করছে না। বরং সঠিক ও নিরপেভাবে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে। কোনোভাবেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শেখ হাসিনার শাসনামলে আজ পর্যন্ত ৫০ জনের মতো সাংবাদিক বিপদে পড়েছেন। সরকারের তরফ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হয়েছে। দেশের গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি। তার মতে, সরকারের সমালোচনার জন্য আজ পর্যন্ত একটি গণমাধ্যমও বন্ধ করা হয়নি।


২.
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের জন্য প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রেস কাউন্সিলের আদেশ না মানলে শাস্তি হিসেবে কোনো সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার প্রকাশনা সর্বোচ্চ ৩০ দিন বন্ধ রাখার আদেশ দিতে পারবে কাউন্সিল। পাশাপাশি নতুন সম্প্রচার নীতিমালা ও আইন এবং অনলাইন সংবাদপত্রের জন্য নীতিমালা করেছে সরকার। এই আইন ও নীতিমালা সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের কর্মীদের জন্য জরুরি ছিল। আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারার মতো কালাকানুনও। গণমাধ্যমের বিকাশে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী আইন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ েেত্র মান্ধাতা আমলের আইনগুলো বাতিল ও পুরনো আইনগুলো হালনাগাদ এবং যে বিষয়ে এখনো কোনো আইন তৈরি করা হয়নি সে বিষয়ে আইন তৈরি করা হচ্ছে। রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের একান্ত প্রত্যাশা একটি জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ সরকার ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তথ্য অধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠার কারণে জনগণের তথ্যে অধিকার দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তথ্য অধিকার আইন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট এ দুই মাধ্যমের স্বাধীনতা আরও নিশ্চিত করেছে। কারণ তথ্যে প্রবেশাধিকার ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ মানব পুঁজি উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। একটি ওয়াকিবহাল নাগরিক গোষ্ঠী দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কে অধিক সচেতন এবং পরবর্তী সময়ে তারা তাদের পছন্দসই যোগাযোগমাধ্যম বেছে নিতে পারছে।


৩.
গণমাধ্যম হলো সমাজের চোখ, দর্পণ। গণমাধ্যম হলো জাতির বিবেক, জনতার কণ্ঠস্বর। গণমাধ্যম হলো রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ইত্যাদি নানা নামে গণমাধ্যমকে অভিহিত করা হয়। সংবাদপত্রে মানুষের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে হবে। আগে আদর্শের জন্য দায়িত্ববোধ থেকে গণমাধ্যমে কাজ করতেন সাংবাদিকরা, এখন অনেক েেত্রই ব্যবসা ও স্বার্থের জন্য গণমাধ্যম প্রকাশ করা হচ্ছে। জনগণ, সরকার ও রাজনীতির মধ্যে একটা সেতুবন্ধ রচনাই হলো গণমাধ্যমের কাজ। সে কাজটি করতে গিয়ে স্বার্থান্বেষী, দুর্নীতিবাজ, মতালোভী, দুর্বৃত্তগোষ্ঠীর রোষানলে পড়ছে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীরা। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইলে সাংবাদিক সমাজকে রাজনৈতিক মত ও পথ ভুলে গিয়ে পেশাগত দৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে সাইবার জগতের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ দেশে একটি সাইবার জগৎ গড়ে উঠেছে। কিন্তু সাইবার জগৎকে গতিশীল করার েেত্র বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাইবার ক্রাইম। সরকার মিথ্যাচার, ভুয়া তথ্য সরবরাহকারী ও উসকানিদাতাদের হাত থেকে গণমাধ্যমকে রার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তাদের যথাযথ প্রশিণ দেওয়াও দরকার। এ জন্য বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে। কারণ এখানে রাষ্ট্র, গণমাধ্যম ও সাংবাদিক কেউ কারো প্রতিপ নয়।
সুত্র
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৭ ভোর ৬:৫১
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×