somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশ এখন সঙ্কটে নেই

২৪ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেখ হাসিনা রাজনীতিতে মাস্টারপিস। রাজনীতিতে কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে শেখে। একভাবে শিখলেই হয়ত অনেকে মনে করে রাজনীতির পাঠ চুকে গেছে। কিন্তু শেখ হাসিনাই হয়ত বাংলাদেশে একমাত্র, যিনি রাজনীতিবিদ্যাকে চলমান রেখে উভয় পাঠের পাঠক। তিনি বাবাকে দেখে শিখেছেন রাজনীতি। কিন্তু ১৯৭৫-এর বিভীষিকাময় ঘটনার পর কোন পূর্ববর্তী বার্তা না নিয়ে হঠাৎ করে ঠেকে শেখা রাজনীতি শুরু। আর ১৯৮১ সালের পর থেকে তার দেখা ও ঠেকাবিদ্যার যৌথ সমন্বয়ে ‘রাজনীতি এক্সপ্রেস’ চালনা করছেন। শুরুর দিকে বিভিন্ন কারণে গতি একটু ধীর হলেও বর্তমানে তা দুর্দান্ত গতিতে ছুটে চলেছে।

১৯৯৬ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময় অনেক সফলতার কথা আমরা পাঠ্য পুস্তকে পড়ে থাকি। আবার বক্তৃতায়ও শুনে থাকি। আমি যেহেতু আজকের লেখাটা ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ ও সাধারণের দৃষ্টিতে কীভাবে শেখ হাসিনা অনন্য, সেই দিক থেকে লিখছি তাই আগের ফিরিস্তি টেনে পরিসর বৃদ্ধি করতে চাই না।

আমি রাজনীতি করা বা বোঝা থেকে যা দেখেছি তাই-ই লিখব। যখন লেখাটা লিখছি তখন প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে দেখতে পেলাম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) মতামত জরিপে উঠে এসেছে, ‘সরকারের চেয়েও জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’। এটা অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি আমার কাছে। আমার মনে হয়, বাংলাদেশে যারা যে দলই করুক, এদেশে রাজনীতিবিদ একমাত্র শেখ হাসিনা, আর কোন রাজনীতিবিদ নেই। আর যারা রাজনীতি করেন তারা রাজনৈতিক নেতা। রাজনীতির ময়দানে যে শ্রম দেয় সে কর্মী হলে রাজনৈতিক কর্মী আর যে নেতা সে রাজনৈতিক নেতা। কিন্তু রাজনীতিবিদ ভিন্ন বিষয়। একজন কর্মীও রাজনীতিবিদ হতে পারে আবার অন্যদিকে একজন নেতা রাজনীতিবিদ নাও হতে পারেন।

রাজনীতিবিদ প্রপঞ্চটির সঙ্গে প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা প্রভৃতি জড়িত। মোটা দাগে সংজ্ঞায়ন করতে গেলে বলতে হয়, যে রাজনৈতিক নেতা বা কর্মী প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে চলে, দূরদর্শী হয়ে ভিশন বা লক্ষ্য নির্ধারণ করে এবং সেটা বাস্তবায়নের জন্য ছুটে চলে, সে-ই রাজনীতিবিদ।

কেন শেখ হাসিনা রাজনীতিবিদ এবং অন্যরা কেন নয়? এর জন্য আমার উপস্থাপনায় প্রথম উপাদান ২০০৮ সালে যে নির্বাচন ছিল সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রধান দুটি দল- আওয়ামী লীগ আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দল দুটির নির্বাচনী ইশতেহারের দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে। আওয়ামী লীগের ইশতেহারের সেøাগান ছিল, ‘দিন বদলের সনদ’। আর বিএনপির সেøাগান ছিল, ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’। একটি আশার, স্বপ্নের আরেকটি হতাশার, দুঃস্বপ্নের। একটি সময়কে ধরে সামনে এগিয়ে চলার, আরেকটি শুধুই পেছনে ফিরে দেখার।

পেছনে ফিরে তাকানোতে সমস্যা নেই যদি সেখানে সামনে এগিয়ে চলার রসদ থাকে। কিন্তু বিএনপি বা খালেদা জিয়া কেমন পেছনে ফিরে তাকালেন যাতে শুধুই হতাশা।

‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’- এই সেøাগানকে ধরে যদি আমরা এগিয়ে যাই তাহলে প্রথমে বোঝতে হবে দেশ ধ্বংসের কিনারাতে ছিল তা বাঁচানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। এখন তত্ত্বাবধায়কের দুই বছর বাদে আগে ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। দেশকে যদি মেরে থাকে তাহলে তাঁর জন্য বিএনপি প্রথমে দায়ী। আর তারা যদি যৌথ অংশীদারিত্ব দাবি করে তাহলে দুই বছর মেয়াদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সঙ্গে নিতে পারে। ফলে যে হত্যাকারী সে-ই আবার ত্রাতারূপে আবির্ভূত হতে চায়। জনগণের হাতে অন্য অপশন থাকতে সেটা তারা মানবে কেন?

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার ইশতেহারে ছিল, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ভিশন-২০২১। এটা ছিল আশার, স্বপ্নপূরণের। তাই জনগণ এটাই বেছে নিয়েছিল। যার নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য ছিল আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাঁর সরকার সেটা পূরণ করার জন্য ছুটে চলেছে। এই যে একবিংশ শতাব্দীর নতুন রাজনীতি ধরতে পারা, যা শেখ হাসিনাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। তাই তো তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পিছপা হননি। মাথা নত করেননি অপশক্তির কাছে। আর নতুনরূপে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ তিনি বিনির্মাণের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিয়ে মসৃণ গণতান্ত্রিক পথে হাঁটতে চাইলেন তখন বিএনপি-জামায়াতের তত্ত্বাবধায়কের দাবি এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্তের কৌশল এক হয়ে যাওয়ায় তারা সারাদেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে লাগল। তাদের লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক যাত্রা ব্যাহত করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করা। আর সেই সময় দেশসেরা বুদ্ধিজীবীরা বলেছেন, আওয়ামী লীগ এই নির্বাচন করতে পারবে না, দেশ আরও সঙ্কটের দিকে যাচ্ছে। ফলে শঙ্কায় ছিলেন আওয়ামী লীগের উপর পর্যায় থেকে শুরু করে নিম্ন স্তরের কর্মী পর্যন্ত। সবার মনে ও মুখে একই প্রশ্ন, কী হতে যাচ্ছে!

এর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন শেখ হাসিনা। সেই সময় আওয়ামী লীগের একজন ঘোর সমালোচনাকারী, বাংলাদেশের প্রগতিশীল ধারার একজন পরিচিত রাজনৈতিক নেতা আমাকে বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ নির্বাচন করতে পারবে না। আর যদি করেও ফেলে, ৬ মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। দেশ আরও সঙ্কটের দিকে যাচ্ছে।’

কিছুদিন আগে সেই রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে আমার দেখা। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ভাই, আপনার কথা তো ফলেনি। শেখ হাসিনা নির্বাচনও করল, ক্ষমতায়ও থাকল। আর দেশ, সে তো আগের চেয়ে ঢের বেশি স্থিতিশীল।’ সে আমাকে বলল, ‘দেখ, গত আট বছরে শেখ হাসিনা বড় কোন মিসটেক করেননি।’

আমি তাঁর কথা শুনে মনে মনে বললাম, আমাদের সবার চোখ আছে, কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি নেই। তাই আমরা যদি শেখ হাসিনার দৃষ্টিভঙ্গিতে রাজনীতিটাকে দেখি তাহলেই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। এই কারণে এদেশে শেখ হাসিনাই একমাত্র রাজনীতিবিদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:০১
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×